প্রাথমিক ভাবে সিউড়ির সার্কিট হাউস সংলগ্ন সেচ কলোনির প্রাচীরে রং-তুলির ছোঁয়ায় ফুটিয়ে তোলা হচ্ছে বেনারসের সন্ধ্যা আরতি, জঙ্গলের প্রেক্ষাপটে সাঁওতাল দম্পতির অবয়ব কিংবা কোনও নৈসর্গিক দৃশ্য। কয়েক জন শিল্পী দিনভর এই কাজ করে চলেছেন। এক দিকে চলছে ছবিগুলিতে রং করার কাজ, অন্য দিকে, পাশের ফাঁকা দেওয়ালে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের অবয়ব, আদিবাসী নৃত্যরত একঝাঁক পুরুষ ও মহিলার ছবি আঁকার কাজও চলছে। সিউড়ি শহরের বিজ্ঞাপনে ঢাকা দেওয়ালে হঠাৎ এমন মনোমুগ্ধকর ছবি দেখে অবাক হচ্ছেন অনেকেই। একই সঙ্গে শহরের অন্য দেওয়াল, যেগুলি নোংরা হয়ে গিয়েছে বা বিজ্ঞাপন বা পোস্টারে কার্যত ঢেকে দিয়েছে, সেগুলিকেই পরিষ্কার করার দাবি জানিয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।
শহরের এই সৌন্দর্যায়নের কাজের মূল দায়িত্বে রয়েছেন বিশ্বভারতীর কলাভবনের প্রাক্তন ছাত্র অর্ণব ভট্টাচার্য। সিউড়ির সোনাতোড় পাড়ার বাসিন্দা অর্ণব জানান, তাঁর সঙ্গেই এই কাজে হাত লাগিয়েছেন সত্যজিৎ বাল্মিকী, গণেশ আহীর, পলাশ দাস, লাল্টু কাহার প্রমুখ। আগামী দিনে বোলপুর ও কলকাতা থেকে আরও কয়েক জন শিল্পীরও আসার কথা রয়েছে। অর্ণব বলেন, “আমিই এই কাজটির পুরো দায়িত্ব নিয়েছি। শহরের মোট কত দেওয়ালে ছবির কাজ হবে, তা এখনও স্পষ্ট করে আমাদের জানানো হয়নি, তবে পুরসভার তরফ থেকে কাজ চালিয়ে যেতে বলা হয়েছে। আশা করছি, গোটা শহর জুড়েই আমরা এই কাজ করতে পারব।”
সিউড়ির পুরপ্রধান উজ্জ্বল চট্টোপাধ্যায় বলেন, “আমাদের লক্ষ্য শহর জুড়ে অন্তত ৩০০টি দেওয়ালে ছবি আঁকানোর। সিউড়ি শহরকে সাজানো সিউড়ি পুরসভার অন্যতম লক্ষ্য। কলকাতা তথা দেশের বিভিন্ন স্থানে এমন দেওয়াল চিত্র দেখতে পাওয়া যায়, তবে সিউড়িতে তেমন কিছু ছিল না। সিউড়ি তথা বীরভূম জেলার নানা গর্বের বিষয় উঠে আসবে এই ছবিগুলিতে। একই সঙ্গে ভারতীয় সংস্কৃতিরও ছোঁয়া থাকবে ছবিতে।” তিনি জানান, প্রতি স্কোয়ার ফুট ছবিতে ৮০ টাকা করে খরচ পড়ছে। বিভিন্ন ফান্ড থেকে ব্যবস্থা করে এই সৌন্দর্যায়নের কাজ শেষ করতে পারা যাবে বলে আশাবাদী পুরপ্রধান।