• বাংলায় নতুন পার্টি পেয়েছি, মত ইয়েচুরির
    আনন্দবাজার | ২১ জুন ২০২৪
  • লোকসভা নির্বাচনে বাংলায় দলের ফল প্রত্যাশার কাছে পৌঁছতে না পারলেও ভবিষ্যতে লড়াই করার রসদ তাঁরা পেয়েছেন বলে মনে করছেন সীতারাম ইয়েচুরি। সিপিএমের সাধারণ সম্পাদকের মতে, দলের প্রচার কর্মসূচি যেমন হয়েছে, নতুন প্রজন্ম যে ভাবে ময়দানে লড়াই চালিয়েছে, তাতে আগামী দিনের নেতৃত্ব ও সংগঠন তৈরি হওয়ার বার্তা রয়েছে। ইয়েচুরির কথায়, ‘‘বলা চলে, বাংলায় নতুন পার্টি পেয়েছি! যা বাংলার জন্য ভাল, দেশের জন্যও।’’

    আলিমুদ্দিন স্ট্রিটে সিপিএমের রাজ্য কমিটির বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন ইয়েচুরি। লোকসভা ভোটের ফল নিয়ে দু’দিনের এই বৈঠকে প্রাথমিক আলোচনা হয়েছে। এর পরে রয়েছে দিল্লিতে আগামী ২৮ থেকে ৩০ জুন কেন্দ্রীয় কমিটির বৈঠক। রাজ্য কমিটিতে ঠিক হয়েছে, রাজ্যে দলের ভরাডুবির বিশদ পর্যালোচনা এবং ভবিষ্যতের কর্মসূচি ঠিক করার জন্য রাজ্য কমিটির বর্ধিত অধিবেশন হবে। নদিয়ার কল্যাণী শহরে আগামী ২৩, ২৪ ও ২৫ অগস্ট ওই অধিবেশন বসবে। বৈঠকের শেষে বৃহস্পতিবার দলের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম বলেছেন, ‘‘লোকসভা নির্বাচনে শুধু বিজেপি এবং তৃণমূল কংগ্রেসের বিরুদ্ধে লড়াই ছিল না। কালো টাকা, কর্পোরেট বন্ড, নির্বাচন কমিশন সকলের বিরুদ্ধেই লড়তে হয়েছে। অসম লড়াই করতে হবে জেনেই আমরা নেমেছিলাম এবং লড়াই করেছি।’’ তাঁর আরও বক্তব্য, ‘‘দ্বিমেরু রাজনীতির ‘মিথ’ এক দিনে ভাঙে না। মূল্যবৃদ্ধি, রুটি-রুজির প্রশ্ন এগুলো সরিয়ে রেখে ধর্মকে সামনে নিয়ে আসা হয়েছে। এ সবের বিরুদ্ধে আমাদের লড়াই চালিয়ে যেতে হবে।’’

    দলের মধ্যে সংগঠনের নিচু তলা থেকে আলোচনা এবং দলের বাইরে থেকেও নির্বাচনী ফলাফল সম্পর্কে মত নেওয়ার কথা ঘোষণা করেছে সিপিএম। জুলাই মাস জুড়ে সে সব প্রক্রিয়া চলবে। তার পরে অগস্টে রাজ্য কমিটির বর্ধিত অধিবেশন। বাংলায় সিপিএমের ফল প্রসঙ্গেই ইয়েচুরির বক্তব্য, ‘‘বিস্তারিত বিশ্লেষণ রাজ্য কমিটির বর্ধিত অধিবেশনের পরে বলা সম্ভব। তবে বাংলায় খারাপ ফলেও অনেক ইতিবাচক দিক আছে। এ রাজ্যে দলের প্রচার ভাল হয়েছে। দলে নতুন নেতৃত্ব তৈরি হয়েছে। বলা চলে, বাংলায় নতুন পার্টি পেয়েছি! যা বাংলার জন্য, দেশের জন্যও ভাল।’’

    সাংগঠনিক ও রাজনৈতিক নানা দুর্বলতার কথা উঠে এসেছে রাজ্য কমিটির আলোচনায়। তবে কংগ্রেসের সঙ্গে জোট প্রসঙ্গে বিরূপ মনোভাব তেমন কেউই জানাননি। বরং, এ বার যে কংগ্রেসের সঙ্গে সমঝোতা আগের চেয়ে মসৃণ ছিল, নিজেদের অভিজ্ঞতা এবং সংবাদমাধ্যমের রিপোর্টের প্রসঙ্গ টেনেও সে কথা বলেছেন কেউ কেউ। পাশাপাশিই, কৃষক সংগঠনের এক নেতা রাজ্য সম্পাদক হয়েও সেলিম কেন ভোটে দাঁড়ালেন, সেই প্রশ্ন তুলেছিলেন। রাজ্য কমিটির শেয দিনে দলের পলিটব্যুরো সদস্য সূর্যকান্ত মিশ্র সেই ‘বিভ্রান্তি’ কাটিয়ে দিয়েছেন। সূত্রের খবর, সূর্যকান্ত বলেছেন, বাংলার রাজ্য সম্পাদক সেলিম বা রাজস্থানের রাজ্য সম্পাদক অমরা রামের প্রার্থী হওয়ার সিদ্ধান্ত তাঁদের ব্যক্তিগত নয়। দলে আলোচনা করেই ঠিক হয়েছিল। আর অনেক আগেই দলের দায়িত্বে থাকাকালীন জ্যোতি বসু ভোটে লড়েছেন, কেরলেও পিনারাই বিজয়ন দলের দায়িত্বে থাকার সময়েই নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছেন। রাজ্য সম্পাদক হলে ভোটে দাঁড়ানোই যাবে না, এমন কোনও ধরাবাঁধা ‘নিয়ম’ নেই।

  • Link to this news (আনন্দবাজার)