একজন নেতা তৈরি হন কর্মীদের হাত ধরেই। যে কোনও জনপ্রতিনিধির নির্বাচনে জয়ের ব্যাপারে প্রধান ভূমিকা নিয়ে থাকেন তাঁর অনুগত কর্মীরা। কঠিন প্রতিদ্বন্দ্বিতায় বুক চিতিয়ে লড়াই করেন তাঁরাই। তাই, জয়ের স্বীকৃতি প্রদান অনুষ্ঠানে সাক্ষী থাকুক সহযোগী কর্মীরাই। এমন ভাবনা থেকেই এবার শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে ১০০ কর্মীকে নিয়ে দিল্লি চললেন বাঁকুড়ার সাংসদ অরূপ চক্রবর্তী।রবিবার দুপুরে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা সহকারে দিল্লী যাত্রার আগে নিজেই একথা জানিয়েছেন বাঁকুড়া লোকসভা কেন্দ্রের সদ্য নির্বাচিত তৃণমূল সাংসদ অরুপ চক্রবর্ত্তী নিজেই একথা জানিয়েছেন। এদিন তিনি বলেন, ‘জঙ্গল মহল সহ জেলার সহকর্মীদের নিয়ে সাংসদ হিসেবে শপথ গ্রহণ করতে দিল্লী যাচ্ছি। ভোটে জেতা ও যথেষ্ট মার্জিনা জেতার পেছনে এঁদের প্রত্যেকের বিশাল ভূমিকা রয়েছে।’ সেই কারণে নিজের শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে কর্মীদের পাশে দেখতে চাইছেন তিনি। ১০০ কর্মীর বিমান ভাড়া নিজের ট্যাঁক থেকে খরচ করে দিল্লি যাচ্ছেন তিনি।
অণ্ডাল বিমান বন্দর থেকে ইণ্ডিগোর বিমানে তাঁরা একসঙ্গে দিল্লির উদ্দেশ্যে পাড়ি দিচ্ছেন বলেও জানান তৃণমূল সাংসদ। শুধু নিয়ে যাওয়াই নয়, দিল্লির তাঁদের শীততাপ নিয়ন্ত্রিত হোটেলে থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থাও করে দিচ্ছেন তিনি। সোমবার তাঁর লোকসভায় শপথ নেওয়ার কথা আছে। বিষয়টি নিয়ে অরূপ চক্রবর্তী আরও বলেন, ‘আনন্দ সহকারে কর্মীরা আমার সঙ্গে দিল্লিতে যাচ্ছে। এই কর্মীরা রোদে -জলে অক্লান্ত পরিশ্রম করে এঁরা আমায় প্রচুর ভোটে আমায় জিতিয়েছে। ওঁরাই জানিয়েছে, আমি যখন শপথ নেব, তখনই আমরাও যাব। সেইজন্য আমার সঙ্গে ওঁরাও রওনা দেবে।’
প্রসঙ্গত, বাঁকুড়া কেন্দ্রের প্রাক্তন সাংসদ ছিলেন বিজেপির সুভাষ সরকার। এই কেন্দ্র থেকে জিতে আসার পর তিনি কেন্দ্রীয় মন্ত্রীও হয়েছিলেন। সেই কারণে, এই কেন্দ্রে লড়াইটাও ছিল বেশ কঠিন। গতবার এই কেন্দ্র থেকে দাঁড় করানো হয়েছিল প্রয়াত তৃণমূল মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়কে। বিপুল ভোটে পরাজিত হন তিনি। এবার এই কেন্দ্র থেকে তালড্যাংরার বিধায়ক অরূপ চক্রবর্তীকে দাঁড় করায় তৃণমূল কংগ্রেস।
বাঁকুড়া লোকসভা কেন্দ্রটি দীর্ঘদিন ধরেই সিপিএমের গড় বলে পরিচিত ছিল। এই কেন্দ্র থেকে দীর্ঘদিন ধরে জিতে এসেছেন প্রয়াত বাম নেতা বাসুদেব আচারিয়া। ১৯৮০ সাল থেকে টানা এই কেন্দ্রে জিতে এসেছেন তিনি। ২০১৪ সালের নির্বাচনে এই কেন্দ্রে পালাবদল হয়। অভিনেত্রী মুনমুন সেন এই কেন্দ্র থেকে জয়ী হয়ে আসেন। কিন্তু, পরেরবার ২০১৯ সালে কেন্দ্রটি নিজেদের দখলে রাখতে পারেনি তৃণমূল কংগ্রেস। গতবারের ব্যবধানকে টপকে এবারের জয় জেলার ঘাসফুল শিবিরে অনেকটাই আত্মবিশ্বাস বাড়িয়েছে বলেই মনে করছে জেলা নেতৃত্ব।