• কলকাতা, বিধাননগর-সহ রাজ্য জুড়ে নগর সাফাই! মমতার ধমকের পরদিনই শুরু দখলমুক্তি-অভিযান
    আনন্দবাজার | ২৬ জুন ২০২৪
  • পানীয় জল, আবাসন, পরিচ্ছন্নতা-সহ একাধিক পুর পরিষেবার নিরিখে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ক্ষোভপ্রকাশের পরদিনই তৎপর রাজ্যের বিভিন্ন পুরসভা। মুখ্যমন্ত্রীর ধমকের পর সোমবার সন্ধ্যাতেই পদক্ষেপ করা শুরু হয়েছিল কোথাও কোথাও। মঙ্গলবার সকাল থেকে সেই তৎপরতা আরও বেড়েছে।

    সোমবার নবান্ন সভাঘরে পুরসভাগুলির চেয়ারম্যান, পুরনিগমগুলির মেয়র এবং প্রশাসনিক আধিকারিকদের ডেকেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। ওই বৈঠকে রাজ্যের পুর পরিষেবা নিয়ে তীব্র ক্ষোভপ্রকাশ করেন তিনি। রাজ্যের বিভিন্ন পুরসভায় পানীয় জল, আবাসন, পরিচ্ছন্নতা থেকে শুরু করে জায়গা দখল করে অস্থায়ী দোকান খোলা নিয়ে সরব হন মমতা। এ নিয়ে মমতার ভর্ৎসনার মুখে পড়তে হয় মন্ত্রী-বিধায়কদেরও। সরাসরি কয়েক জনের নাম উল্লেখ করেও ক্ষোভপ্রকাশ করেন মমতা। এর পরেই পরিষেবা নিয়ে তৎপর হয় বিভিন্ন পুরসভা। মঙ্গলবার কোন পুরসভা কী কী পদক্ষেপ করল—

    কলকাতা পুরসভা: কলকাতা পুরসভার অন্তর্গত এসএসকেএম হাসপাতাল সংলগ্ন ফুটপাত দখল নিয়ে ক্ষোভের কথা জানিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। অসন্তোষ প্রকাশ করেছিলেন গড়িয়াহাটের ফুটপাত দখল নিয়েও। দু’টি ক্ষেত্রেই পদক্ষেপ করল প্রশাসন। গড়িয়াহাট ও এসএসকেএম হাসপাতাল সংলগ্ন ফুটপাত দখল করে থাকা দোকানদারদের বলা হয়েছে এক দিনের মধ্যে সব জিনিসপত্র সরিয়ে নিতে।

    বিধাননগর পুরসভা: মুখ্যমন্ত্রীর ধমকের পর মঙ্গলবার সকালে সল্টলেকে ফুটপাত দখলমুক্ত করতে নামে পুলিশ এবং পুরসভা। মঙ্গলবার সকাল থেকে বিধাননগর পুরসভার ৩৭ নম্বর ওয়ার্ড এবং সেক্টর ফাইভে বুলডোজ়ার নিয়ে একাধিক দোকানের কাঠামো ভেঙে দেওয়া হয়। বিভিন্ন জায়গায় নয়ানজুলির মধ্যেও বাঁশের মাচা করে টিনের কাঠামো দিয়ে দোকান তৈরি করা হয়েছিল। সে সবও ভেঙে দেওয়া হয়েছে। স্থানীয় সূত্রে খবর, সেক্টর ফাইভের কলেজ মোড়ে বহু দোকানদারকে ইলেক্ট্রনিক্স কমপ্লেক্স থানার পুলিশের তরফে বলা হয়েছে, মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৬টার মধ্যে সব জিনিসপত্র সরিয়ে নিতে।

    আসানসোল পুরনিগম: সরকারি জমি বেদখল হয়ে যাওয়া নিয়ে এবং কোথাও কোথাও ওই জমিতেই বহুতল ওঠা নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতার ভৎর্সনার মুখে পড়ে আসানসোল পুরনিগম। রাজ্যের যে প্রান্তে সরকারি জমি বেহাত হয়েছে, সেখানে কড়া ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। আর ওই নির্দেশের ঘণ্টাখানেকের মধ্যে, অর্থাৎ সোমবারই শতাব্দী পার্কের বাইরে বাঁশ-টালি দিয়ে নির্মিত অস্থায়ী ধর্নামঞ্চ ভেঙেছে আসানসোল পুরনিগম। এই প্রসঙ্গে মেয়র বিধান উপাধ্যায় বলেন, ‘‘আসানসোলের আবাসন নিয়ে অসুবিধা হয়েছে। প্রতিটি ক্ষেত্রে মুখ্যমন্ত্রী যেমনটা চেয়েছেন, তেমনটাই হবে। আমরা দ্রুত কাজ করব। আসানসোল এবং সংলগ্ন এলাকাগুলিতে যেখানে অবৈধ নির্মাণ হয়েছে, সেখানেই আমরা ব্যবস্থা করছি। আমরা সকলকে জানিয়েছি, অবৈধ ভাবে বসলে প্রশাসন কড়া ব্যবস্থা নেবে। আসানসোলকে পরিষ্কার করে সাজানো হবে। ফুটপাতটা ভাল ভাবে সাজানো হবে।’’

    শিলিগুড়ি পুরনিগম: শিলিগুড়ি পুর এলাকায় পানীয় জল এবং জমি মাফিয়াদের রমরমা নিয়ে সোমবার সরব হতে দেখা গিয়েছে মুখ্যমন্ত্রী মমতাকে। স্থানীয়দের একাংশের দাবি, অবৈধ নির্মাণ নিয়ে কথা বলার সময় মুখ্যমন্ত্রী বাম আমলের জমি মাফিয়াদের উল্লেখ করলেও শহরের মূল সড়কগুলির উপর তৈরি বাণিজ্যিক নির্মাণগুলি তৈরি হয়েছে তৃণমূল আমলে। সেই আবহে প্রশ্ন উঠছে, পুরসভার পক্ষে কি শিলিগুড়ি পুরনিগমে অবৈধ নির্মাণের বাড়বাড়ন্ত আদৌ নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হবে? এ প্রসঙ্গে শিলিগুড়ির মেয়র তথা বিল্ডিং এমআইসি গৌতম দেব বলেন, ‘‘কাউকেই রেয়াত করা হবে না। বাণিজ্যিক উদ্দেশ্যে যাঁরা ভবন নির্মাণ করছেন, ভুলত্রুটি থাকলে তাঁদেরও নোটিস ধরানো হবে। পুরসভা নিজের কাজ চালিয়ে যাবে।’’ অন্য দিকে, জমি মাফিয়া কার্যকলাপ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘‘বহু জমি এর আগে উদ্ধার করেছি। দার্জিলিঙের জেলাশাসককেও এ বিষয়ে বলা হয়েছে। সব আমার হাতে নেই। তবে এখানে কিছু হলে সেই দায় আমারই। কিছু পদক্ষেপ করা হয়েছে। জেলাশাসক-সহ ভূমি রাজস্ব আধিকারিকদের সঙ্গে কথা বলে গোটা বিষয়টি খতিয়ে দেখব।’’

    বাঁশবেড়িয়া পুরসভা: মুখ্যমন্ত্রী আলাদা করে নাম উল্লেখ না করলেও তাঁর সোমবারের বৈঠকের পরদিনই বাঁশবেড়িয়া পুরসভা নিয়ে সক্রিয় জেলা প্রশাসন! বাঁশবেড়িয়ায় পুর পরিষেবার হাল দেখতে মঙ্গলবার সকালেই সেখানে পৌঁছে যান জেলা প্রশাসনের কর্তারা। এলাকার বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলেন তাঁরা। দীর্ঘ দিন ধরেই ওই পুরসভায় জল জমা এবং মশার উপদ্রব নিয়ে অভিযোগ রয়েছে, তা নিয়েও মানুষের সঙ্গে কথা বলেন চুঁচুড়া সদরের মহকুমাশাসক স্মিতা সান্যাল শুক্ল, মগরা পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি শুক্লা চট্টোপাধ্যায়, সপ্তগ্রাম গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান সাবানা পরভিন-সহ অন্য আধিকারিকেরা। সরকারি আধিকারিকদের দেখে নিজেদের অভিযোগ জানান স্থানীয়েরাও। স্থানীয়দের দাবি, সপ্তগ্রাম গ্রাম পঞ্চায়েতের চক বাঁশবেড়িয়া মন্দিরতলা এলাকায় ব্যান্ডেল-কাটোয়া শাখার ইসলামপাড়া হল্ট স্টেশনের পাশ দিয়ে একটি নিকাশি খাল ছিল। কিন্তু বর্জ্যের কারণে ওই নিকাশি বুজে গিয়েছে। ফলে জল বেরোনোর রাস্তা বন্ধ। একটু বৃষ্টি হলেই ঘরে ঘরে জল ঢুকে যায়। মশার উপদ্রব লেগে থাকে। পাশাপাশি, চর্মরোগের আশঙ্কাও থাকে। স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে দ্রুত সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দেন সরকারি প্রতিনিধিরা। তবে মহকুমাশাসক বলেন, ‘‘বাঁশবেড়িয়া থেকে শুরু করে সপ্তগ্রামের এই অংশটা রেলের আওতায়। রেল যদি আমাদের অনুমতি দেয় পরিষ্কার করার, তা হলে আমরা করব। রেল নিজেও কিছু করছে না। আমি দেখে গেলাম, রিপোর্ট দেব। তার পর নির্দেশ অনুযায়ী কাজ হবে।”

    চুঁচুড়া পুরসভা: মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশের পর পুর প্রতিনিধিদের নিয়ে মঙ্গলবার জরুরি বৈঠকে বসেন চুঁচুড়া পুরসভার চেয়ারম্যান। ওই বৈঠকে পুরসভার ‘নির্মল সাথী’দের ডাকা হয়েছিল। সাফাই কর্মীদেরও সবাইকে ডাকা হয়। বৈঠকে জানানো হয়, এখন থেকে না-বলে কামাই করতে পারবেন না সাফাই কর্মীরা। ঠিক ভাবে কাজ করতে হবে। বাড়ি বাড়ি গিয়ে ঠিক মতো জঞ্জাল সংগ্রহ করার নির্দেশও তাঁদের দেওয়া হয়েছে। দীর্ঘ দিন কাজে অবহেলা দেখলে, তাঁদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানিয়েছেন স্বাস্থ্য দফতরের সিআইসি জয়দেব অধিকারী।

    হাওড়া পুরনিগম: সোমবারের বৈঠকে হাওড়ায় বেআইনি পার্কিং নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন মুখ্যমন্ত্রী। তা নিয়ে মমতার নির্দেশের ভিত্তিতে বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ করা হচ্ছে বলে পুরনিগমের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। আগামী বৃহস্পতিবার পুলিশের সঙ্গে বৈঠক করবে হাওড়া পুরনিগম। বেআইনি পার্কিং নিয়ে কথা হবে সেই বৈঠকে।

    উত্তরপাড়া পুরসভা: কাউন্সিলরদের নিয়ে বুধবার জরুরি বৈঠকে বসবেন উত্তরপাড়ার চেয়ারম্যান দিলীপ যাদবও। পুর এলাকা পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখা নিয়ে মমতার প্রশংসা কুড়িয়েছে এই পুরসভা। তবে এলাকা আরও পরিচ্ছন্ন রাখার লক্ষ্য নিয়ে বুধবার বৈঠকে বসছেন পুরকর্তারা। এ প্রসঙ্গে উত্তরপাড়ার চেয়ারম্যান বলেন, ‘‘শহরবাসী সাহায্য করেছেন তাই পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখা সম্ভব হয়েছে। নোংরা নির্দিষ্ট জায়গায় ফেলতে হবে। পুরসভার সাফাই কর্মীরা সেই আবর্জনা সংগ্রহ করবেন।’’

    কোন্নগর পুরসভা: কোন্নগর পুরসভার চেয়ারম্যান স্বপন দাস জানিয়েছেন, মঙ্গলবার সন্ধ্যা থেকে মাইকে প্রচার করা হবে। যাঁরা বেআইনি ভাবে রাস্তা দখল করে রয়েছেন, তাঁদের উঠে যেতে বলা হবে। না-উঠলে তাঁদের অস্থায়ী নির্মাণ ভেঙে দেওয়া হবে।

    রিষড়া পুরসভা: রিষড়া পুরসভার চেয়ারম্যান বিজয় সাগর মিশ্র জানিয়েছেন, আগামী শুক্রবার পুরবোর্ডের মিটিং ডাকা হয়েছে। পুলিশের সঙ্গে কথা বলে বেআইনি দখলদারদের বিরুদ্ধে অভিযানে নামা হবে।

    শ্রীরামপুর পুরসভা: আগামী বৃহস্পতিবার শ্রীরামপুর পুরসভার চেয়ারম্যান পদে পুনরায় শপথ নেবেন গিরিধারী সাহা। সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্বাচনী এজেন্ট হওয়ার কারণে তিনি চেয়ারম্যান পদ থেকে সাময়িক ভাবে ইস্তফা দিয়েছিলেন। গিরিধারী জানান, মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ মতো কাজ শুরু হবে। ঢেলে সাজানো হবে শ্রীরামপুরকে। তাঁর কথায়, ‘‘আমরা আগে থেকেই কয়েকটা বিষয়ে নজর রেখেছি। শহরের নিকাশি ব্যবস্থা, টোটো এবং ফুটপাত দখলের সমস্যা রয়েছে। শীঘ্রই সমস্যার সমাধান হবে।”

    তারকেশ্বর পুরসভা: মুখ্যমন্ত্রীর ধমকের পর কাজ শুরু হয়েছে তারকেশ্বর পুরসভাতেও। মঙ্গলবার ওই পুরসভার বিভিন্ন জায়গায় মাইক প্রচার করা হচ্ছে বেআইনি নির্মাণ এবং জবরদখলের বিরুদ্ধে। এ নিয়ে তারকেশ্বর থানা এবং তারকেশ্বর মন্দির এস্টেট কমিটিকে চিঠিও দিয়েছে পুরসভা। চেয়ারম্যান উত্তম কুন্ডু জানান, মন্দির সংলগ্ন এলাকা এবং পুরসভায় বিভিন্ন জায়গা মানুষ বেআইনি ভাবে দখল করে রেখেছে। তাঁদের সরে যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সোমবারের সভায় আরামবাগ পুরসভার কঠিন বর্জ্য ব্যবস্থাপনার জন্য জমি না-পাওয়া নিয়ে ক্ষোভপ্রকাশ করেন মুখ্যমন্ত্রী। তারকেশ্বরের চেয়ারম্যান সে প্রসঙ্গে জানান, চাপাডাঙায় কঠিন বর্জ্য ব্যবস্থাপনার জন্য ইতিমধ্যেই একটি জমি দেখা হয়েছে।

    বৈদ্যবাটি পুরসভা: পানীয় জল পরিষেবা নিয়ে সোমবার মুখ্যমন্ত্রীর প্রশাংসা কুড়িয়েছে বৈদ্যবাটি পুরসভা। তবে বৈদ্যবাটির চেয়ারম্যান পিন্টু মাহাতো জানিয়েছেন, প্রশংসা পেয়ে তিনি খুশি হলেও আরও অনেক কাজ বাকি রয়েছে। আগামী শুক্রবার কাউন্সিলরদের নিয়ে বৈঠক ডাকা হয়েছে। ওই বৈঠকে সমস্ত বিষয়ে আলোচনা করে পরবর্তী পদক্ষেপ করা হবে।

    ইংরেজ বাজার পুরসভা: মুখ্যমন্ত্রী মমতার হুঁশিয়ারির পর সতর্ক ইংরেজ বাজার পুরসভা। ফুটপাত দখলমুক্ত করতে প্রশাসনের পক্ষ থেকে মঙ্গলবার সকাল থেকেই মাইক প্রচার শুরু হয়েছে। ইংরেজ বাজারে ফুটপাত দখল এবং সরকারি জায়গা দখল করে হকার্স মার্কেট গড়ে ওঠা নিয়ে অভিযোগ অনেক দিনের। ইংরেজ বাজার পুরসভা থেকে ঢিলছোড়া দূরত্বে রয়েছে পুরনো হাসপাতাল। আর সেখানেই সরকারি জায়গা দখল করে তৈরি হয়েছে বিশাল হকার্স মার্কেট। অস্থায়ী ভাবে টিনের ছাউনি তুলে তৈরি হয়েছে দোকানঘর। পাশাপাশি, শহরের একাধিক রাস্তায় অবৈধ পার্কিং করে টাকা আদায়ের অভিযোগও রয়েছে। রয়েছে পানীয় জল সংক্রান্ত অভিযোগও। এ প্রসঙ্গে ইংরেজ বাজারের চেয়ারম্যান কৃষ্ণেন্দুনারায়ণ চৌধুরী বলেন, ‘‘ফুটপাত দখল নিয়ে আমরা অনেক দিন আগেই জেলাশাসকের সঙ্গে কথা বলেছিলাম। এ জন্য আমরা অনেক রাস্তা চওড়া করেছি। ফুটপাত দখল করে ব্যবসা চললে ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আমাদের কাছে মানুষ আগে। সরকারি জায়গায় যে হকার্স মার্কেট রয়েছে, তা নিয়েও জেলাশাসকের সঙ্গে আলোচনা করে যা যা করণীয়, করব।”

    কোচবিহার পুরসভা: ফুটপাত এবং রাস্তা দখল নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর হুঁশিয়ারির পর নড়েচড়ে বসল কোচবিহার পুলিশ-প্রশাসন। কোচবিহার পুরসভা এলাকায় রাসমেলা ময়দান চত্বরে রাস্তার পাশে ফুটপাত দখল করে থাকা সমস্ত দোকান ভেঙে দিল পুলিশ-প্রশাসন। কোচবিহারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কৃষ্ণগোপাল মীনার উপস্থিতিতে ফুটপাতের ওই দোকানগুলি ভেঙে দেওয়া হয়। যদিও এই নিয়ে পুলিশি পদক্ষেপের বিরুদ্ধে ক্ষোভপ্রকাশ করেছেন স্থানীয় ব্যবসায়ীরা। ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, কোনও রকম নোটিস না-দিয়েই হঠাৎ করে এসে দোকান ভেঙে দেয় পুলিশ। প্রশাসনের বিরুদ্ধে অতিসক্রিয়তার অভিযোগও তুলেছেন তাঁরা। ফুটপাতের ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, মঙ্গলবার সকালে হঠাৎ করে বিশাল বড় বাহিনী নিয়ে হাজির হয় পুলিশ। দোকানপাট ভেঙে দেওয়া হয়। যদিও এ প্রসঙ্গে মুখ খোলেননি কোচবিহার পুরসভার চেয়ারম্যান রবীন্দ্রনাথ ঘোষ। তাঁকেও সোমবার নাম করে ধমকে ছিলেন মমতা।

    উল্লেখ্য, মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশের পর সক্রিয় ভাঙড় প্রশাসনও। মঙ্গলবার সকালে খালি করা হল ভাঙড়ের নিউ বামনঘটা এলাকায় দখল হয়ে যাওয়া একটি দোতলা সরকারি ভবন। ওই ভবনের মধ্যে থাকা চেয়ার-টেবিলও সরিয়ে দেওয়া হয়। যাঁরা এত দিন দখল করে ওখানে কাজকর্ম করছিলেন তাঁদেরও সরিয়ে দেওয়া হয় অন্যত্র। প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে, সাড়ে বারো হাজার বর্গফুটের বিল্ডিংটি সংস্কার করে সেখানে ‘ফুড প্রসেসিং ইউনিট’ তৈরি করবে খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ দফতর।

  • Link to this news (আনন্দবাজার)