সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: পুরাণ কাহিনি অনুযায়ী, বালক অবস্থায় সূর্যকে গিলে নিয়েছিলেন হনুমান। তবে বাস্তবে খেলার ছলে একটি ৪ সেন্টিমিটারের ধাতব বস্তু গিলে নেয় হাওড়ার ১১ মাসের এক শিশু সোহান শীল। যা নিয়ে প্রাণসংশয় দেখা দিলেও, কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের চিকিৎসকদের তৎপরতায় প্রাণে বাঁচানো গিয়েছে তাকে। হাঁফ ছেড়ে বাঁচেন পরিবারের সদস্যরা। শিশুটি এখনও পুরোপুরি সুস্থ নয়, তবে বিপন্মুক্ত বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা। দিনে হাজারও রোগীর মাঝে শিশুটির প্রাণ বাঁচাতে পেরে খুশি চিকিৎসকরাও।
শুক্রবার রাতে হাওড়ার শিশুটি খেলতে গিয়ে শঙ্কু আকৃতির একটি ধাতব বস্তু গিলে ফেলে। গলা ও নাকের গাছে আটকে যায় সেই বস্তুটি। প্রবল শ্বাসকষ্ট শুরু হয় তার। অভিভাবকরা সেই শঙ্কু বস্তুটিকে দেখতে পেয়ে বের করারও চেষ্টা করেন। কিন্তু তাতে বিপত্তি আরও বাড়ে। টনসিলের অনেকাংশ ছিঁড়ে যায় তার। সেই অবস্থায় তাকে নিয়ে আসা হয় কলকাতা মেডিক্যাল (Kolkata Medical College) কলেজের জরুরি বিভাগে।
কর্তব্যরত চিকিৎসকরা প্রাথমিক চিকিৎসা করে হাসপাতালের ইএনটি (ENT) বিভাগে পাঠিয়ে দেন। সেই সময় ওই বিভাগে কর্তব্যরত ছিলেন চিকিৎসক অনিন্দ্য মিত্র। তিনি বিষয়টি দেখেই জটিলতা বুঝতে পারেন। ধাতব বস্তুটি ঠিক কোথায় আটকে রয়েছে তা জানতে প্রয়োজনীয় পরীক্ষা করতে বলেন। হাসপাতালের রেডিও ডায়াগনসিস বিভাগে শিশুটির পরীক্ষা হয়। সেখানে দেখা যায় গলা ও নাকের সংযোগস্থলে বস্তুটি আটকে রয়েছে।
ইএনটি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান দীপ্তাংশু মুখোপাধ্যায়ের নেতৃত্ব টিম গঠন করে সোহানের চিকিৎসা শুরু হয়। প্রথমে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় অ্যানাস্থেশিয়া করে চিকিৎসা হবে তার। তবে চিকিৎসকদের দাবি, সে এত বেশি ছটফট করছিল যে তাকে অ্যানাস্থেশিয়া দেওয়া যায়নি। শেষে ঘুমের ওষুধ দিয়ে অস্ত্রোপচার করা হয়। তবে সে ক্ষেত্রে চিকিৎসকদের কাছে বড় চ্যালেঞ্জ ছিল তার জ্ঞান ফিরিয়ে নিয়ে আসা। অবশেষে সেই যুদ্ধজয় করা গিয়েছে। শঙ্কু আকৃতির ধাতব বস্তুটি বার করতে সক্ষম হয়েছেন চিকিৎসকরা। বিপদ কেটে গেলেও এখন হাসপাতালেই রয়েছে সোহান।