সিমলন গ্রামের এই স্কুলে ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা ১৯০ জন। রয়েছেন পাঁচ শিক্ষক। প্রধান শিক্ষকের পদটি ফাঁকা রয়েছে দীর্ঘ দিন। অচিন্ত্য মল্লিক নামে এক শিক্ষক ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব সামলাচ্ছেন। সম্প্রতি কালনা উত্তর চক্রের ৪৭টি স্কুলে প্রধান শিক্ষকদের কাউন্সেলিং পর্ব শেষ হয়। তাতে এই স্কুলে প্রধান শিক্ষকের পদ বেছে নেন শ্যামল মাঝি। তিনি যে স্কুলে এতদিন শিক্ষকতা করছিলেন সেখান থেকে অব্যহতি নিয়ে শুক্রবার সিমলন গ্রামের স্কুলটিতে প্রধান শিক্ষক হিসাবে কাজে যোগ দিতে আসেন। কিন্তু স্কুলে ঢোকার সময় থেকেই বিশৃঙ্খলা তৈরি হয়। ছাত্রছাত্রী ও অভিভাবকদের একাংশ জানিয়ে দেন, ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক দীর্ঘ দিন ধরে ভাল ভাবে স্কুলটি চালাচ্ছেন। তাঁর সময়ে পড়ুয়ার সংখ্যা বেড়েছে। তাই নতুন কাউকে নয়, অচিন্ত্য মল্লিককেই প্রধান শিক্ষক হিসাবে দেখতে চান তাঁরা। গোলমালের মাঝে পড়ে সরকারি খাতায় সই না করেই ফিরে যান নতুন প্রধান শিক্ষক।
এ দিন কালনা উত্তর চক্রের অবর বিদ্যালয় পরিদর্শকের দফতর খুলতেই তিনটি ট্র্যাক্টর এবং কয়েকটি টোটো করে স্কুলের পড়ুয়া এবং অভিভাবকদের একাংশ পৌঁছে যান। ঘেরাও, বিক্ষোভ শুরু হয়। বিক্ষোভকারীরা জানিয়ে দেন, কোনও মতেই তারা নতুন প্রধান শিক্ষককে মেনে নেবেন না। ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষককেই দায়িত্ব দিতে হবে।
অভিযোগ, বিক্ষোভ চলাকালীন কয়েক জন অবর বিদ্যালয়ের পরিদর্শককে গালিগালাজ করেন। ক্রমশ বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ায় ঘটনাস্থলে পৌঁছন কালনা ১ ব্লকের যুগ্ম উন্নয়ন আধিকারিক এবং পুলিশ। বিক্ষোভকারীদের নিজেদের অবস্থানে অনড় থাকায় অবর বিদ্যালয়ের পরিদর্শকের দফতর থেকে কয়েক জনের সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলিয়ে দেওয়া হয় জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় সংসদের চেয়ারম্যান মধুসূদন ভট্টাচার্যের সঙ্গে। তিনি বিষয়টি নিয়ে অভিভাবকদের প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনার আশ্বাস দেন। ততদিন পর্যন্ত স্কুলের দায়িত্ব ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকেরই থাকবে বলে জানানো হয়।
ঘেরাও কর্মসূচিতে হাজির থাকা এক অভিভাবক শান্তুনু গোপ বলেন, ‘‘বৈঠক যেখানেই হোক আমরা ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষককে স্কুলের দায়িত্ব দেওয়ার দাবিতে অনড় থাকব।’’
অবর বিদ্যালয় পরিদর্শক অভিজিৎ জানা বলেন, ‘‘সিমলন গ্রামের স্কুলটির বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। সকলকে নিয়ে বসে দ্রুত বিষয়টি নিয়ে সিদ্ধান্ত হবে।’’
প্রশ্ন উঠেছে নতুন প্রধান শিক্ষক তো আগের স্কুল থেকে অব্যহতি নিয়েছেন, তাহলে এই ক’দিন তিনি কী করবেন? অবর বিদ্যালয় পরিদর্শক জানান, যত দিন না সিদ্ধান্ত হচ্ছে ততদিন তাঁর অফিসে হাজিরা দেবেন শ্যামলবাবু।