• হিমাচল, লাদাখের জোড়া শৃঙ্গে অভিযানে বাঙালিরা
    আনন্দবাজার | ২৪ জুন ২০২৪
  • ভোট-পর্বের রেশ কাটতে না কাটতেই শুরু হয়ে গিয়েছে শৃঙ্গাভিযানের মরশুম। ভারতীয় হিমালয়ে একাধিক অভিযান চালাতে এ রাজ্যের পর্বতারোহীদের কেউ প্রস্তুতি নিচ্ছেন, কেউ ইতিমধ্যেই ময়দানে নেমে পড়েছেন। হিমাচলের ইন্দ্রাসন শৃঙ্গ (৬২২১ মিটার) ও পড়শী দেওটিব্বা (৬০০১ মিটার) শৃঙ্গে অভিযান চালাতে ইতিমধ্যেই হাইক্যাম্পে পৌঁছে গিয়েছে দু’টি অভিযাত্রী দল। যাদের নেতৃত্ব দিচ্ছেন এভারেস্টজয়ী পর্বতারোহী মলয় মুখোপাধ্যায় এবং দেবাশিস বিশ্বাস। পর্বতারোহী রমেশ রায়ের নেতৃত্বে আগামী মাসে লাদাখ যাচ্ছে আরও একটি দল। তাঁদের নজরেও রয়েছে জোড়া শৃঙ্গ— জ়াসকার রেঞ্জের কুন (৭০৭৭ মিটার) ও তার পড়শী পিনাক্‌ল (৬৯৩০ মিটার)।

    হিমাচলের পীর পঞ্জাল হিমালয়ের সবচেয়ে কঠিন শৃঙ্গ ইন্দ্রাসন বরাবরই পর্বতারোহীদের পছন্দের। সেখানে বিপজ্জনক পথ, ভাঙাচোরা আইসফলের বাধা টপকে পৌঁছতে হয় শীর্ষে। সেই লক্ষ্যে গত মাসেই হাওড়ার পর্বতারোহণ ক্লাবের ১২ জনের দলকে নিয়ে হিমাচলে রওনা দেন মলয়। তাদের পরে পরেই একই শৃঙ্গে অভিযান চালানোর কথা দেবাশিস ও তাঁর ১১ জন সঙ্গীরও। ইতিমধ্যেই তাঁরা ইন্দ্রাসনের বেসক্যাম্প থেকে উপরের ক্যাম্পে উঠে গিয়েছেন। জানা গিয়েছে, গত ১৫ জুন সকালে মলয়-সহ ওই দলের ৯ জন সদস্য দেওটিব্বার শীর্ষে পৌঁছেছেন। পরবর্তী লক্ষ্য ইন্দ্রাসন।

    কেন ইন্দ্রাসন? বেসক্যাম্পের পথে দেবাশিস বলেন, ‘‘মলয়ের ক্লাবের সাত হাজারি ইন্দ্রাসনকেই পছন্দ ছিল। আর ২০০৭ সালের পরে আমারও ভারতীয় হিমালয়ে যাওয়া হয়নি। তাই মলয়দের পিছনে পিছনে আমিও বেরিয়ে পড়েছি।’’ ২০২২ সালে সোনারপুরের এক দল আরোহী ইন্দ্রাসন জয় করেছিলেন। তাঁদের দেওয়া রিপোর্ট, ছবি ও ভিডিয়ো এই অভিযানের প্রস্তুতিতে কাজে লেগেছে বলেই জানাচ্ছেন দেবাশিস। তাঁর কথায়, ‘‘ওদের ভিডিয়ো দেখে পরিকল্পনা করতে সুবিধা হয়েছে। তাতে খারাপ আবহাওয়া হলে প্ল্যান বি ছকে রেখেছি। তবে ইন্দ্রাসন কখনওই সহজ নয়।’’

    অন্য দিকে, লাদাখের গ্রেটার হিমালয়ের জ়াসকার রেঞ্জের দ্বিতীয় উচ্চতম (কুন) এবং তৃতীয় উচ্চতম (পিনাক্‌ল) শৃঙ্গে জোড়া অভিযান চালাবেন দমদমের একটি ক্লাবের আরোহীরা। তাঁদের নেতৃত্বে এভারেস্ট ও কাঞ্চনজঙ্ঘাজয়ী রমেশ। ১৯১৩ সালে ইতালীয় দল প্রথম কুন শৃঙ্গের শীর্ষে পৌঁছেছিল। তার পরে বহু ভারতীয় দল এই শৃঙ্গে অভিযান চালালেও পিনাক্‌ল আজও ভারতীয়দের কাছে অধরা। রমেশ বলছেন, ‘‘বহু বছর আগে বিদেশি একটি দল পিনাক্‌লের শীর্ষে পৌঁছলেও তাদের রিপোর্ট বা ছবি মেলেনি। কুন কঠিন হলেও পিনাক্‌লের চ্যালেঞ্জ আরও বেশি। খাড়াই পথ, বরফের ফাটল (ক্রিভাস) ছাড়াও পুরোপুরি অজানা পথ। পদে পদে অ্যাডভেঞ্চার।’’

    ২০১৯ সালে কাঞ্জনজঙ্ঘা অভিযানে তুষারক্ষত নিয়ে ফেরার পরে আর সে ভাবে পাহাড়ি পথে এগোনো হয়নি রমেশের। তাই এ বারের অভিযান কী আরও বেশি কঠিন হবে? রমেশ বলছেন, ‘‘পুরুলিয়ার পাহাড়ে স্নোবুট পরে, জ়ুমারিং করে দেখেছি। খুব একটা অসুবিধা হচ্ছে না। নিজের প্রতি বিশ্বাস আছে।’’ আগামী ৪ জুলাই রওনা দেবেন রমেশরা। ৬ শেরপাকে নিয়ে জম্মু-কার্গিল-সফৎনালা হয়ে কুনের বেসক্যাম্পে পৌঁছবেন তাঁরা। অভিযানের খরচ প্রায় ১৪ লক্ষ।

  • Link to this news (আনন্দবাজার)