বহরমপুরে নষ্ট কংগ্রেসের জনভিত্তিই! অধীরের হার নিয়ে দলীয় অন্তর্তদন্তে নয়া তথ্য
প্রতিদিন | ২২ জুন ২০২৪
ধ্রুবজ্যোতি বন্দ্যোপাধ্যায়: ষষ্ঠবার সংসদের পথে পা বাড়াতে গিয়েও পিছলে যেতে হয়েছে। বহরমপুরে কংগ্রেসের মসৃণ পিচে পাঠান-দাপটে এলোমেলো হয়ে গিয়েছে রাজনীতির সমস্ত অঙ্ক। নিজভূমে পরাজয়ের মুখে পড়তে হয়েছে পাঁচবারের সাংসদ অধীররঞ্জন চৌধুরীকে। চব্বিশের লোকসভা ভোটে বঙ্গ রাজনীতির এহেন ‘মহীরূহ পতনে’র নেপথ্যে একাধিক তত্ত্ব উঠে এসেছে। তবে গুরুত্বপূর্ণ হল, কংগ্রেসের অন্তর্তদন্ত এনিয়ে কী বলছে? মুর্শিদাবাদের কংগ্রেস নেতৃত্বের একটা বড় অংশের দাবি, আসলে বহরমপুরে কংগ্রেসের ‘মাস বেস’ বা জনভিত্তিই নষ্ট হয়ে গিয়েছে। তাই প্রার্থীকে জেতানোর কাজ কঠিন হয়েছে। যদিও এই বক্তব্য মানতে নারাজ বহরমপুরের প্রাক্তন কংগ্রেস বিধায়ক মনোজ চক্রবর্তী। তাঁর দাবি, কংগ্রেসের ছিল বহরমপুর, কংগ্রেসেরই থাকবে।
বহরমপুরের মতো কেন্দ্র থেকে অধীর চৌধুরীর (Adhir Ranjan Chowdhury) হারের নেপথ্যে উঠে এসেছে ভোটারদের মধ্যে সাম্প্রদায়িক বিভাজনের রাজনীতির তত্ত্ব। অনেকেই মনে করেছেন, এতদিনে মুসলিম প্রার্থী পেয়ে পাঁচবারের সাংসদকে বাদ দিয়ে ইউসুফ পাঠানকেই নিজেদের জনপ্রতিনিধি করে দিল্লিতে পাঠিয়েছেন বহরমপুরবাসী। এই মতের সঙ্গে অনেকটা সহমত পোষণ করেন বহরমপুরের প্রাক্তন বিধায়ক মনোজ চক্রবর্তী। তাঁর বক্তব্য, ”এখানে মেরুকরণের রাজনীতি করেছে তৃণমূল, বিজেপি ? দুজনেই। সেই কারণে এবার হারতে হয়েছে। কিন্তু বহরমপুর কংগ্রেসের ছিল, কংগ্রেসেরই থাকবে।” অধীরের নিজের অবশ্য বক্তব্য ছিল, ”এখানে হিন্দু-মুসলিম বিভাজন ছিল, আর মাঝে আমি স্যান্ডউইচ হয়েছি।”
লোকসভা নির্বাচনে ফলাফলের (Lok Sabha Election Result 2024) অন্তর্তদন্তে শুক্রবার প্রদেশ কংগ্রেস দপ্তরে বৈঠকের ঠিক আগে মুর্শিদাবাদ জেলা নেতৃত্বের ঘরোয়া বৈঠকে উঠে আসছে অন্য কথা। জেলার নেতাদের একাংশ স্বীকার করে নিয়েছে, বহরমপুরে (Baharampur) কংগ্রেসের যে জনভিত্তি ছিল, তা নষ্ট হয়ে গিয়েছে। দলের কর্মী, সমর্থকরা আর দলের হয়ে কাজ করেননি। কেউ পাঠানের হয়ে, কেউ বা বিজেপির হয়ে কাজ করেছেন। তাই অপ্রত্যাশিত হলেও অধীরের জয় অধরাই থেকে গিয়েছে। বিধানসভা ভিত্তিক ফলাফল বলছে, শুধু বহরমপুর বিধানসভা কেন্দ্রটিই কংগ্রেসের (Congress) দখলে গিয়েছে। সাতটির মধ্যে বাকি ছটিতেই শোচনীয় হার হয়েছে অধীরদের। কোথাও কোথাও তৃতীয় স্থানে নেমেছে হাত শিবির। ফলে যা হওয়ার তাই। রাজনৈতিক জীবনের সায়াহ্নে পরাজয়ের গ্লানিই সঙ্গী হয়েছে অধীরের।