বারাসত-অশোকনগরের পর বনগাঁ, ফের ছেলেধরা সন্দেহে গণপিটুনি
এই সময় | ২৩ জুন ২০২৪
বারাসত, অশোকনগরের পর এবার বনগাঁ। ছেলেধরা সন্দেহে ভবঘুরে ব্যক্তিকে গণপিটুনির অভিযোগ। গুরুতর আহত অবস্থায় তাঁকে বনগাঁ মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। ঘটনার তদন্তে নেমে ইতিমধ্যেই ২ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গোটা ঘটনার জেরে এলাকায় ছড়িয়েছে ব্যাপক চাঞ্চল্য।জানা গিয়েছে, শনিবার রাতে উত্তর ২৪ পরগনার বনগাঁ পুরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের ঠাকুরপল্লীতে এক ভবঘুরেকে ছেলেধরা সন্দেহে গণপিটুনি দেওয়া হয়। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় পুলিশ। প্রহৃত ব্যক্তিতে উদ্ধার করে বনগাঁ মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এই ভবঘুরেকে মারধরের ভিডিয়ো ইতিমধ্যেই ছড়িয়ে পড়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। ঘটনার তদন্ত নেবে ইতিমধ্যেই দু'জনকে গ্রেফতার করেছে বনগাঁ থানার পুলিশ।
স্থানীয় এক ক্লাবের সম্পাদক নির্মলেন্দু বিশ্বাস বলেন, 'অপরিচিত এক ব্যক্তিকে এলাকায় দেখা যায়। সন্দেহ হওয়ায় সবাই তাকে আটকায়। মারধরও করা হয়েছে। যদিও পুলিশ পরে তাকে নিয়ে গিয়েছে।' এই বিষয়ে বনগাঁ ৯ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর বন্দনা দাস কীর্তনীয়া বলেন, 'শনিবার রাতে আমি জানতে পারি যে ওয়ার্ডে একজন ব্যক্তি সন্দেহজনকভাবে ঘোরাফেরা করছে। আমি পুলিশকে খবর দিই। নিজেও সেখানে যাই। যদি মারধর হয়ে থাকে আমার যাওয়ার আগে হয়েছে। আমি একটু পরে গিয়েছিলাম। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে তাকে উদ্ধার করে বনগাঁ মহাকুমা হাসপাতালে ভর্তি করেছে। মারধর করা হয়ে থাকলে ঠিক হয়নি। সাধারণ মানুষকে বলব গুজবে কান দেবেন না। এই ধরনের কোনও সন্দেহজনক ব্যক্তিকে দেখলে পুলিশ প্রশাসনকে খবর দিন। আইন নিজের হাতে তুলে নেবেন না।'
উল্লেখ্য, কিছুদিন আগে বারাসতের কাজিপাড়ায় একটি নাবালকের দেহ উদ্ধার হয়। সেই ঘটনার পর থেকেই বারাসত, মধ্যমগ্রাম সহ পার্শ্ববর্তী এলাকায় আগুনের মতো ছড়িয়ে পড়ে ছেলেধরা আতঙ্ক। এমনকী বারাসতেও কয়েকদিন আগে গণপ্রহারের ঘটনা ঘটেছে। উত্তেজিত জনতা বেধড়ক মারধর করেছে ৩ জনকে। প্রহৃতদের মধ্যে মহিলারাও ছিলেন। পুলিশ উদ্ধার করতে গেলে, পুলিশের উপরেও চড়ায় হয় উত্তেজিত জনতা। ভাঙচুর করা হয় পুলিশের গাড়ি। পালটা ধরপাকড় শুরু করে পুলিশ। এই প্রসঙ্গে বারাসত পুশিলের তরফ বারেবারেই জানান হয়েছে যে গোটা বিষয়টিই ভুয়ো। কোনও শিশুচুরির ঘটনা ঘটেনি। একশ্রেণির মানুষ গুজব ছড়াচ্ছে। মানুষকে গুজবে কান না দেওয়ার আবেদনও জানান হয় পুলিশের পক্ষ থেকে। আর সেই ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই এবার বনগাঁতেও ঘটে গেলে গণপ্রহারের ঘটনা।
এদিকে এই ঘটনায় বনগাঁর পুলিশ সুপার দীনেশ কুমার বলেন, 'ঘটনায় এখনও পর্যন্ত দুজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। গোটা ঘটনার তদন্ত প্রক্রিয়া চলছে। পাশাপাশি সাধারণ মানুষের উদ্দেশ্যে বার্তা, কেউ যেন এমন গুজবে কান না দেয়, এবং গুজব না ছড়ায়।'