প্রসঙ্গত, লোকসভা নির্বাচনের আগে পঞ্চায়েত ভিত্তিক লিড বেঁধে দেওয়া হয়েছিল। তা সত্ত্বেও নানুর বিধানসভার আওতাধীন নানুর ব্লকের ১১টি এবং বোলপুর ব্লকের ছ’টি পঞ্চায়েতের মধ্যে শুধু ওই দু’টি পঞ্চায়েত সেই লক্ষ্যপূরণ করতে পারেনি। কীর্ণাহার ১ এবং দাসকলগ্রাম-কড়েয়া ১-এ পঞ্চায়েতে বিজেপির থেকে তৃণমূল যথাক্রমে ১,৯৮৩টি এবং ৬০৯টি ভোটে পিছিয়ে আছে। ওই ঘটনায় বেজায় খাপ্পা হয়ে ওঠেন নানুরের বাসিন্দা, জেলা সভাধিপতি তথা জেলাতৃণমূলের কোর কমিটির সদস্য কাজল শেখ। তিনি ওই দুই পঞ্চায়েতের অঞ্চল কমিটির সভাপতিদের সরিয়ে দিয়ে অঞ্চল কমিটি ভেঙে দেন।
দলের স্থানীয় নেতৃত্বকেবাড়ি বাড়ি গিয়ে হারের কারণ অনুসন্ধান করে রিপোর্ট দেওয়ারও নির্দেশ দিয়েছিলেন কাজল শেখ। সেই নির্দেশ অনুযায়ী সমীক্ষা শুরু হয়েছে। রবিবার কীর্ণাহারের ১৫৭ নম্বর ও ১৫৮ নম্বর বুথে সমীক্ষা হয়েছে। উপস্থিত ছিলেন ১৫৭ নম্বর বুথের পঞ্চায়েত সদস্য তথা প্রাক্তন প্রধান শিবরাম চট্টোপাধ্যায়, বুথ সভাপতি তামাল দলুই, ১৫৮ নম্বর বুথের পঞ্চায়েত সদস্য বাবুল হাজরা, বুথ সভাপতি মোহন শেখ প্রমুখ। তাঁরা পরিবারের লোকেদের সঙ্গে কথা বলে নাম, ফোন নম্বর এবং অভিযোগের বিবরণ নথিভুক্ত করেন। এলাকার নারায়ণ দাস, জগন্নাথ ভট্টাচার্যেরা তৃণমূল নেতাদের কাছে নিকাশি নালা এবং বেহাল রাস্তা নিয়ে অভিযোগ করেন। পঞ্চায়েতে বারবার জানিয়েও কোনও লাভ হয়নি বলে তাঁরা জানিয়েছেন।
কীর্ণাহার ১ পঞ্চায়েতের প্রধান সরেশ সান্তারা বলেন, ‘‘সমীক্ষায় অধিকাংশ জায়গায় নিকাশি নালা এবং রাস্তার অভিযোগ উঠে এসেছে। আসলে কেন্দ্রীয় সরকার ১০০ দিন কাজের প্রকল্পের টাকা বন্ধ করে দেওয়ায় নালা সংস্কার করা যায়নি। আর অধিকাংশ রাস্তাও ঢালাই হয়ে গিয়েছে। যেগুলো বাকি আছে সেগুলো ঢালাইয়ের প্রস্তাব নেওয়া আছে।’’ সমীক্ষা শুরু হয়েছে দাসকলগ্রাম-কড়েয়া ১ পঞ্চায়েতেও। তবে, ওই পঞ্চায়েতের প্রধান সঞ্জীব ঘোষাল সংবাদমাধ্যমের কাছে কিছু বলতে চাননি।
সভাধিপতিকে ফোন করে বা মেসেজ পাঠিয়ে কোনও প্রতিক্রিয়া মেলেনি। নানুর ব্লক তৃণমূলের সভাপতি সুব্রত ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘কেন সমীক্ষা করা হচ্ছে, তা আমাদের দলের অভ্যন্তরীণ বিষয়। রিপোর্ট পাওয়ার পরে কী করা হবে, তা-ও সংবাদমাধ্যমকে বলতে চাই না।’’ বিজেপির সাংগঠনিক জেলা সভাপতি ( বোলপুর ) সন্ন্যাসীচরণ মণ্ডল বলেন, ‘‘সমীক্ষার নামে শাক দিয়ে মাছ ঢাকার চেষ্টা হচ্ছে। কেন্দ্রীয় আবাস যোজনা, ১০০ দিন কাজের প্রকল্পে কাটমানি-সহ শাসকদলের দুর্নীতিতে মানুষ ক্ষোভে ফুঁসছেন। তারই প্রতিফলন ঘটেছে ভোটে। নেতারা সেই দুর্নীতিকে নিকাশি নালা এবং রাস্তা দিয়ে আড়াল করতে চাইছেন।’’