এ জায়গা ছবির মতোই সুন্দর। কলকাতা থেকে ঘণ্টা দুয়েকের দূরত্বেই হাওড়া জেলার বাগনানে রূপনারায়ণের পাড়ে বেনাপুরের চর লোকচক্ষুর আড়ালে রয়ে যাওয়া গুপ্তধনের মতোই। ভ্রমণপিপাসুদের কেউ কেউ এর খোঁজ রাখেন। তবে এখনও সে ভাবে সেখানে পর্যটকদের ভিড় হয় না। বিকেল হলেই এখানে গল্প করতে আসেন স্থানীয়রা। গ্রাম্য জায়গা। বিকেলে চপ-মুড়ি নিয়ে বসে জমাটি আড্ডা। আর শীতের দিনে পিকনিক।
বর্ষায় বেনাপুরের চর হয়ে ওঠে আরও সবুজ। বিশাল চরের মধ্যেই খাঁড়ি ভরে যায় জলে। পা ডুবে যায় কাদায়। তবুও সেই রূপ অতি সুন্দর। চরের মাঝে গজিয়ে ওঠা গাছ, নৌকার সারি, তার সঙ্গে মিশে যায় ভাঙনের ভয়াবহতাও। বর্ষা এলেই নদের খিদে বাড়ে। একটু একটু করে তলিয়ে যায় ঘন সবুজ চর। বড় গাছের হেলে পড়া দেখলে মনে হতে পারে এই রূপ প্রকৃত অর্থেই ‘ভয়ঙ্কর সুন্দর’।
কোনও আগাম পরিকল্পনা ছাড়া একটা দুপুরে বেরিয়ে পড়তে পারেন এই রূপ দর্শনে। বেনাপুরের চরে ঘাসজমিতে বসে পছন্দের খাবার খেতে খেতে জমিয়ে আড্ডা দিতে পারেন শেষ বিকালে। হাওয়ার কোনও অভাব নেই এখানে। তবে বৃষ্টি এলে মুশকিল, এই যা!
বাগনানের কাছে এই চরকে বেনাপুর সৈকতও বলেন অনেকে। ঘোরার জন্য বিকেলের দিকেই সবচেয়ে সুন্দর লাগে এই জায়গা। কাছেপিঠে কোনও দোকানপাট নেই। তাই জল থেকে খাবার— সবটাই নিয়ে যেতে হবে। শুধু নদীর চরের রূপ নয়, জাতীয় সড়ক থেকে গ্রামের পথে ঢুকলেই বদলে যায় প্রকৃতির দৃশ্যপটও। রাস্তার ধারে সবুজ ধানের ক্ষেত। বাড়ির সামনে শাড়ি দিয়ে দোলনা বেঁধে খেলা করে কচিকাঁচারা। রাস্তায় চড়ে বেড়ায় ছাগল। সেই পথ পেরিয়ে গেলে স্বাগত জানাতে প্রস্তুত থাকে বেনাপুরের চর।
কী ভাবে যাবেন
গাড়িতে এলে ১৬ নম্বর জাতীয় সড়ক ধরে আসতে হবে বাগনান। তার পর আন্টিলা বা নুনটিয়ার রাস্তা ধরে বেনাপুর চর। বাসেও বাগনান এসে টোটো বা অটো করে এখানে আসা যায়। ট্রেনে এলে নামতে হবে বাগনান স্টেশনে। তার পর অটো বা টোটো বুক করে বেনাপুর চরে।