মিষ্টি হোক বা সিঙাড়া কচুরি, শহর কলকাতা বিভিন্ন দোকান যুগে যুগে ভোজনরসিকদের রসনাতৃপ্তি করে এসেছে। কলকাতার সেরা মিষ্টি বিক্রেতা বলতে যদি প্রথমেই মনে আসে কে সি দাস বা ভীম নাগের নাম, তাহলে সিঙাড়া কচুরিতে পুঁটিরামের কোনও জবাব নেই। কলকাতার অন্যতম মিষ্টান্ন প্রতিষ্ঠান এই পুঁটিরাম। এবার সেই পুঁটিরামের একটি শাখাই বন্ধ হয়ে গেল। বিগত কয়েকদিন ধরেই শাটার নামানো ৪৬/৪ মহাত্মা গান্ধী রোডের দোকানটির। আর এই খবর ছড়িয়ে পড়তেই ভোজনরসিকদের মধ্যে রীতিমতো শোরগোল পড়ে গিয়েছে। জিভে জল আনা সেই স্বাদ 'মিস' করছেন তাঁরা। একইসঙ্গে ক্রেতাদের অনেকেরই প্রশ্ন, সূর্য সেন স্ট্রিটে পুঁটিরামের অপর শাখাটি কি খোলা রয়েছে? সেটির কী ভবিষ্যৎ?এই বিষয়ে মুখ খুললেন সূর্য সেন স্ট্রিটে অবস্থিত পুঁটিরামের আদি শাখার কর্ণধার ইন্দ্রজিৎ মোদক। ইন্দ্রজিৎ বলেন, 'আমার দাদা (৪৬/৪ মহাত্মা গান্ধী রোডের শাখাটির কর্ণধার) শারীরিকভাবে অসুস্থ। তিনি একা, আর এই সব কারবার একা সামলানো যায় না। ক্রেতাদের সঙ্গে ডিলিংস নিজেকেই করতে হয়। তাই নিজে উপস্থিত না থাকলে সমস্যা হয়।' একইসঙ্গে ইন্দ্রজিৎ মোদক আরও জানিয়ে দেন, মহাত্মা গান্ধী রোডের পুঁটিরামের শাখাটি বন্ধ হলেও, সূর্য সেন স্ট্রিটের শাখাটির বন্ধ হওয়ার কোনও আশঙ্কা নেই। কারণ ইতিমধ্যেই পরবর্তী প্রজন্ম ব্যবসা দেখার জন্য প্রস্তুত হয়ে গিয়েছে। সেক্ষেত্রে কোনওরকম অঘটন না ঘটলে, এই শাখাটি যেমন চলছে তেমনই চলবে বলেই আশ্বস্ত করেন তিনি।
ক্রেতাদের মধ্যে কেউ কেউ আছেন যাঁরা মহাত্মা গান্ধী রোডের দোকানটিতে নিয়মিত যাতায়াত করতেন। অনেকে আবার সূর্য সেন স্ট্রিটের দোকানটির প্রতিদিনের খদ্দের। সেক্ষেত্রে যাঁরা মহাত্মা গান্ধী রোডের দোকানের ক্রেতা, তাঁদের অনেকেই সেখানে শাটার নামানো দেখে অপর শাখাটিতে ভিড় জমাচ্ছেন। শুধু স্থানীয়রা নন, বাংলাদেশের মানুষজনের কাছেও একইরকম জনপ্রিয় পুঁটিরামের মিষ্টি, সিঙারা ও কচুরি।
উল্লেখ্য, সূর্য সেন স্ট্রিটে চালু থাকা দোকানটিই পুঁটিরামের আদি শাখা। আর ৪৬/৪ মহাত্মা গান্ধী রোডের পুঁটিরামের শাখাটি এবার ৮০ বছরে পা দিয়েছে । জানা যায়, এই বংশেরই এক পূর্বপুরুষ জীতেন্দ্রনাথ মোদক ওই শাখটি যৌতুক হিসেবে মেয়ে-জামাইকে দিয়েছিলেন। সেই থেকেই চালু ছিল দোকানটি। এবার সেই দোকানেরই ঝাঁপ পড়ে গেল। যদিও ক্রেতাদের কাছে একটাই স্বস্তি, খোলা থাকছে আদি শাখাটি।