• সংসদের ইতিহাসে দুর্ভাগ্যজনক স্পিকার পদে লড়াই, বলছেন বিরোধীরা ...
    আজকাল | ২৬ জুন ২০২৪
  • বিভাস ভট্টাচার্য: অভূতপূর্ব এবং দুর্ভাগ্যজনক। এটাই বলছেন প্রাক্তন সাংসদরা। দায়ী করছেন বিজেপির ঔদ্ধত্য এবং তুঘলকি আচরণকে। অষ্টাদশ লোকসভা উত্তপ্ত হয়ে উঠল প্রথম থেকেই। যা তৈরি হল স্পিকার নির্বাচন নিয়ে। বিজেপির ওম বিড়লা বনাম 'ইন্ডিয়া' জোটের প্রার্থী কে সুরেশ। ভোটাভুটির দিকে এগোচ্ছে গোটা বিষয়টি। যার জন্য সম্পূর্ণভাবে বিজেপির দিকেই আঙুল তুলছেন প্রাক্তন বাম, তৃণমূল ও কংগ্রেস সাংসদরা।

    আরএসপি'র সাধারণ সম্পাদক ও প্রাক্তন সাংসদ মনোজ ভট্টাচার্য বলেন, 'দুর্ভাগ্যজনক। দেশের সংসদের ইতিহাসে যা বিবেচিত হবে অভূতপূর্ব হিসেবেই। বিরোধীদের দাবি ছিল ডেপুটি স্পিকারের পদ। এটাই প্রথা। যেটা বিজেপির আমলে মানা হচ্ছে না। এর আগে ওম বিড়লা সংসদে হৈচৈ হলে বিরোধীদের উদ্দেশ্যে বলতেন 'আমি আপনাদেরও স্পিকার'। কিন্তু যে ঘটনাটা ঘটল তাতে এরপর কি তিনি এই কথাটা আর বলতে পারবেন? সহমতের ভিত্তিতে সংসদ চালানোর যে রীতি, সেটা আজ বিজেপির ঔদ্ধত্যের কাছে পরাজিত হল।'

    কংগ্রেস নেতা ও প্রাক্তন সাংসদ পবন খেরা বলেন, প্রধানমন্ত্রী ঐকমত্যের কথা বলেন, তারপরও স্পিকার পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে বাধ্য করেন। প্রথাগতভাবে, স্পিকার ক্ষমতাসীন দলের এবং ডেপুটি স্পিকার বিরোধী দল থেকে হয়। তবে এটি উপেক্ষা করা হয়েছিল গত লোকসভায়। সহযোগিতা ও ঐকমত্যের প্রতি প্রধানমন্ত্রীর অ্যালার্জি রয়েছে। সপ্তদশ লোকসভায় একজন ডেপুটি স্পিকারের অনুপস্থিতি দেখা গেছে এবং এখন স্বাধীনতার পর প্রথমবারের মতো স্পিকারের পদে নির্বাচন হতে চলেছে।'

    তৃণমূল কংগ্রেসের প্রাক্তন সাংসদ ডা. শান্তনু সেন বলেন, 'গত ১০ বছরে বিজেপির আমলে এরকম অনেক কিছুই হয়েছে যেটা স্বাধীনতার পর থেকে ভারতের সংসদে দেখা যায়নি। এর সবকিছুর পেছনেই রয়েছে তুঘলকি, স্বেচ্ছাচারী, স্বৈরাচারী এবং একনায়কতন্ত্রী মনোভাব। বিরোধীদের যোগ্য মর্যাদা না দেওয়া। গায়ের জোরে গত ১০ বছর‌ ক্ষমতায় থাকলেও ডেপুটি স্পিকার পদে লোকসভায় কাউকে বসাননি নরেন্দ্র মোদি। আজ মানুষের রায়ে বঞ্চিত হয়েও নির্বাচন কমিশনের কাঁধে ভর দিয়ে কিছু পাল্টুরাম আর কিছু সুবিধাবাদীদের সঙ্গে নিয়ে একটা অস্থায়ী জোট তৈরি করেছে বিজেপি। ইন্ডিয়া জোটের কাছে প্রতি পদে তারা বাধা পাচ্ছে।'

    সংসদীয় রাজনীতিতে আলোচনাই হল সমাধানের মূল সূত্র। যেটার থেকে সরে এসেছে বিজেপি। বিষয়টি স্মরণ করিয়ে রাজ্যের আরেক প্রাক্তন সাংসদ ও প্রবীণ কংগ্রেস নেতা প্রদীপ ভট্টাচার্য বলেন, 'লোকসভায় স্পিকার পদের জন্য বিরোধীদের সঙ্গে আলোচনা হয়। এটার মূল উদ্যোগটা নিতে হয় সরকারপক্ষকে। সরকারপক্ষ থেকে স্পিকার এবং বিরোধীদের থেকে ডেপুটি স্পিকার পদে নির্বাচন করা হয়। কিন্তু শাসকদল কোনও আলোচনা না করেই পদক্ষেপ নেওয়াতে এই সংকট তৈরি হয়েছে। যার ফলে মনে হচ্ছে শেষপর্যন্ত ভোটাভুটি হবে।'
  • Link to this news (আজকাল)