ধ্রুবজ্যোতি বন্দ্য়োপাধ্যায়: উপনির্বাচনে নির্বাচিত দুই বিধায়কের শপথ ঘিরে টানাপোড়েন অব্যাহত। রাজভবনেই রাজ্যপালের নির্দেশ মেনে শপথ নিতে হবে, ইমেল মারফত জানিয়ে দিয়েছেন সি ভি আনন্দ বোস। এদিকে বিধানসভায় শপথ নিতে নাছোড় সায়ন্তিকা বন্দ্যোপাধ্যায় ও রেয়াত হোসেন। রাজভবনের চিঠি পাওয়ার পরই মঙ্গলবার দুপুরে বিধানসভায় হাজির হন দুজন। স্পিকারের সঙ্গে দীর্ঘক্ষণ কথা বলেন। এর পর ফের রাজভবনরে চিঠি দেন ভগবানগোলা এবং বরানগরের বিধায়ক। রাজ্যপালকে তাঁদের আর্জি, “আমাদের আর্জি একটু ভেবে দেখুন। এই বিধানসভার গরিমার কথা আমরা জানি। আমাদের ইচ্ছা এখানে শপথ পড়ি। আপনিই আসুন বিধানসভায়। আমরা আপনার কাছেই শপথ গ্রহণ করব।” রাজভবন নতুন করে বিধায়কদের এই জোড়া চিঠির জবাব আর না দিলে তাদের তরফেও রাজভবনে শপথ পাঠের পূর্বনির্ধারিত সূচি অনুযায়ী সব প্রস্তুতি থাকবে বলে খবর।
বুধবার ১২টা থেকে ৪টে পর্যন্ত বিধানসভায় অপেক্ষা করবেন নব নির্বাচিত দুই বিধায়ক। উল্লেখ্য, কালকেই শপথের দিন ধার্য করেছিলেন রাজ্যপাল। সেটাও ১২টা থেকে ১২.৩০টার মধ্যে। সেই কারণেই ওই সময়ের আগেই বিধানসভায় চলে আসবেন দুজন। সেখানেই অপেক্ষা করবেন রাজ্যপালের জন্য। রাজভবনের কাছে বিধানসভায় শপথগ্রহণের আর্জি জানিয়েছেন তাঁরা। সেই আর্জি মঞ্জুর হলে শপথ নেবেন। সমস্ত সার্টিফিকেট তাঁদের কাছে তৈরি রয়েছে। সায়ন্তিকার কথায়,”প্রথম চিঠিতে রাজ্যপাল বলেছিলেন, রাজভবনে এসে শপথ নিন। কিন্তু কার কাছে শপথ নেব তা বলা ছিল না। বিধানসভাকেও কিছু জানানো হয়নি। ফলে কার কাছে গিয়ে শপথ নেব, সেটা বুঝতে পারিনি।” তাঁর আরও সংযোজন, “আসলে সকলেরই তো কিছু আশা, স্বপ্ন থাকে। তাই আমাদের আর্জি, উনি (রাজ্যপাল) বিধানসভা এসে আমাদের শপথ পাঠ করান। বিধানসভার একটা ঐতিহ্য, গরিমা আছে। আমাদের তো অধ্যক্ষের অধীনেই কাজ করতে হবে এই বিধানসভায়। তাহলেই এখানেই শপথ নিলে ভালো হয়।” পরিশেষে সায়ন্তিকার সংযোজন, “শপথ না নিলে বিধায়ক হিসেবে কাজ শুরু করতে পারছি না। এখন মনে হচ্ছে, মানুষের ভোটে নির্বাচিত হয়েই বোধহয় ভুল করে ফেলেছি!”
বিষয়টি নিয়ে ‘বিরক্ত’ বিধানসভার স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়ও। তাঁর কথায়, “বিষয়টি অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক। উপনির্বাচনে জিতে আসা দুই বিধায়কের শপথগ্রহণ নিয়ে এত জটিলতা কেন তৈরি করা হচ্ছে, কে জানে! বি আর আম্বেদকর নিজের বক্তব্যে বলেছিলেন, উপনির্বাচনে জিতলে সেই বিধায়কদের শপথবাক্য স্পিকারই পাঠ করাতে পারেন।”
প্রসঙ্গত, লোকসভা নির্বাচনের সঙ্গে এই দুই বিধানসভায় উপনির্বাচন হয়। ফল ঘোষণা হয় একই দিনে। সেই থেকে প্রায় সপ্তাহ তিনেক কেটে গেলেও তাঁদের শপথ গ্রহণ করানো যায়নি। উপনির্বাচনে জয়ী বিধায়কদের শপথ নিয়ে টানাপোড়েন চলছে রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোস এবং বিধানসভার স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়ের মধ্যে।