অনলাইনে জঙ্গিদের সঙ্গে যোগাযোগ, র্যাবের পাঠানো সূত্রে গ্রেপ্তার হাবিবুল্লা
এই সময় | ২৪ জুন ২০২৪
এই সময়, বর্ধমান: পানাগড়ের মিরেপাড়ার বাসিন্দা কম্পিউটার সায়েন্সের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র মহম্মদ হাবিবুল্লা শেখের সঙ্গে কি বাংলাদেশের জঙ্গি নেতা সালাউদ্দিনের নিয়মিত যোগাযোগ ছিল? এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতেই এখন ব্যস্ত এসটিএফের গোয়েন্দারা।শনিবার হাবিবুল্লার গ্রেপ্তারি ছাড়াও বর্ধমান থানা এলাকার নবাবহাট থেকে এক নাবালক-সহ ৪ জনকে আটক করে নিয়ে যায় এসটিএফের একটি দল। ওই ৪ জন ১৯ নম্বর জাতীয় সড়ক ধরে বাসে কলকাতার দিক থেকে এসে নবাবহাটে দাঁড়িয়েছিল। তবে এই আটক সম্পর্কে জেলা পুলিশের কাছে কোনও তথ্য নেই বলে জানিয়েছেন পুলিশ সুপার আমনদীপ।
তিনি বলেন, ‘কাঁকসা এলাকা থেকে একজনকে এসটিএফ ধরেছে বলে সংবাদমাধ্যমে জেনেছি। আমাদের এলাকা থেকে কাউকে আটক করা হয়েছে বলে কিছু জানা নেই। এসটিএফ আমাদের কিছু জানায়নি।’ সূত্রের খবর, বাংলাদেশের র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটেলিয়ন বা আরএবি ও স্পেশাল টাস্ক ইউনিট বা এসটিইউ-এর সঙ্গে এই মুহূর্তে যোগাযোগ রাখছেন রাজ্য পুলিশের এসটিএফ কর্তারা। জঙ্গি কার্যকলাপ সম্পর্কে বেশ কিছু তথ্যও তাঁদের হাতে এসেছে।
চলতি বছরের ১৪ মে বাংলাদেশে নিষিদ্ধ আনসার-আল-ইসলাম থেকে নতুন মডিউল হিসেবে উত্থান হওয়া জঙ্গি সংগঠন শাহাদাত-এর দুই সক্রিয় সদস্য মহম্মদ আসাদুজ্জামান আসিফ ও মহম্মদ আহাদকে চট্টগ্রাম থেকে গ্রেপ্তার করেছিল র্যাব। তাদের থেকেই খোঁজ মিলেছিল কাঁকসার মহম্মদ হাবিবুল্লার। ধৃত দু’জনের কাছ থেকে পাওয়া ‘গোবরা’ নামে একটি অনলাইন গ্রুপের সন্ধানও পেয়েছিল র্যাব। মহম্মদ হাবিবুল্লার ল্যাপটপ থেকেও এই গোবরা গ্রুপের সন্ধান পেয়েছে এসটিএফ।
নিয়মিত এই গ্রুপের মাধ্যমে অনলাইন মিটিংও করা হতো। বাংলাদেশের জঙ্গি সংগঠন জামাতুল মুজাহিদিনের প্রাক্তন শীর্ষ নেতা সালাউদ্দিন ওরফে বড়ভাই শাহাদাত-এর প্রতিষ্ঠাতা বলে জানা গিয়েছে। গোয়েন্দারা জানাচ্ছেন, সম্প্রতি শাহাদাত-এর সদস্যদের কিছু দিনের জন্য সমস্ত যোগাযোগ বন্ধ রেখে গা ঢাকা দেওয়ার নির্দেশ অডিয়ো ক্লিপের মাধ্যমে দিয়েছিল ভারতে থাকা সালাউদ্দিন। সেই বার্তা পেয়েই শাহদাত-এর সদস্যরা নিষ্ক্রিয় হয়ে যায়।
মিরেপাড়ার হাবিবুল্লার দিকে গত ২০-২৫ দিন ধরে নজর রেখেছিলেন এসটিএফ কর্তারা। কয়েকদিন আগে হাবিবুল্লার মোবাইল থেকে একটি সন্দেহজনক ফোন যায় দক্ষিণ ভারতের একটি রাজ্যে। সেই ফোন ট্র্যাক করে বেশ কিছু তথ্য হাতে এসে যায় এসটিএফ কর্তাদের। হাবিবুল্লাকে জেরা করে বড়ভাই-এর হদিশ পেয়েছেন গোয়েন্দারা।
সেই বড়ভাইয়ের পরিচয় এখন নিশ্চিত করতে চাইছেন গোয়েন্দারা। এসটিএফের পুলিশ সুপার ইন্দ্রজিৎ বসু বলেন, ‘গ্রেপ্তারের পর আদালতের নির্দেশে হাবিবুল্লাকে ১৪ দিনের হেফাজতে নিয়েছি। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে বাকি তথ্য জানার চেষ্টা করা হবে। তদন্তের স্বার্থে এর বেশি বলা সম্ভব নয়।’