স্থানীয় সূত্রে খবর, আক্রান্ত নাজির রুইয়া এলাকারই স্থানীয় বাসিন্দা। শুক্রবার রাতে এলাকা দিয়ে যাওয়ার সময় ছেলেধরা সন্দেহে কয়েক জন তাঁর উপর চড়াও হন বলে অভিযোগ। তাঁকে রাস্তায় ফেলে মারধর করা হয়। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছে নাজিরকে উদ্ধার করে রহড়া থানার পুলিশ।
এই ঘটনার জেরে পুরো এলাকায় উত্তেজনা ছড়িয়েছে। নাজির যে ছেলেধরা, এ কথা মানতে নারাজ স্থানীয়দের একাংশ। মারধরের ঘটনায় যুক্তদের শাস্তির দাবি জানিয়ে সরব হয়েছেন তাঁরা। স্থানীয় এক বাসিন্দা অতনু দাসের কথায়, ‘‘ওই যুবককে এই ভাবে মারার জন্য দোষীদের যেন দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হয়। ওর পরিবার যেন বিচার পায়। ওকে কেন মারা হল, তা তদন্ত করে দেখা হোক। আমরাও ধন্দে আছি। কেন একটা ভাল ছেলেকে মারা হল? মনে হচ্ছে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে বাচ্চা চুরির অভিযোগ আনা হচ্ছে। এটা হতে পারে না। ও পাড়ার ছেলে। ভিত্তিহীন অভিযোগ। একটি ভিডিয়ো পাওয়া গিয়েছে। কিছু নাম পাওয়া গিয়েছে। পুলিশ তদন্ত করছে।’’
নাজিরের পরিবারের তরফে ইতিমধ্যেই থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। তার ভিত্তিতে তদন্তে নেমেছে পুলিশ। যদিও এই ঘটনায় এখনও পুলিশ কাউকে গ্রেফতার করেনি।
উল্লেখ্য, ছেলেধরা সন্দেহে গণপিটুনির প্রবণতার শুরু বারাসতের কাজিপাড়ায় এক বালককে খুনের ঘটনা দিয়ে। কেউ বা কারা ওই বালককে হত্যা করা পর গুজব রটে যায় যে, ছেলেধরার খপ্পরে পড়েছিল ছেলেটি। ছেলেধরা তাকে ধরে নিয়ে গিয়ে চোখ উপড়ে, কিডনি বার করে খুন করেছে। ঝুলন্ত অবস্থায় বালকের দেহ মেলে। যদিও পুলিশ জানায়, ময়নাতদন্তে এমন কোনও ঘটনার প্রমাণ মেলেনি। কিন্তু ওই খুনের ঘটনার পর থেকেই সমাজমাধ্যমে ঘুরতে শুরু করে বারাসতের ছেলেধরার কাহিনি। বলা হয়, বারাসতে ছেলেধরার দৌরাত্ম্য বেড়ে গিয়েছে। বারাসতের বলে অন্য বিভিন্ন জায়গার ভিডিয়োও সমাজমাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়া হয়। ওই ভিডিয়োগুলির সত্যতা যাচাই করেনি আনন্দবাজার অনলাইন। এই গুজব এবং সমাজমাধ্যমে ‘অপপ্রচারের’ কারণে বুধবারই তিন জন সন্দেহের বশে গণধোলাই খান। এর পর বারাসতের ঘটনার ছায়া দেখা যায় বারাসত পুলিশ জেলারই অশোকনগরে। ছেলেধরা সন্দেহে শুক্রবার এক তরুণীকে গণপিটুনি দেওয়ার ঘটনা ঘটে শ্রীকৃষ্ণপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের পুমলিয়ায়। শুক্রবার রাতেই আবার খড়দহেও গনপিটুনির ঘটনা ঘটল।