এই সময়: রাজ্যের সব স্কুলে কর্মরত শিক্ষক-শিক্ষিকার শিক্ষাগত যোগ্যতা-সহ যাবতীয় তথ্য ‘বাংলার শিক্ষা পোর্টাল’-এ আপলোড করার কাজ দ্রুত শেষ করতে নির্দেশ দিলেন বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসু। দু’সপ্তাহের মধ্যে রাজ্যের শিক্ষা দপ্তরকে এই কাজ শেষ করতে বৃহস্পতিবার নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট।বিচারপতির বক্তব্য, স্কুলে শিক্ষক-শিক্ষিকারা যিনি যে বিষয়ে পড়াচ্ছেন, তাঁদের যোগ্যতা কী, সেটা ছাত্র-ছাত্রী, অভিভাবকদের জানা উচিত। কারণ, বিভিন্ন সময়ে বহু শিক্ষক-শিক্ষিকার যোগ্যতা নিয়ে অভিযোগ উঠেছে। তাই প্রত্যেক শিক্ষক-শিক্ষিকার (সব মিলিয়ে দেড় লাখের বেশি) যোগ্যতার তথ্য সরকারি পোর্টালে আপলোড করতে হবে।
রাজ্যের আইনজীবী বিশ্বব্রত বসু মল্লিক সব স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকার তথ্য একত্রিত করতে আরও দু’মাস সময় চান। আপাতত তিনি হুগলি, বীরভুম আর নদিয়া জেলার রিপোর্ট তুলে দেন আদালতে। তখনই বিচারপতির মন্তব্য, ‘রাজ্য সব ব্যাপারে এত স্লো কেন? আরও দ্রুত কাজ করতে হবে। বহু শিক্ষক চার-পাঁচ বছর ধরে চাকরি করছেন কোনও কনফার্মেশন ছাড়া। আর দেরি নয়। কারা স্কুলে চাকরি করছেন, সবার জানা দরকার।’
ভোটের আবহে এখনও বহু স্কুলে কেন্দ্রীয় বাহিনী থাকায় পঠনপাঠনের সমস্যা নিয়েও বিরক্তি প্রকাশ করেন বিচারপতি বসু। তিনি কটাক্ষের সুরে বলেন, ‘দেশে প্রতি বছর দু’তিনটি করে নির্বাচন হচ্ছে। নির্বাচনের জন্যে বাহিনী রাখতে কেন আলাদা বিল্ডিং বানানো হচ্ছে না? স্কুলগুলো রাজনৈতিক নেতা, মিলিটারির হয়ে উঠছে! ভুগতে হচ্ছে গরিব ছাত্রছাত্রীদের।’ বিচারপতি মনে করিয়ে দেন, ভোট-ছুটি মিলিয়ে তিন-চার মাস ধরে ছাত্র-ছাত্রীরা মিড-ডে মিলও পাচ্ছে না।
মুর্শিদাবাদের গোথা হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক আশিস তেওয়ারি সম্পূর্ণ বেআইনি ভাবে তাঁর ছেলে অনিমেষ তেওয়ারিকে স্কুলে চাকরিতে নিযুক্ত করায় যে মামলা হয়েছিল, সে মামলার শুনানি ছিল এ দিন। ইতিমধ্যে অনিমেষের চাকরি বাতিল করেছে হাইকোর্ট। তাঁর বিরুদ্ধে চার্জশিটও পেশ হয়েছে নিম্ন আদালতে। বিচারপতি বসু ওই ঘটনায় সিআইডিকে তদন্তভার দিয়েছিলেন।
গোটা রাজ্যে এমন আরও সাত জনকে খুঁজে পেয়েছে সিআইডি। যাঁরা কোনও রকম পরীক্ষা না দিয়েই বিভিন্ন স্কুলে চাকরি করছেন। এই প্রেক্ষিতেই রাজ্যের স্কুলে কর্মরত শিক্ষক-শিক্ষিকাদের সবাই যোগ্য কিনা, সে প্রশ্ন উঠেছে। এ কারণেই শিক্ষক-শিক্ষিকাদের যাবতীয় তথ্য পোর্টালে আপলোডের নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট।