• বদলি-প্রক্রিয়া শুরু শিলিগুড়ি পুলিশে 
    আনন্দবাজার | ২৩ জুন ২০২৪
  • লোকসভা ভোটের পরে, শিলিগুড়ি পুলিশের বদলি প্রক্রিয়া শুরু হল। শুক্রবার বিভিন্ন মামলায় ভূমিকা বা পদস্থ কর্তাদের মতামতের প্রেক্ষিতে দায়িত্ব থেকে সরলেন নিচু তলার আধিকারিকদের একাংশ। পুলিশ সূত্রের খবর, এ বার খোঁজখবর শুরু হয়েছে ওসি, আইসি পর্যায়ের আধিকারিকদের নিয়ে। লোকসভা ভোটে শিলিগুড়ি এবং লাগোয়া সমতলের প্রতিটি বিধানসভা এলাকায় শাসক দলের হারের পরে জমি দখল এবং নানা ‘সিন্ডিকেট’ নিয়ে বেশি নজরদারির নির্দেশ এসেছে রাজ্য পুলিশের তরফে। সেখানে কোনও পুলিশ আধিকারিকের সঙ্গে জমি সংক্রান্ত যোগাযোগ থাকলে ব্যবস্থা নেওয়ার ইঙ্গিতও রয়েছে। ফলে, থানা ও ফাঁড়ি স্তরে বড় ধরনের রদবদলের সম্ভাবনার কথা আলোচনা হচ্ছে। বিশেষ করে, পুরনো এবং এলাকা সম্পর্কে ওয়াকিবহাল পুলিশ আধিকারিকদের শিলিগুড়িতে নতুন করে দায়িত্বে আনা হতে পারে বলে আলোচনা চলছে পুলিশের অন্দরে।

    শিলিগুড়ি পুলিশ কমিশনার সি সুধাকর এই বদলি নিয়ে কোনও মন্তব্য করেননি। তবে রাজ্য পুলিশের উত্তরবঙ্গের এক কর্তার কথায়, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এ বার লোকসভা নির্বাচনকে ঘিরে পুলিশের একাংশের ভূমিকায় খুশি নন। তিনি তা প্রকাশও করেছেন। তাই পুলিশে বড়সড় বদলির সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে।’’ তিনি জানান, জমি কারবারিদের সঙ্গে পুলিশের একাংশ ওঠাবসা একেবারে মানুষ ভাল ভাবে নেয় না। শিলিগড়ির রামকৃষ্ণ মিশনের জমি দখলের মামলায় তা বোঝা গিয়েছে।

    শিলিগুড়ি পুলিশের আধিকারিকদের একাংশ মনে করছেন, শহর এলাকায় পুলিশের সঙ্গে জমি বা বিভিন্ন ‘সিন্ডিকেট’-এর ‘ঘনিষ্ঠতা’ মানুষ ভাল ভাবে নেয়নি। এনজেপি, ভক্তিনগর এলাকায় গত কয়েক মাসে নানা অভিযোগ সামনে এসেছে। এনজেপির মতো গুরুত্বপূর্ণ এবং স্পর্শকাতর থানাকে এখনও কেন আইসি পদমর্যাদায় তোলা হচ্ছে না, সে প্রশ্নও উঠছে। বিশেষ করে, দু’দিন আগে নিচুতলার যে আধিকারিকেরা বদলি হয়েছেন, খুনের মামলা থেকে শুরু করে, জমি দখলের মামলায় তাঁদের ভূমিকা ‘যথাযথ’ ছিল কি না, তা নিয়ে পুলিশের অন্দরে ধন্দ রয়েছে। তবে প্রকাশ্যে সেগুলিকে ‘বদলি রুটিন’ বলা হয়েছে। তবে পাঁচ জনকে লাইনে ‘ক্লোজ়’ করার পরে অভিযোগ কিছু রয়েছে, তা নিয়ে নিশ্চিত পুলিশকর্মীদের একাংশ।

    কয়েক বছর আগে, শিলিগুড়ির ‘উত্তরকন্যা’য় প্রশাসনিক বৈঠকে শিলিগুড়ি পুলিশকে জমি-মাফিয়া নিয়ে সাবধান করেছিলেন খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। প্রয়োজনে, তিনি ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলেছিলেন। যদিও তা সে ভাবে নেওয়া না হলেও এ বার ভোটের পরে উত্তরবঙ্গের একাধিক জেলায় পুলিশকর্মীদের একাংশের ভূমিকা নিয়ে ক্ষুব্ধ ও অসন্তুষ্ট মুখ্যমন্ত্রী। তাই পুলিশ-প্রশাসনে কেমন রদবদল হতে চলেছে, তাতে ‘নবান্ন’ নজরে রাখবে বলে মনে করছেন অনেক পুলিশকর্মী।

  • Link to this news (আনন্দবাজার)