ঘটনাটি বনগাঁ পুরসভা এলাকার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের ঠাকুরপল্লির। সেখানে শনিবার রাতে রাস্তায় ভবঘুরে এক যুবককে ঘুরতে দেখে সন্দেহ হয় স্থানীয়দের। দ্রুত গুজব ছড়িয়ে পড়ে এলাকায়। স্থানীয়দের সন্দেহ হয়, ওই যুবক ছেলেধরা। শিশু অপহরণের উদ্দেশ্য নিয়ে এসেছেন। মুহূর্তে এলাকায় লোকজন জড়ো হয়ে যায়। শুরু হয় গণপিটুনি। ছেলেধরা সন্দেহে ওই যুবককে বেধড়ক মারধর করা হয়েছে বলে অভিযোগ। গুরুতর জখম অবস্থায় তিনি এখন বনগাঁ মহকুমা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
গণপিটুনির খবর পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছয় পুলিশ। তারা যুবককে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করায়। তদন্তে নেমে দু’জনকে গ্রেফতারও করা হয়।
বনগাঁর এই গণপিটুনির ঘটনার ভিডিয়ো রাতেই সমাজমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছিল। যেখানে দেখা যায়, যুবককে মাটিতে ফেলে মারধর করা হচ্ছে। যদিও সেই ভিডিয়োর সত্যতা যাচাই করেনি আনন্দবাজার অনলাইন।
স্থানীয় ক্লাবের সম্পাদক নির্মলেন্দু বিশ্বাস বলেন, ‘‘এখানে রাতে অপরিচিত এক জন এসেছিলেন। কেউ চেনেন না, তাই সকলে ভেবেছেন তিনি ছেলেধরা। এলাকার লোক জড়ো হয়ে গিয়েছিল। মারধরও করা হয়। পুলিশ এসে উদ্ধার করে তাঁকে নিয়ে যায়।’’
এ প্রসঙ্গে বনগাঁ পুরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর বন্দনা দাস কীর্তনিয়া বলেন, ‘‘এক জন অসুস্থ হয়ে পড়েছেন জানতে পেরে রাতে আমি পুলিশকে খবর দিয়েছিলাম। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে তাঁকে উদ্ধার করে বনগাঁ মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করেছে। ওঁকে মারধর করা হয়ে থাকলে ঠিক হয়নি। সাধারণ মানুষকে বলব, গুজবে কান দেবেন না। এই ধরনের কোনও সন্দেহভাজন ব্যক্তিকে দেখলে পুলিশ-প্রশাসনকে জানান। আইন হাতে তুলে নেবেন না।’’
উল্লেখ্য, এর আগে বারাসত, খড়দহ এবং অশোকনগরেও একই ধরনের ঘটনা ঘটেছিল। বারাসতে একই দিনে দুই জায়গায় মোট তিন জনকে ছেলেধরা সন্দেহে মারধর করা হয়। তাঁদের মধ্যে এক মহিলাও ছিলেন। পরে অশোকনগরে ছেলেধরা সন্দেহে গণপিটুনি দেওয়া হয় এক তরুণীকে। বাধা দিতে গেলে পুলিশকেও মারধর করে উন্মত্ত জনতা। খড়দহে শনিবার এক যুবককে ছেলেধরা সন্দেহে মারধর করেন এলাকার মানুষ। প্রতি ক্ষেত্রেই দেখা যাচ্ছে, ঘটনাগুলি ঘটছে উত্তর ২৪ পরগনা জেলার কোনও না কোনও অংশে। জেলার নিরাপত্তা তাই প্রশ্নের মুখে। পুলিশ কেন বার বার এই ধরনের ঘটনা আটকাতে ব্যর্থ হচ্ছে, তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে।