• তক্ষকদের কী হল হলংয়ে, চিন্তা
    আনন্দবাজার | ২৪ জুন ২০২৪
  • কাঠের ঘরের আনাচে-কানাচে বাস ছিল তাদের। বাস ছিল কাঠের দেওয়ালের আঁটা ফোটো ফ্রেমের পিছনেও। পর্যটকেরা বেড়াতে এসে হামেশাই দেখা পেতেন তাদের। কিন্তু বিধ্বংসী অগ্নিকাণ্ডে জলদাপাড়ার হলং বনবাংলো পুড়ে ছাই হয়ে যাওয়ার পরে, সেখানকার ‘বাসিন্দা’ তক্ষকদের কী হল, তা নিয়ে উদ্বিগ্ন পর্যটক থেকে পরিবেশপ্রেমীদের অনেকেই। উদ্বেগ বেড়েছে অগ্নিকাণ্ডে ওই এলাকার বন্যপ্রাণীদের উপরে পড়া প্রভাব নিয়েও। সূত্রের খবর, গত মঙ্গলবারের অগ্নিকাণ্ডের পর ওই বনবাংলো থেকে কিছু দূরে যে ‘সল্ট পিট’ রয়েছে, সেখানে নুন খেতে আসা বন্যপ্রাণীদের সংখ্যা কিছুটা কমেছে।

    যদিও রাজ্যের স্বাধীন দায়িত্বপ্রাপ্ত বন প্রতিমন্ত্রী বিরবাহা হাঁসদা রবিবার বলেন, ‘‘অগ্নিকাণ্ডের ঘটনার পরে হয়তো ভয় পেয়েই প্রথম দু’দিন সল্ট পিটে বন্যপ্রাণীরা আসা বন্ধ করে দিয়েছিল বলে আমিও শুনেছি। তার পরে আবার সেখানে তারা আসতে শুরু করেছে বলেও আমায় দফতর থেকে বলা হয়েছে। আমি নিজেও শনিবার সেখানে কয়েকটা বন্যপ্রাণী দেখেছি।’’ এ নিয়ে রাজ্যের প্রধান মুখ্য বনপাল (বন্যপ্রাণ) দেবল রায় বলেন, “অগ্নিকাণ্ডের জেরে সল্ট পিটে বন্যপ্রাণীদের আসা যদি কমও হয়ে থাকে, তবে সেটা দীর্ঘস্থায়ী হবে না। কারণ, বন্যপ্রাণীরা অগ্নিকাণ্ড দেখতে অভ্যস্ত।”

    গত মঙ্গলবার বিধ্বংসী অগ্নিকাণ্ডে পুড়ে ছাই হয়ে যায় জলদাপাড়ার হলং বনবাংলো। বিভিন্ন বন্যজন্তু ও পাখিদের সান্নিধ্য উপভোগ করতে দেশ-বিদেশের পর্যটকদের কাছে অত্যন্ত প্রিয় ছিল এই বনবাংলো। ফলে এমন একটি বনবাংলো পুড়ে যাওয়ায় মন খারাপ পর্যটন মহলেরও। কিন্তু এই বনবাংলোয় অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় বন্যপ্রাণীদের, বিশেষ করে হলং বনবাংলোয় বাস করা তক্ষকদের নিয়ে চিন্তায় পরিবেশকর্মীরা। পরিবেশপ্রেমী সংগঠন সংগঠন ন্যাফ-এর কো-অর্ডিনেটর অনিমেষ বসু বলেন, “একটা সময় হলং বনবাংলোয় তক্ষকের পাশাপাশি প্রচুর চামচিকে ছিল। কিন্তু বাংলোটিকে নতুন করে সাজিয়ে তোলা কিংবা সেখানে শীততাপনিয়ন্ত্রিত যন্ত্র বসানোর পরে আর চামচিকে দেখিনি। তবে চামচিকে আর না দেখলেও, ওই বনবাংলোর কাঠের দেওয়ালের আনাচে কানাচে অন্তত দু’ধরনের তক্ষক দেখেছি। যার মধ্যে বিরল প্রজাতিরও দেখেছি। এত বড় অগ্নিকাণ্ডের ঘটনার পর সেই তক্ষকদের পরিণতি কী হল, সেটা অবশ্যই দেখা উচিত।”

    বিষয়টি নিয়ে জলদাপাড়ার বনকর্তা কোনও মন্তব্য করতে চাননি। রাজ্যের প্রধান মুখ্য বনপাল (বন্যপ্রাণ) বলেন, “বনবাংলোটি পুরো ছাই হয়ে যাওয়ায় সেখানে থাকা তক্ষকদের নিয়ে এখনই কিছু বলা সম্ভব নয়।” তবে রাজ্যের বন প্রতিমন্ত্রী জানান, বিষয়টি বন দফতর খোঁজ নিয়ে দেখছে।

  • Link to this news (আনন্দবাজার)