বারাসতের পর অশোকনগর, ‘ছেলেধরা’ গুজবে মানসিক ভারসাম্যহীন মহিলাকে গণপিটুনি!
প্রতিদিন | ২২ জুন ২০২৪
অর্ণব দাস, বারাকপুর: বারাসতের ‘ছেলেধরা’ গুজবের আঁচ এবার অশোকনগরে। শুক্রবার সন্ধেবেলা অশোকনগরের ভরকুন্ডা পঞ্চায়েতের পুমলিয়া বাজারে এক মানসিক ভারসাম্যহীন মহিলাকে শিশু অপহরণকারী সন্দেহে মারধর (Lynching) করা হয় বলে অভিযোগ। খবর পেয়ে অশোকনগর থানার পুলিশ সেখানে পৌঁছে আক্রান্তকে উদ্ধার করতে গেলে পুলিশের উপরই আছড়ে পড়ে জনতার ক্ষোভ। ক্ষিপ্ত জনতা পুলিশের প্রতিও মারমুখী হয়ে পড়ে। এনিয়ে এলাকায় ব্যাপক উত্তেজনার ছড়ায়। পরে বিশাল পুলিশ বাহিনী ঘটনাস্থলে গিয়ে উত্তেজিত জনতাকে ছত্রভঙ্গ করে আক্রান্ত মহিলাকে উদ্ধার করে। এই ঘটনায় গণপিটুনি, পুলিশের উপর হামলা, বিশৃঙ্খলার অভিযোগে পাঁচজনকে আটক করা হয়েছে বলে পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে।
দিন কয়েক ধরে ছেলেধরা গুজবে উত্তাল বারাসত (Barasat) এলাকা। কাজিপাড়ায় এক কিশোরের অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনা থেকে এহেন গুজব। এই ঘটনায় শুক্রবার আরও দুজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। ধৃতদের নাম আবদুল করিম এবং শেখ রাজেশ। এনিয়ে গুজব কাণ্ডে ধৃতের সংখ্যা দাঁড়াল ২১। এ বিষয়ে বারাসত পুলিশ জেলার অতিরিক্ত পুলিস সুপার (ASP) স্পর্শ নীলাঙ্গী জানান, ”আমাদের এই অভিযান ধারাবাহিকভাবে চলতে থাকবে। কেউ যদি ভাবে, উসকানি দিয়ে রেহাই পাবে, তাহলে সেটা ভুল। বৃহস্পতিবার রাতেও আমরা দুজনকে গ্রেপ্তার করেছি। মানুষের মধ্যে সচেতনতা জরুরি। কারণ, এখনও পাচার নিয়ে কোনও তথ্য বা প্রমাণ নেই। সবটাই গুজব।” সাধারণ মানুষকে সচেতন করতে বিভিন্ন এলাকায় কর্মসূচি গ্রহণ করা হচ্ছে।
বারাসত জেলা পুলিশের তরফে ‘ছেলেধরা’ গুজব (Rumour) রুখতে লাগাতার সচেতনতা প্রচার করা হলেও বুধবার বারাসতের পৃথক দুটি জায়গায় বিশৃঙ্খলা, গন্ডগোল, গণপিটুনি-সহ পুলিশের উপর হামলার ঘটনাও ঘটে। আলোচনা শুরু হয় সোশাল মিডিয়া (Social Media) জুড়ে। এর পর গুজব মারাত্মক আকার ধারণ করলে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার ঘোষণা করে পুলিশ। সেই মতো সোশাল মিডিয়ায় গুজব রটানোর অভিযোগে তিনজনকে এবং বিশৃঙ্খলা, গন্ডগোল, গণপিটুনি-সহ পুলিশের উপর হামলার অভিযোগে ১৬জনকে গ্রেপ্তার (Arrest) করা হয়। শুক্রবার ধৃত মধ্যমগ্রামের আবদুল করিমের বিরুদ্ধে পুলিশের উপর হামলা ও গাড়ি ভাঙচুরের অভিযোগ রয়েছে। আরেক ধৃত বারাসতের বাসিন্দা শেখ রাজেশকেও একই অভিযোগে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তবে অশোকনগরের ঘটনায় স্পষ্ট যে গুজব বন্ধ করতে পুলিশের সচেতনতা প্রচারে বিশেষ লাভ হচ্ছে না।