ঝালদা ও নদিয়ার বাম পরিচালিত তাহেরপুর পুরসভাকে বাদ দিয়ে এ দিন রাজ্যের সব তৃণমূল পরিচালিত পুরপ্রধান ও মেয়রদের নিয়ে বৈঠক করেন মমতা। দু’টি পুরসভাকে না ডাকায় বিতর্ক বাধে। মমতা অবশ্য স্পষ্টই বলেন, ‘‘ওই দু’টি পুরসভা অন্য দলের। নিজের দলের লোকেদের বকাঝকা করা যায়। কিন্তু অন্য দলের প্রতি আমার সেই অধিকার নেই। তাছাড়া ওরা আমাদের সঙ্গে যোগাযোগও রাখে না। তবে শুভেচ্ছা রইল। ওরা নিজেদের মতো করে কাজ করুক।’’ ঝালদার তৃণমূল পুরপ্রধান সুরেশ আগরওয়াল বলছেন, ‘‘আমি তৃণমূল থেকে জিতে পুরপ্রধান হয়েছি। উপপুরপ্রধানও তৃণমূলের। তবু মুখ্যমন্ত্রী কেন এ কথা বললেন,বুঝছি না।’’
২০২২ সালে তৃণমূল পুরবোর্ড গড়লেও প্রায় এক বছর পুরপ্রধানের কুর্সি দখল নিয়ে কংগ্রেস-তৃণমূলের দড়ি টানাটানি চলেছে ঝালদায়। কখনও অনাস্থা এনে তৃণমূলকে সরিয়ে কংগ্রেসের পুরপ্রধান হয়েছে। কখনও রাজ্য পুর ও নগরোন্নয়ন দফতর তৃণমূলের অন্য কাউকে পুরপ্রধানের দায়িত্ব দিয়েছে। কখনও হাই কোর্ট পুরপ্রধান বেছেছে আর একজনকে। শেষে কংগ্রেসের সমর্থনে দলেরই পুরপ্রধান শীলা চট্টোপাধ্যায়কে অনাস্থায় সরিয়ে পুরপ্রধান হন সুরেশ। যদিও এতে শীর্ষ নেতৃত্বের অনুমোদন ছিল না। তবে হুঁশিয়ারি দিলেও সুরেশের বিরুদ্ধে দলীয় পদক্ষেপ হয়নি। তবে মুখ্যমন্ত্রীর মন্তব্যে খানিকটা উল্লসিত শীলাদের শিবির। শীলার দাবি, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী তাঁর উপলব্ধি থেকেই কথাগুলি বলেছেন। তাঁর বক্তব্যকে কুর্নিশ জানাচ্ছি।’’
তবে আপত্তি তুলেছে কংগ্রেস। দলের জেলা সভাপতি নেপাল মাহাতোর মতে, ‘‘প্রশাসনিক সভাকে মুখ্যমন্ত্রী দলীয় সভায় পরিণত করলেন। এটা গণতন্ত্রের পক্ষে লজ্জার।’’ আর সুরেশদের প্রতি নেপালের বার্তা, ‘‘দলের প্রধানই যখন আপনাদের স্বীকৃতি দিতে চান না, তখন আপনাদের এক মুহূর্তের জন্যও আর সেই দলে থাকা উচিত নয়।’’
উল্লেখ্য, লোকসভা ভোটে ঝালদার ১১টি ওয়ার্ডেই এগিয়ে রয়েছে বিজেপি। তবে শহরে পদ্মের কোনও পুর প্রতিনিধি নেই।
বিজেপির রাজ্য নেতা বিদ্যাসাগর চক্রবর্তীর কটাক্ষ, ‘‘নিজেদের স্বার্থ রক্ষায় কংগ্রেস ও তৃণমূলের পুর প্রতিনিধিরা যে ভাবে ঝালদা পুরসভা বারবার হাত বদল করেছেন, তাতে মুখ্যমন্ত্রীর বিভ্রান্তি হওয়া অস্বাভাবিক নয়। তবে উনি নিজের দলের লোকেদেরও আরবিশ্বাস করছেন না।’’