তানিয়া থেকে হাবিবুল্লাহ কেন জঙ্গি সংগঠনের টার্গেট কেন মেধাবীরা?
এই সময় | ২৩ জুন ২০২৪
মেধাবী ছাত্র-ছাত্রীদের নিশানা? মহম্মদ হাবিবুল্লাহই হোক বা তানিয়া পারভিন, জঙ্গি সন্দেহে গ্রেফতার হওয়া তরুণ-তরুণীদের ক্ষেত্রে অন্যতম 'কমন ফ্যাক্টর', তারা মেধাবী? কিন্তু, যে সমস্ত পড়ুয়াদের ঝকঝকে ভবিষ্যৎ হতে পারত, কেন তাঁদের এই অন্ধকারে টেনে আনা হচ্ছে? তা নিয়ে চর্চা শুরু হয়েছে।বছর তিনেক আগে বসিরহাটের বাদুড়িয়ার মলেয়াপুরের ছাত্রী তানিয়া পারভিনকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। সে বরাবর ভালো ছাত্রী হিসেবেই এলাকায় পরিচিত ছিল। উচ্চ মাধ্যমিকে ভালো ফলাফল করে সে কলকাতার একটি নামী কলেজে ভর্তিও হয়। জঙ্গি যোগ সন্দেহে তার গ্রেফতারিতে কার্যত আকাশ থেকে পড়েছিলেন এলাকাবাসী।
অন্যদিকে, রাজ্য পুলিশের স্পেশাল টাস্ক ফোর্সের হাতে গ্রেফতার হয়েছে পশ্চিম বর্ধমানের কাঁকসার যুবক মহম্মদ হাবিবুল্লাহ। সম্প্রতি গজিয়ে ওঠা জঙ্গি গোষ্ঠী 'শাহাদাত' এক সঙ্গে তার যোগসূত্র রয়েছে বলে সন্দেহ গোয়েন্দাদের। প্রতিবেশী বাংলাদেশের নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন আনসার-আল-ইসলামের সঙ্গে যোগ রয়েছে শাহাদাত-এর। উল্লেখযোগ্যভাবে হাবিবুল্লাহও পড়াশোনায় অত্যন্ত ভালো।
কম্পিউটার সায়েন্স নিয়ে পড়াশোনা করছিল সে। পাশাপাশি মাধ্যমিক এবং উচ্চ মাধ্যমিকের ক্ষেত্রেও ৮০ শতাংশ বেশি নম্বর পেয়েছিল হাবিবুল্লাহ। ভারতে অন্তর্জালের মাধ্যমে সংগঠন বাড়াতে চায়ছিল এই জঙ্গি সংগঠন, গোয়েন্দাদের সন্দেহ এমনটাই। শুধু তাই নয়, বাংলায় এই সংগঠন চালাত হাবিবুল্লাহই, গোয়েন্দাদের সন্দেহ এমনটাই। শনিবার কাঁকসা থেকে গ্রেফতার করা হয় হাবিবুল্লাহকে।
হাওড়া থেকে আইএস যোগে গ্রেফতার করা হয়েছিল সাদ্দাম মল্লিককে। সেও আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের এমটেক-এর ছাত্র ছিল। সব মিলিয়ে বারংবার দেখা যাচ্ছে, জঙ্গিদের ক্ষেত্রে নজরে মেধাবীরা? কিন্তু, কেন তাঁদের টার্গেট করা হচ্ছে?
এই প্রসঙ্গে প্রাক্তন পুলিশ কর্তা পঙ্কজ দত্ত বলেন, ‘আইসিস মুভমেন্টের সময় দেখা গিয়েছিল অনেক মুসলিম ঘরানার মেধাবী ছাত্ররা তাতে অংশগ্রহণ করেছিল। কেউ সিরিয়াতে ছিল, কেউ বাংলাদেশে বা কেরালাতে বসে কাজ করেছে। এই বীজটা পোঁতা ছিল আইসিসের মধ্যেই। তাদের বিভিন্ন শাখা সংগঠন রয়েছে। তবে একটা বিষয় বলা যায়, গুজরাট, পঞ্জাব এবং রাজস্থান যেখানে বর্ডার রয়েছে সেই এলাকাগুলিতে ফেন্সিং, কাঁটাতারের বেড়া রয়েছে। সেখান থেকে মশা মাছিও গলতে পারে না।’
তিনি আরও বলেন, ‘ বাংলাদেশ থেকে এখানে এসে জঙ্গি কার্যকলাপ করা সোজা। কারণ যে ৮০০ কিলোমিটার বর্ডার রয়েছে তাতে কোনও ফেন্সিং নেই। যেখানে যে সংখ্যাক বিএসএফ থাকার কথা তা নেই। কোনও বাংলাদেশি যুবক যুবতী যদি চলেও আসে তাহলে তা বোঝা কষ্টসাধ্য, কারণ তাঁদের ভাষা, চেহারা সবকিছুতেই এপার বাংলার সঙ্গে মিল রয়েছে।’
উল্লেখ্য, রবিবার দুর্গাপুর মহকুমা আদালতে হাবিবুল্লাহকে তোলা হলে বিচারক ১৪ দিনের পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দেয়। জানা গিয়েছে, তাঁর বাবা মহম্মদ ইসমাইল পেশায় গাড়ি চালক। ছেলের গ্রেফতারির পরেই অন্যত্র চলে গিয়েছেন বাবা-মা। বাড়ির দেখভাল করছেন প্রতিবেশীরা।