গত শনিবার ভোরে বাড়ির সামনের মন্দির পরিষ্কার করছিলেন হেদুয়ার শিশির ভাদুড়ী সরণির বাসিন্দা প্রবীর ঘোষ। তাঁর পোষ্য সাশা-সহ আরও দু’টি কুকুর সেখানে খেলা করছিল। প্রবীরের দাবি, একটি স্কুটারে চেপে তিনটি ছেলে সেখানে এসে সাশাকে আদর করে। এর পরে হঠাৎই সাশাকে স্কুটারে তুলে নিয়ে পালায়। আমহার্স্ট স্ট্রিট থানায় অভিযোগ দায়ের হয়। মঙ্গলবার তদন্তে নামে পুলিশ। খোঁজ মেলে, নারকেলডাঙা এলাকায় কুকুরটিকে দেখা গিয়েছে। সেখানে তল্লাশি চালিয়ে স্থানীয় পশুপ্রেমী জেসমিন বেগমের কাছ থেকে কুকুরটিকে উদ্ধার করে নারকেলডাঙা থানার পুলিশ। আমহার্স্ট স্ট্রিট থানা থেকে বৃহস্পতিবার পোষ্যটিকে অভিভাবকদের হাতে তুলে দেওয়া হয়।
তদন্তে পুলিশ জেনেছে, স্কুটারে থাকা তিন জনই নাবালক। এক জন নারকেলডাঙার ছাগলপট্টি এলাকায় ছাগল বিক্রির কাজে যুক্ত, অন্য জনের চা-পকোড়ার দোকান রয়েছে, তৃতীয় জন পারিবারিক অনলাইনে কাপড় বিক্রির ব্যবসায় যুক্ত। এর সঙ্গেই পড়াশোনা চালায় তারা। কুকুরটিকে নারকেলডাঙা এলাকার পটুয়াপাড়া চিড়িয়া ময়দান এলাকায় তারা ছেড়ে দেয়। জেসমিন জানান, এলাকার ছোটদের একটি কুকুরের সঙ্গে খেলতে দেখে তাঁর সন্দেহ হয়। তিনি তাকে নিজের কাছে রাখেন। তাঁর কথায়, ‘‘কুকুরটিকে দেখেই মনে হয়েছিল, সে ভাল পরিচর্যায় ছিল। কিন্তু কোথা থেকে তাকে পাওয়া গেল, কেউই বলতে পারেনি। যাঁদের কুকুর, তাঁদের হাতে ওকে তুলে দিয়েছি।’’ তবে এই ঘটনার পিছনে কোনও চক্র জড়িত কি না, তা তদন্ত করে দেখছে পুলিশ।
কুকুরের অভিভাবক প্রবীরের স্ত্রী সুদীপ্তা বলেন, ‘‘জেসমিন সাশাকে ভালই রেখেছিলেন। কিন্তু পরিবার ছেড়ে থাকতে গিয়ে ঝিমিয়ে পড়েছিল ও। আজই ওকে পশু চিকিৎসক দেখিয়েছি।’’ কুকুরটিকে খুঁজে পাওয়ার চেষ্টা চালানো পশুপ্রেমী সংস্থা ‘পিপল ফর অ্যানিম্যালস’-এর তরফে আয়ুষি দে বলেন, ‘‘সাশাকে পেয়ে ওর বাবা ডোডো আর বোন বুলবুলি যেন প্রাণ ফিরে পেয়েছে। এই আনন্দের মুহূর্তগুলো থেকে কোনও পোষ্যই যাতে বঞ্চিত না হয়, সেটা নিশ্চিত করতে হবে।’’