• সভায় কুমিরছানাদের ভিড়? উত্তর খুঁজছে গেরুয়া শিবির
    এই সময় | ২৪ জুন ২০২৪
  • মণিপুস্পক সেনগুপ্ত, এই সময়

    লোকসভা ভোটের প্রচারে বাংলায় ২৩টি জনসভা করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। খুব একটা পিছিয়ে নেই কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহও। তিনিও এ রাজ্যে ২০টি জনসভা করে গিয়েছেন। তাঁরা সশরীরে হাজির হয়ে পদ্ম প্রার্থীর সমর্থনে ভোট চেয়েছেন, এমন অনেক কেন্দ্রেই বিজেপির ভরাডুবি হয়েছে। অথচ সভাগুলিতে ভিড় ছিল যথেষ্ট। সভায় হাজির বিজেপি কর্মী-সমর্থকদের জোশও ছিল তুঙ্গে।সভা শেষে সভাস্থলের ভিড়ের ছবি নিজেদের সোশ্যাল মিডিয়া হ্যান্ডেলে পোস্টও করেছিলেন মোদী-শাহরা। তবে ইভিএমে সেই ‘ভিড়’-এর কোনও প্রতিফলন দেখা গেল না কেন? এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে গিয়ে বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্বর কপালের ভাঁজ আরও চওড়া হয়েছে। তাঁরা জানতে পেরেছেন, কুমির ছানার মতো একই লোককে বিভিন্ন জেলায় ঘুরিয়ে মোদী-শাহের সভায় ভিড় বাড়ানো হয়েছে।

    সংশ্লিষ্ট এলাকার স্থানীয় বিজেপি কর্মী-সমর্থকরা আদৌ মোদী-শাহের সভায় যাচ্ছেন কি না, সেটা না দেখেই দক্ষিণবঙ্গের নির্দিষ্ট কিছু জেলার কর্মীদেরই ঘুরিয়ে-ফিরিয়ে হাজির করানো হয়েছে বিজেপির শীর্ষ কেন্দ্রীয় নেতাদের সভাগুলিতে। সে কারণেই, মোদী-শাহ ছাড়া বিজেপির বাকি কেন্দ্রীয় নেতাদের সভাস্থল ফাঁকা থাকত বলেই গেরুয়া শিবিরেরই একাংশের দাবি।

    বিজেপির এক রাজ্য নেতার কথায়, ‘উত্তর ২৪ পরগনার হাবরায় যখন প্রধানমন্ত্রী সভা করতে গেলেন, তখন মাঠে কার্যত কোনও জায়গা ছিল না। অথচ তাঁর সপ্তাখানেক আগে পাশ্ববর্তী এলাকায় জগৎপ্রকাশ নাড্ডার সভা বাতিল করতে হয়েছে পর্যাপ্ত ভিড় না হওয়ার কারণে।’ তাঁর যুক্তি, ‘নাড্ডাজির সভার থেকে মোদীজির সভায় ভিড় বেশি হবে এটাই স্বাভাবিক। তবে আকাশ-জমিন পার্থক্য কিছুতেই হতে পারে না।’

    বিজেপি সূত্রে খবর, মেদিনীপুর, ঝাড়গ্রাম, পুরুলিয়া, আসানসোল এবং বাঁকুড়ায় মোদী-শাহদের সভাগুলিতে প্রচুর সংখ্যায় বিজেপি কর্মী-সমর্থকরা ভিড় করেছিলেন পূর্ব মেদিনীপুর জেলা থেকে। অন্যদিকে, দুই ২৪ পরগনা, কলকাতা এবং পাশ্ববর্তী এলাকায় নরেন্দ্র মোদীর কর্মসূচিগুলিতে মূলত ভিড় জমিয়েছিলেন বনগাঁ ও রানাঘাটের পদ্ম-কর্মীরা।

    নির্বাচনী ফলাফলের প্রাথমিক পর্যালোচনায় বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব মনে করছেন, নড়বড়ে সংগঠনের বেহাল দশা মোদীদের নজর থেকে আড়াল করতেই তুলনায় সাংগঠনিকভাবে শক্তিশালী জেলাগুলি থেকে কর্মী-সমর্থকদের নিয়ে আসা হয়েছিল। বিজেপির এক বর্ষীয়ান নেতার কথায়, ‘প্রতিটি সভায় উপচে পড়া ভিড় দেখেই হয়তো বাংলা থেকে ৩০-৩৫টি জেতার স্বপ্ন দেখেছিলেন অমিত শাহরা। তবে তাঁরা ঘুণাক্ষরেও আঁচ করতে পারেননি, ভিড় বলে তাঁদের সামনে যেটা প্রজেক্ট করা হচ্ছে, তার সিংহভাগই গোঁজামিল।’
  • Link to this news (এই সময়)