বারাসতে নাবালক খুন ও ঘটনা পরবর্তী বাচ্চাচুরি গুজবের পর্দাফাঁস ইতিমধ্যেই করেছে পুলিশ। এবার ধৃত আঞ্জিব নবিকে নিয়ে ঘটনার পুনর্নির্মাণ করা হল। ঘটনার পুনর্নির্মাণ করতে সোমবার বারাসাত থানার পুলিশ আঞ্জিব নবিকে নিয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছয়। ১১ বছরের ওই শিশুকে প্রতিহিংসার বশে খুন করে কীভাবে প্রতিবেশীর বাড়ির বাথরুমে ঝুলিয়ে দিয়েছিল, তা পুনর্নির্মাণ করে দেখায় অঞ্জিব। ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার, এসডিপিও ও বারাসাত এবং মধ্যমগ্রাম থানার আধিকারিকরা। তাঁদের সামনেই গোটা ঘটনার পুননির্মাণ করে দেখায় নিহত শিশুর জেঠু।অভিযুক্তকে নিয়ে পুলিশ এদিন এলাকায় পৌঁছতেই ভিড় জমায় উৎসাহী জনতা। পুলিশ ইতিমধ্যেই জানিয়েছে পারিবারিক একটি সম্পত্তি নিয়ে বিবাদ এবং তাল বিক্রির টাকা নিয়ে বচসার জেরে ওই নাবালককে খুন করেছে আঞ্জিব। আর খুনের পর পুলিশকে ভুল পথে পরিচালনা করতে ও নিজেকে সন্দেহের তালিকার বাইরে রাখতে শিশুচুরির গুজব ছড়ায় সে। এমনকী ধর্মীয় স্থানকে কেন্দ্র করে মানুষকে উস্কানিও দেয় আঞ্জিব। সেক্ষেত্রে এদিন অভিযুক্তকে নিয়ে ঘটনার পুনর্নির্মাণ করে শিশুচুরির গুজবে পুলিশ পুরোপুরি জল ঢেলে দিল বলেই মনে করা হচ্ছে। যদিও বারাসত পুলিশ জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জানাচ্ছেন, আরও বেশ কিছুদিন বিভিন্ন থানা এলাকায় সচেতনতামূলক প্রচার ও মাইকিং চলবে। পুলিশ সূত্রে খবর, রবিবারে পর থেকে এখনও পর্যন্ত আর বাচ্চাচুরির গুজবকে কেন্দ্র করে কোনওরকম উত্তেজনা সৃষ্টি হয়নি।
প্রসঙ্গত, কিছুদিন আগে বারাসতের কাজিপাড়ায় একটি নাবালকের দেহ উদ্ধার হয়। সেই ঘটনাকে ঘিরে ব্যাপক উত্তেজনা ছড়ায় গোটা এলাকায়। আর তারপরেই এলাকায় ছড়ায় শিশুচুরির গুজব। ঘটে যায় একাধিক গণপ্রহারের ঘটনা। এই বিষয়ে রবিবার বারাসত পুলিশ জেলার এসপি প্রতীক্ষা ঝাড়খাড়িয়া জানান, আঞ্জিব নবি ধর্মীয় স্থানকে ব্যবহার করে পুলিশ ও যাঁরা বাইরে থেকে আসছেন তাঁদের সবাইকে আক্রমণ করার জন্য উস্কানি দিত। আর সেই কথা অভিযুক্ত স্বীকার করেছে। খুনের বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার জন্য গুজব ছড়ানোর যাবতীয় প্ল্যানও ওই ব্যক্তিই করেছে।
পুলিশ সুপার আরও জানান, আঞ্জিবের উপরে প্রথমে পুলিশের সন্দেহ ছিল না। কিন্তু যখনই পুলিশ ওই এলাকায় ঢুকতে যেত আঞ্জিব চলে আসত। এমনকী পুলিশের স্পেশ্যাল টিমের সঙ্গেও সে ঢুকে যেতে চাইত। আর আঞ্জিবের এই সমস্ত আচরণ দেখেই সন্দেহ তৈরি হয় পুলিশের। পরবর্তীতে তাকে গ্রেফতার করে লাগাতার জিজ্ঞাসাবাদ করতেই উঠে আসে আসল সত্য।