গতকাল সোমবার বিকেলে বালুরঘাট খিদিরপুর শ্মশানে মৃতদেহ দাহ করতে এসে প্রবল বিক্ষোভ দেখান শ্মশানযাত্রীরা। তাঁদের দাবি ছিল, ঘণ্টাতিনেক বসিয়ে রাখার পরেও সদ্য মেরামত করে তোলা বৈদ্যুতিক চুল্লিতে মৃতদেহ দাহ করা যায়নি। এর জেরে বিকেলে শ্মশানযাত্রীরা বিক্ষোভ করেন। তড়িঘড়ি বিষয়টি নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলিও সামাজিক মাধ্যমে এবং প্রকাশ্যে আলোচনা শুরু করে।
জানা গিয়েছে, প্রায় এক বছর ধরে বিদ্যুৎচুল্লি বন্ধ অবস্থায় পড়েছিল বালুরঘাট খিদিরপুর শ্মশানে। পুরসভার পক্ষ থেকে দাবি করা হয়, প্রথমে যে বিদ্যুৎ চুল্লি তৈরি করা হয়েছিল তার কিছু গঠনগত ভুল ছিল, সেই ভুল শুধরে এক বছর ধরে কাজ চালিয়ে ৩৬ লক্ষ টাকারও বেশি খরচ করে দিন দশেক আগে পুরসভা বিদ্যুৎ চুল্লি আবার চালু করা হচ্ছে বালুরঘাটে, এই মর্মে ঘোষণা করে। প্রচারও করা হয় মাইক দিয়ে। দিনদশেক ভালই চলেছে বিদ্যুৎ চুল্লি। তার পরই হঠাৎ করে ছন্দপতন গতকাল সোমবার বিকেলে।
পুরসভার তরফ থেকে রাতেই বালুরঘাট শহরে মাইকিং করে জানিয়ে দেওয়া হয় আগামী সাতদিন বন্ধ থাকবে বিদ্যুৎ চুল্লি। আবারও এর মেরামত প্রয়োজন হয়ে পড়েছে। আর এই কথা প্রচার হতেই আসরে নেমেছে বাম ও বিজেপির মতো বিরোধী দলগুলি। বিজেপির টাউন মন্ডলের পক্ষ থেকে মঙ্গলবার সকালে খিদিরপুর শ্মশানে একটি বিক্ষোভ দেখানো হয় এবং শ্মশানের মূল গেটে তালা ঝুলিয়ে দিয়ে মন্ডল সভাপতি দাবি করেন সব কাজে কাট মানি খাওয়ার কারণেই এত নিম্নমানের কাজ হচ্ছে বালুরঘাট শহরে। ৩৬ লক্ষ টাকা মুখের কথা নয়। মাত্র ১২ দিনে এত টাকার কাজ ভেঙে পড়বে কেন? জনগণের উদ্দেশ্যে চালু করার আগে তার তো পরীক্ষা হওয়া জরুরি ছিল। এক্ষেত্রে এরকম কিছু করা হয়নি। যে কারণে আবার ভোগান্তির মুখে পড়তে হল সাধারণ মানুষকে। এই চেয়ারম্যানের পদত্যাগ করা উচিত। তিনি যে কাজই করেন, কাটমানি খান এবং সে কাজের মেয়াদ বেশি দিন স্থায়ী হয় না।
সোমবার রাতেই বিপুলকান্তি ঘোষ, পুর-চেয়ারম্যান পরিষদ দাবি করেন, ইলেকট্রিক না থাকায় জেনারেটর চালিয়ে বৈদ্যুতিন চুল্লিতে মৃতদেহ দাহ করার চেষ্টা হয়েছিল। ভিতরে থাকা কয়েল নষ্ট হয়ে গিয়েছে আর সে কারণেই বালুঘাটের মানুষকে সমস্যায় পড়তে হয়েছে। দ্রুত কয়েল পরিবর্তনের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তার জন্য সময় লাগবে দিনসাতেক।
বিরোধীদের পক্ষ থেকে এখানেই প্রশ্ন তোলা হয়েছে, তা হলে চালু করার আগে কেন খুঁটিয়ে দেখা হল না, কোথায় কী সমস্যা রয়েছে? এর আগেও বিদ্যুৎ না থাকায় জেনারেটর চালিয়ে মৃতদেহ দাহ করা হয়েছে এই ঘাটে। তাহলে কি মেরামতির কাজেই কোনও বড়সড়ো গাফিলতি থেকে গেল-- প্রশ্ন তুলছেন সাধারণ মানুষও।