‘বিধাননগরে সুজিত বোস লোক বসাচ্ছে’, দলের হেভিওয়েটদের তীব্র ভর্ৎসনা মমতার
প্রতিদিন | ২৪ জুন ২০২৪
নব্যেন্দু হাজরা: পুর পরিষেবা নিয়ে নবান্নের বৈঠকে তীব্র ক্ষোভপ্রকাশ করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। তাঁর টার্গেটে একাধিক পুরসভার চেয়ারম্যানরা। বাদ গেলেন না মন্ত্রীরাও। বিধাননগর পুরনিগমে ইচ্ছমতো লোক বসানো হচ্ছে, সরাসরি এই অভিযোগ তুললেন সুজিত বসুর (Sujit Bose) বিরুদ্ধে। বললেন, ”যেখান সেখান থেকে লোক এনে পুরসভায় কাজ দিচ্ছে। যেখানে সেখানে দোকান বসে যাচ্ছে অনুমতি ছাড়া।” পুর পরিষেবা নিয়ে বিরক্ত মুখ্যমন্ত্রীর প্রশ্ন, ”এবার কি আমাকে রাস্তায় ঝাঁটা দিতে হবে?” সাফ জানিয়ে দিলেন, “আমি স্থানীয়দের হাত থেকে টেন্ডারটা তুলে নিচ্ছি আজ থেকে। কোনও টেন্ডার আমি লোকালি করতে দেব না। সব কেন্দ্রীয়ভাবে হবে। তাদের হাতেই তথ্য থাকবে। কমিটি করে দিচ্ছি আমি। মুখ্যসচিব, স্বরাষ্ট্রসচিব, ভূমি, অর্থ, সেচ দপ্তরের সচিবরা থাকবেন। সঙ্গে পুলিশ কমিশনার, ডিজি ও এডিজি (আইনশৃঙ্খলা) থাকবেন। কোনও কিছু হলে আমি তাঁদের ধরব।”আলাদা করে কোনও টেন্ডার হবে না, সমস্ত টেন্ডার কেন্দ্রীয়ভাবে। তার জন্য পোর্টাল খোলা হবে। পাশাপাশি একাধিক দপ্তরের সচিবদের নিয়ে কমিটি গড়া হবে।
সরকারি জমি দখল নিয়ে বেশ কয়েকদিন ধরেই ক্ষুব্ধ মুখ্যমন্ত্রী। বিভিন্ন জায়গায় সরকারি প্রকল্পের জন্য বরাদ্দ জমি দখল হয়ে যাচ্ছে বলে অভিযোগ কানে আসছিল তাঁর। সেসব খতিয়ে দেখতেই সোমবার রাজ্যের সমস্ত পুর প্রতিনিধিদের নবান্নে (Nabanna) বৈঠকে ডেকেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ডাকা হয়েছিল পুরসভাগুলির সঙ্গে যুক্ত চার মন্ত্রীকেও। আর লাইভ বৈঠকে হেভিওয়েট মন্ত্রী থেকে আমলা ? কেউ বাদ গেলেন না মমতার ভর্ৎসনা থেকে।
বিধাননগর (Bidhannagar) পুরনিগমে নিয়োগ নিয়ে সুজিত বসুর বিরুদ্ধে সরাসরি অভিযোগ তুললেন মুখ্যমন্ত্রী। প্রশ্ন তুললেন, কেন যখন-তখন অস্থায়ী কর্মী নিয়োগ করা হচ্ছে? পাশাপাশি তাঁর তিরস্কারের মুখে পড়তে হল শিলিগুড়ি পুরনিগমের মেয়র গৌতম দেবকেও। শিলিগুড়িতে (Siliguri) সম্প্রতি জল সমস্যা নিয়ে তাঁকে দাঁড় করিয়ে যথেষ্ট ক্ষোভ প্রকাশ করলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পাশাপাশি ডাবগ্রাম-ফুলবাড়ি এলাকায় ‘জমি মাফিয়া’দের বাড়বাড়ন্তের অভিযোগ তুললেন। স্পষ্ট বললেন, ”গৌতম, তুমি তোমার দায় অস্বীকার করতে পারো না।” কাজ না হলেই এবার থেকে শাস্তির কোপে পড়তে হবে, চূড়ান্ত হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তিনি।
কোচবিহারের নেতা রবীন্দ্রনাথ ঘোষের উদ্দেশেও কটূ বাক্য বললেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কেন নিজের সিদ্ধান্তে হঠাৎ পুরসভার কর বাড়িয়ে দেওয়া হল? সেই প্রশ্ন তুলেছেন। রাজ্যের উত্তর থেকে দক্ষিণ সমস্ত পুরসভাকেই কমবেশি মুখ্যমন্ত্রীর কড়া কথা শুনতে হয়েছে। শেষে অবশ্য তাঁর বক্তব্য, আলাদা করে কাউকে তিরস্কার করা উদ্দেশ্য নয়। বরং ভালো পরিষেবার জন্যই এসব বলা। তিনি আশাপ্রকাশ করেছেন, এর পর থেকে সকলে সতর্ক হয়ে স্বচ্ছতার সঙ্গে কাজ করবেন।