এ দিন দুপুরে শুভেন্দু বর্ধমানে দলীয় কার্যালয়ে এসে ‘ঘরছাড়া’দের সঙ্গে কথা বলেন। বিজেপি সূত্রে জানা যায়, বর্ধমান শহরে ও সংলগ্ন এলাকাতেই বিজেপির দলীয় কর্মীরা বেশি আক্রান্ত হয়েছেন। ভোট পরবর্তী হিংসার শিকার হয়ে ‘ঘরছাড়া’ তাঁদের অনেকেই। বর্তমানে রায়নগরে থাকা এক মহিলা কর্মীর অভিযোগ, “আমাদের বাড়ি বিজয়রামে। ২০২১ সালে ভোট পরবর্তী সন্ত্রাসের জেরে বাড়ি ছেড়ে রায়নগরে আশ্রয় নিয়েছিলাম। এ বারও সপরিবার ঘর ছেড়েছি। ছেলেমেয়েদের পড়াটুকুও হচ্ছে না।” বিজেপির অভিযোগ, শহরে কারও দোকান ভেঙে দেওয়া হয়েছে, কারও কাজ কেড়ে নেওয়া হয়েছে। কী ভাবে সংসার চলবে, দলনেতার কাছে সেই প্রশ্ন তোলেন তাঁরা। গত সপ্তাহে প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি তথা এ বারের লোকসভা ভোটে বর্ধমান-দুর্গাপুর কেন্দ্রের প্রার্থী দিলীপ ঘোষও ঘরছাড়াদের সঙ্গে দেখা করতে এসেছিলেন।
বিরোধী দলনেতার দাবি, দলীয় কার্যালয়ে ৬০ জন রয়েছেন। আত্মীয়-স্বজনদের বাড়িতে রয়েছেন আরও ১৪ জন। তিনি বলেন, “বুথস্তরের কর্মীদের আগলানোর গুরুদায়িত্ব পালন করব। জেলাস্তরে তাঁদের উপরে নজরদারি তো থাকবেই, আমি নিজেও খোঁজখবর রাখব।” বিজেপির দাবি, ঘরছাড়ারাই শুভেন্দুকে জানান, স্থায়ী কর্মচারী হওয়ার পরেও বর্ধমান শহর, বর্ধমান উত্তর ও গলসি এলাকার চালকল মালিকেরা তাঁদের আপাতত কাজে আসতে নিষেধ করেছেন। বিজেপি করার জন্যই ভাতে মারার চেষ্টা করা হচ্ছে, অভিযোগ তাঁদের।
শুভেন্দু বলেন, “আমরা প্রথমে জেলা চালকল সমিতিকে বিষয়টি জানিয়ে সুরাহার জন্য বলব। তাতে কাজ না হলে আইনের পথে আমাদের যেতেই হবে।” বিজেপির জেলা সভাপতি (বর্ধমান সদর) অভিজিৎ তায়ের দাবি, “অন্তত ৮-১০ জন এমন অমানবিক ঘটনার শিকার হয়েছেন। আমরা তাঁদের পাশে রয়েছি।” বর্ধমান রাইসমিল অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি আব্দুল মালেকের যদিও দাবি, ‘‘এই ধরনের অভিযোগের কথা শুনিনি, জানাও নেই। আমাদের এ নিয়ে কোনও চিঠি দিলে নিশ্চিত ভাবে খোঁজ নেব।”
রাজ্যের অধিকাংশ পুরসভায় বিজেপি ‘এগিয়ে’ রয়েছে। সেই কারণে লোকসভা ভোটের পরে তৃণমূল আগের তুলনায় ‘নরম’ কি না, সেই প্রশ্ন ওঠে এ দিন। শুভেন্দুর জবাব, “সেটাই যদি হত, তাহলে দলীয় কার্যালয়ে এত লোক থাকত না।’’
বর্ধমানের পুর-সদস্য, জেলা যুব সভাপতি রাসবিহারী হালদার বলেন, “বিজেপিই ঘরছাড়াদের আটকে রাখছে। ঘরছাড়াদের নিয়ে দিলীপ আর শুভেন্দুর মধ্যে রাজনীতি হচ্ছে। আমরা তো বলেই দিয়েছি, একদম নির্দিষ্ট করে নাম-ঠিকানা দিয়ে আমাদের জানালে সবাইকে বাড়ি ফেরানোর ব্যবস্থা করে দেব। বিজেপি করে বলে কারও কাজ গিয়েছে, সেটাও ঠিক নয়।”