রেলেরই একাংশের দাবি, রেলের নিরাপত্তা সংক্রান্ত যে ‘সেফটি মিটিং’ ১৫ দিন অন্তর হওয়ার কথা, তা অনেক সময় এক মাস অন্তরও হয় না। ওই বৈঠক এ মাসে হয়ইনি। পাশাপাশি, গুরুতর আরও একটি অভিযোগ উঠছে। সিনিয়র ডিভিশনাল সেফটি অফিসারের বিভাগ থেকে রেলের আধিকারিকদের দিয়ে কর্মীদের যে নিয়মিত ‘কাউন্সেলিং’ করার কথা, তাও দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ বলে অভিযোগ। রেলের একটি সূত্রে জানা গিয়েছে, গত ১৭ জুন কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেসের দুর্ঘটনার পরে তদন্ত করতে এসে বিষয়টি নজরে পড়ে রেলওয়ে সেফটি কমিশনার জনককুমারের। তদন্তের প্রাথমিক কাজ শেষ করে শনিবার রাতেই ফিরে যান তিনি। তবে যাওয়ার আগে নিরাপত্তা সংক্রান্ত ওই দু’টি বিষয় নিয়ে ডিভিশনাল সেফটি অফিসারকে কড়া ভাবে সতর্ক করেন তিনি। তার পরেই রবিবার সকালে তড়িঘড়ি ‘সেফটি মিটিং’ ডাকা হয় এনজেপি স্টেশনের ন্যারো গেজ প্ল্যাটফর্মের ওয়েটিং রুমে। এ দিন সন্ধ্যা থেকে ফের কর্মীদের ‘কাউন্সেলিং’ও শুরু করেছেন রেলের সংশ্লিষ্ট আধিকারিকেরা।
রেলের আধিকারিকদের একাংশই এ দিন জানান, ডিউটির সময় যে কোনও প্রতিকূল পরিস্থিতি কী ভাবে সামলাতে হয় সে ব্যাপারেই কর্মীদের সচেতন করা হয় কাউন্সেলিংয়ে। প্রশ্ন উঠেছে, তা হলে রেলের কর্মী ও যাত্রীদের নিরাপত্তায় কেন এই ঢিলেঢালা মনোভাব? এ ব্যাপারে প্রকাশ্যে মুখ না খুললেও, এ ধরনের অবহেলা বা উদাসীনতা কাম্য নয় বলেই রেলের আধিকারিকদের একাংশ মনে করছেন। যে মালগাড়িটি ধাক্কা মেরেছিল কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেসে, সেটির চালক এবং গার্ডের কাছে ‘ওয়াকিটকি’ ছিল না বলে সেফটি কমিশনার জানতে পেরেছেন। উত্তরপূর্ব সীমান্ত রেলের জনসংযোগ আধিকারিক সব্যসাচী দে এ দিন বলেন, ‘‘সেফটি বৈঠক নিয়মিত হয় বলেই জানি। কাউন্সেলিংও করা হয়।’’ তবে রেলওয়ে সেফটি কমিশনার কী বলেছেন, সেটা তাঁর জানা নেই বলেই জানিয়েছেন ওই আধিকারিক।
এ দিকে, কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেসকে যে মালগাড়িটি ধাক্কা মেরেছিল, তার সহকারী লোকো পাইলট মনু কুমার এখনও নার্সিংহোমে চিকিৎসাধীন। রেলওয়ে সেফটি কমিশনার তাঁর সঙ্গে এবং তার পরিবারের সঙ্গে কথা বলতে চেয়েছিলেন বলে খবর। তবে সেটা সম্ভব হয়নি বলেই জানা গিয়েছে। ফলে তদন্তের কাজ অসম্পূর্ণ থেকে গেল বলেই মনে করছেন রেলের আধিকারিকদের একাংশ। মনু কুমারের শারীরিক পরিস্থিতি ঠিক থাকলেও মানসিক ভাবে তিনি বিপর্যস্ত বলে চিকিৎসকেরা জানিয়েছিলেন। সে কারণেই তাঁর সঙ্গে কথা বলা যায়নি বলেই মনে করা হচ্ছে।