সুনিপা চক্রবর্তী, ঝাড়গ্রাম: ভাঙাচোরা দরজা ও জানালার পাল্লা। ভেঙে পড়েছে ছাদের টিন, অ্যাসবেসটস। ছাদহীন ফাঁকা বারান্দায় কোনওমতে রান্না সামলান কেন্দ্রের একমাত্র কর্মী। বর্ষার বৃষ্টির জল চুঁয়ে পড়ে ঘরে, বারান্দায়। আর বারান্দার এক কোণে তালপাতা দিয়ে ঘিরে রান্না হয়।
বিনপুর এক ব্লকের নেপুরা অঞ্চলের বলরামপুর এক অঙ্গনওয়াড়ি (Anganwadi) কেন্দ্রের নেই কোনও নিজস্ব ভবন। একটা পুরাতন পরিত্যক্ত প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দুটি ঘরে কোনওমতে চলছে কেন্দ্রটি। দরজা, জানালার নেই পাল্লা। চারিদিকে জমেছে আগাছা। পড়ে রয়েছে বিষ্ঠা। এই অবস্থায় গর্ভবতী, প্রসূতি এবং শিশুদের নিয়ে একা সেন্টারে কর্মী রান্নার জোগাড় থেকে শিশুদের সমলানো সবই করছেন।
সামনে ভরা বর্ষা। বৃষ্টি পড়লে ছাতা নিয়ে রান্না করতে হয়। এমনই এক অবস্থার মধ্যে চলছে এই বলরামপুর এক অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রটি। এই কেন্দ্রের অধীন মোট ৮৬ জন মা, শিশু পুষ্ঠিকর খাবার পান। এদের মধ্যে রয়েছে আটজন গর্ভবতী। পাঁচজন প্রসূতি। ছয় মাস বয়স থেকে থেকে তিন বছরের শিশু আছে ৪৩ জন। এবং তিন বছর থেকে ৬ বছরের শিশু রয়েছে ৩০ জন।
এই কেন্দ্রে কর্মী রয়েছেন শোভা দত্ত। তিনি জানান, ২০২০ সাল থেকে এই কেন্দ্রে কোনও সহায়িকা নেই। মাঝে দুবছর করোনার জন্য বন্ধ ছিল কেন্দ্র। ২০২২ সালের নভেম্বর থেকে শোভাদেবী একাই সামলাচ্ছেন। নিজের বেতনের টাকা থেকে রাঁধুনি দিয়ে রান্না করান। শোভা দত্ত বলেন, “ছাদের টিন ভেঙে গিয়েছে। বারান্দার কোনও ছাউনি নেই। কোনওমতে তালপাতা দিয়ে ঘিরে রান্না হচ্ছে। আমাদের কোনও নিজেদের ভবন নেই। পুরাতন প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ঘরে চলছে কেন্দ্র। বর্ষার সময় খুবই কষ্ট হয়।’’ এই বিষয়ে বিনপুর এক ব্লকের বিডিও অণল সরকার বলেন, “আমি বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখব। এবং সিডিপিওকে জানাব।”