‘মুম্বাই ক্রাইম ব্রাঞ্চ থেকে বলছি’ ফোনে হুমকি, নয়া প্রতারণা সল্টলেকে
এই সময় | ২২ জুন ২০২৪
‘মুম্বাই ক্রাইম ব্রাঞ্চ থেকে বলছি’। ফোনের ওপার থেকে কথাটা শুনেই পিলে চমকে গিয়েছিল সল্টলেকের বাসিন্দার। সেখান থেকে জানানো হয়, একটি পার্সেল আটক করেছে তারা। আটক করা পার্সেল নেওয়ার জন্য চাওয়া হয় খরচ। ভুয়ো পুলিশের ফোনের কথা বিশ্বাস করে সেই ব্যক্তি খোয়ালেনা প্রায় লক্ষাধিক টাকা। প্রতারণার বিষয়টি বিষয়টি বুঝতে পেরে অবশেষে বিধাননগর সাইবার ক্রাইম থানার দ্বারস্থ হন সেই ব্যক্তি। আন্তঃরাজ্য প্রতারণা চক্রের অন্যতম অভিযুক্তকে গ্রেফতার করলো বিধাননগর সাইবার ক্রাইম থানার পুলিশ।পুলিশ সূত্রে খবর, সল্টলেক সিটি সেন্টার এলাকার বাসিন্দা পেশায় চাটার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট রাজেন্দ্র কুমার বেয়েতি। বিধাননগর সাইবার ক্রাইম থানায় অভিযোগ করে জানান, কিছুদিন আগে তিনি একটি ফোন কল পান যেখানে তাকে মুম্বাইয়ের ক্রাইম ব্রাঞ্চের অফিসার পরিচয় দিয়ে এক ব্যক্তি কল করেছিলেন। তার একটি কুরিয়ার কোম্পানির পার্সেল তারা আটক করেছে বলে জানায় হয়। সেই পার্সেলটি নেওয়ার জন্য তাকে কিছু ট্রানজাকশন করতে হবে বলেও জানানো হয়। সেই কথা অনুযায়ী অভিযোগকারী ব্যক্তি দু'বারে 15 লাখ টাকা ট্রানজেকশন করে। পরবর্তীতে তিনি বুঝতে পারেন যে তিনি প্রতারিত হয়েছেন।
এর পরেই বিধাননগর সাইবার ক্রাইম থানায় তিনি অভিযোগ করেন। ঘটনা তদন্ত শুরু করে বিধাননগর সাইবার ক্রাইম থানার পুলিশ। তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পারে একটি আন্তঃরাজ্য প্রতারণা চক্র দেশের বিভিন্ন রাজ্যের হাই প্রোফাইল মানুষদের টার্গেট করছে। পুলিশের ভয় দেখিয়ে লক্ষাধিক টাকা প্রতারণার ফাঁদ পেতেছে সেই চক্র। ঘটনা তদন্ত শুরু করে পুলিশ জানতে পারে এই চক্রের মূল ৩ পান্ডাকে ইন্দোর পুলিশ স্টেশনের তরফ থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
অভিযোগকারী ব্যক্তির টাকা কোন ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে গিয়েছে সেই বিষয়ে খোঁজখবর শুরু করে পুলিশ। জানা যায়, কলকাতার নিউটাউনের বাসিন্দার এক ব্যক্তির অ্যাকাউন্টে সেই টাকা ট্রানজাকশন হয়েছে। নিউটন এলাকার বাসিন্দা অরিন্দম মণ্ডলকে আনন্দপল্লী এলাকা থেকে গ্রেফতার করে বিধাননগর সাইবার ক্রাইম থানার পুলিশ।
পুলিশ সূত্রে আরও জানা গিয়েছে, এই প্রতারণা চক্রটি মূলত মহারাষ্ট্র এবং গুজরাট থেকে তাদের পরিচালিত করে। এছাড়া বিভিন্ন রাজ্যে এই প্রতারণা চক্রের জাল বিছানো আছে বলে সূত্রের খবর। আজ অভিযুক্তকে বিধাননগর আদালতে তোলা হবে। পুলিশ অভিযুক্তকে নিজেদের হেফাজতে নেওয়ার আবেদন জানাবে বলে পুলিশ সূত্রে খবর। এই চক্রের যে মূল অভিযুক্তদের ইন্দোর পুলিশ স্টেশনের তরফ থেকে গ্রেফতার করা হয়েছিল, তাদেরকেও যত দ্রুত সম্ভব নিজেদের হেফাজতে নেওয়ার প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে বলে বিধান নগর সাইবার ক্রাইম সূত্রে খবর। কী ভাবে এই প্রতারণা চক্র পরিচালনা করা হতো এবং এই চক্রের সঙ্গে কারা কারা জড়িত আছে সেই বিষয়ে তদন্ত করে দেখছে বিধাননগর সাইবার ক্রাইম থানার পুলিশ।