• স্কুলে না এসে ডিএ আন্দোলন! ভাস্কর ঘোষের বিরুদ্ধে উঠল অভিযোগ
    এই সময় | ২১ জুন ২০২৪
  • ডিএ আন্দোলনে ব্যস্ত শিক্ষক! সংবাদ মাধ্যমে দেখা গেলেও স্কুলে আসেন না! এবার সংগ্রামী যৌথ মঞ্চের আহ্বায়ক ভাস্কর ঘোষের বিরুদ্ধে এই অভিযোগ তুললেন অভিভাবকরা। বৃহস্পতিবার সকালে দুর্গাপুরের ফরিদপুর ব্লকের প্রতাপপুর পঞ্চায়েতের ধবনি গ্রাম অবৈতনিক প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বিক্ষোভও দেখান অভিভাবকদের একাংশ। প্রসঙ্গত, এই স্কুলেই কর্মরত ভাস্করবাবু। যদিও যাবতীয় অভিযোগ অস্বীকার করেছেন এই শিক্ষক।চলতি বছরের বাজেটেই রাজ্য সরকারি কর্মীদের ডিএ আরও ৪ শতাংশ বৃদ্ধি করার কথা ঘোষণা করেছিলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পাশাপাশি এপ্রিল থেকেই অতিরিক্ত ডিএ দেওয়া হবে বলে ঘোষণা করা হয়েছে রাজ্যের তরফে। কিন্তু, কেন্দ্রীয় হারে মহার্ঘ ভাতার দাবিতে দীর্ঘদিন ধরেই আন্দোলন করছেন রাজ্যের সরকারি কর্মীদের একাংশ। আর এই আন্দোলনের জন্য তৈরি হয়েছিল সংগ্রামী যৌথ মঞ্চ। সংশ্লিষ্ট মঞ্চের আহ্বায়কের দায়িত্বে রয়েছেন ভাস্কর ঘোষ।

    কলকাতায় এই মঞ্চে অনেক সময় দেখা যায় তাঁকে। এবার তাঁর বিরুদ্ধে স্কুলে অধিকাংশ দিন অনুপস্থিত থাকার অভিযোগে বিক্ষোভ দেখান গ্রামবাসী এবং অভিভাবকদের একাংশ। ঠিক কী অভিযোগ অভিভাকদের? বৃহস্পতিবার স্কুলের সামনে বিক্ষোভরত পম্পা বাগচি বলেন, 'আমার মেয়ে এই স্কুলে ক্লাস ওয়ানে পড়ে। মাস্টারমশাই অর্ধেক দিন স্কুলে আসেন না। অথচ টেলিভিশনে তাঁকে দেখতে পাই। অনেক পড়ুয়া এই স্কুল ছেড়ে অন্য স্কুলে চলে যাচ্ছে।'

    নিজেকে গ্রামবাসী হিসেবে পরিচয় দেওয়া উত্তম কুমার হাজরা বলেন, 'আমি এই গ্রামেই থাকি। ভাস্করবাবু মাসে চার দিন, পাঁচ দিন স্কুলে আসেন। তিনি যে কোনও সংগঠন করতে পারেন। কিন্তু, পঠন পাঠনের সঙ্গে কোনও আপোস নয়।'

    যাঁর বিরুদ্ধে এত অভিযোগ সেই ভাস্কর ঘোষ কী বলছেন? সংগ্রামী যৌথ মঞ্চের আহ্বায়ক এই বিক্ষোভ প্রসঙ্গে বলেন, 'যাঁরা এসেছেন তাঁদের মধ্যে গ্রামের লোক কম এবং বাইরের লোক বেশি। বিগত দেড় বছর ধরে আমাদের সংগ্রামী যৌথ মঞ্চের আন্দোলন চলছে। আমি আন্দোলন চলাকালীন আমার ব্যক্তিগত জমানো ছুটি ১৫৬ দিন ব্যবহার করেছি। একজন শিক্ষক ২০ বছর চাকরি করলে তাঁর ৩৬০ দিন ছুটি জমে। আমার ইতিমধ্যেই ১৫৬ দিন শেষ হয়ে গিয়েছে।'

    তিনি আরও বলেন, 'আমি আমার ছুটি নিয়ে আন্দোলন করব না অন্যভাবে সেই দিনটা ব্যবহার করব, তা নিয়ে কারও কিছু বলার নেই। আর এত আপত্তি থাকলে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানান। এখানে যাঁরা এসেছেন তাঁরা চুনোপুটি। এরা স্কুলের পরিবেশ নষ্ট করছে।' পাশাপাশি তিনি গোটা ঘটনায় রাজনৈতিক রং দেখছেন এবং অভিযোগের আঙুল তুলেছেন রাজ্যের শাসক দলের দিকে।

    যদিও এই প্রসঙ্গে স্থানীয় তৃণমূল নেতা সোমনাথ চট্টোপাধ্যায় বলেন, 'এটা অভিভাবকদের স্বতঃস্ফূর্ত বিক্ষোভ। তিন বছর ধরে মিটিং মিছিল করছেন। স্কুল কখন করবেন? পড়ুয়াদের ভবিষ্যৎ নিয়ে ছিনিমিনি খেলা ঠিক নয়।'

    এদিকে স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা তানিয়া চট্টোপাধ্যায় অবশ্য ভাস্কর ঘোষের পাশে দাঁড়িয়েছেন। তিনি বলেন, 'ভাস্কর স্কুলে এসে সই করে ক্লাস না করিয়ে চলে গিয়েছে, এই ধরনের ঘটনা কখনও ঘটেনি। এখানে সিসিটিভি ক্যামেরা রয়েছে। তা দেখলেই বিষয়টি স্পষ্ট হয়ে যাবে।' পাশাপাশি বিক্ষোভের ঘটনায় তাঁরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন বলেও দাবি করেন তিনি। খবর দেওয়া হয় পুলিশে। শেষমেশ পুলিশ এসে পরিস্থিতি সামাল দেয়।
  • Link to this news (এই সময়)