বারাসতের কাজিপাড়ায় নাবালকের দেহ উদ্ধারের ঘটনার পর যে শিশুচুরির গুজব ছড়িয়েছিল তার মাস্টার মাইন্ডকে ধরল পুলিশ। কাজিপাড়ায় নাবালককে খুনের ঘটনায় সন্দেহভাজন যে ব্যক্তিকে গ্রেফতার করা হয়েছে সেই এই গোটা গুজবের মাস্টার মাইন্ড বলে রবিবার জানিয়ে দেওয়া হল পুলিশের পক্ষ থেকে। ধৃত ব্যক্তির নাম আঞ্জিব নবি। সম্পর্কে সে নিহত নাবালকের জ্যাঠা।এদিন বারাসত পুলিশ জেলার এসপি প্রতীক্ষা ঝাড়খাড়িয়া বলেন, 'আঞ্জিব নবি ধর্মীয় স্থানকে ব্যবহার করে পুলিশকে আক্রমণ করার কথা ও যাঁরা বাইরে থেকে এসেছেন সবাইকে আক্রমণ করার কথা বলেছে। এই কথা সে স্বীকার করেছে। খুনের বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার জন্য গুজব ছড়ানোর যাবতীয় বিষয় এই ব্যক্তিই করেছে।' এসপি আরও বলেন, 'আঞ্জিবের উপরে প্রথমে সন্দেহ ছিল না। কিন্তু যখনই পুলিশ ওই এলাকায় ঢুকত সে চলে আসত। স্পেশ্যাল টিম গেলেও বলত আমি ঢুকবো। তখনই আমাদের সন্দেহ তৈরি হয়।' আঞ্জিবই পুলিশকে ভুল পথে পরিচালনা করে বলে জানিয়ে দেন এসপি।
নাবালককে খুনের মোটিভও এদিন সংবাদমাধ্যমের সামনে আনেন পুলিশ সুপার। তিনি জানান, পারিবারিক একটি সম্পত্তি নিয়ে ওই নাবালক ও তার বাবার উপরে আগে থেকেই আক্রোশ ছিল আঞ্জিবের। আর ঘটনার ২ দিন আগে বাড়ির তাল বিক্রি নিয়েও পরিবারে অশান্তি হয়। সেই সময় ওই নাবালক অঞ্জিবকে মারতে যায়। তারপরেই ওই নাবালককে পৃথিবী থেকে সরিয়ে দেওয়ার ছক কষে অঞ্জিব। অভিযুক্তকে হেফাজতে নিয়ে বারংবার জিজ্ঞাসাবাদ করেন তদন্তকারি অফিসারেরা। এরপরেই সে নিজের অপরাধ কবুল করেছে বলে জানান পুলিশ সুপার।
এদিকে রবিবারই শিশুচুরির চেষ্টার অভিযোগে ধরে ফেলা হল এক মহিলাকে। ঘটনাটি ঘটেছে উত্তর ২৪ পরগনার দেগঙ্গায়। যদিও অন্যান্য জায়গার মতো এখানে অবশ্য ওই মহিলাকে মারধর করা হয়নি। তুলে দেওয়া হয় পুলিশের হাতে। ঘটনার জেরে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে গোটা এলাকায়।
এলাকাবাসীরা জানাচ্ছে, রবিবার এক মহিলা এলাকায় সন্দেহজনকভাবে ঘোরাফেরা করছিলেন। তাঁকে অনেকবার জিজ্ঞাসা করা সত্ত্বেও কোনও কথা বলতে চাইছিলেন না। এক সময় একটি শিশুকে বিস্কুট দিতে যায়। তখন তাঁকে চেপে ধরে এলাকার মানুষজন। এরপর ওই মহিলা জানান তাঁর নাম মমতাজ পরভিন, বাড়ি বসিরহাট। মহিলার ব্যাগ থেকে পাওয়া গিয়েছে একটি লাড্ডু, একটি বিস্কুটের প্যাকেট, পাউডারের গুঁড়ো ও খুচরো পয়সা। তবে এলাকার লোকজন অবশ্য ওই মহিলাকে মারধর করেনি। খবর যায় পুলিশের কাছে। এরপর পুলিশ গিয়ে ওই মহিলাকে উদ্ধার নিয়ে যায়।
এই ঘটনায় পুলিশ সুপার প্রতীক্ষা ঝাড়খাড়িয়া জানান, 'দেগঙ্গাতে আইন আইনশৃঙ্খলার অবনতি হয়নি। ওখানে ওই মহিলা চকোলেট বিক্রি করছিলেন। তাতেই মানুষের সন্দেহ হয় যে কেন তিনি চকোলেট দিচ্ছেন শিশুদের। যদিও তাঁকে কোনও মারধর করা হয়নি। পুলিশকে খবর দেওয়া হয়েছে এবং পুলিশের হাতেও তুলে দেওয়া হয়ছে।'