মঙ্গলবার লোকসভা স্পিকার মনোনয়ন নিয়ে যখন রাজধানী দিল্লি সরগরম, তখনই সংসদ চত্বরে দাঁড়িয়ে অভিষেক বলেন, ‘‘কংগ্রেসের তরফে সাংসদ কে সুরেশকে স্পিকার পদের মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে, বিরোধী জোটের সমস্ত শরিকদের সঙ্গে কথা না বলেই। এ ব্যাপারে আমাদের সঙ্গে কোনও আলোচনা হয়নি। দুর্ভাগ্যজনক। কিন্তু বলতে বাধ্য হচ্ছি এই সিদ্ধান্ত একতরফা ভাবে নেওয়া হয়েছে।’’
যদিও এই কথা বলার কিছু পরেই অভিষেককে দেখা যায় সংসদের ভিতরে রাহুল গান্ধীর সঙ্গে একান্তে কথা বলতে। তবে সেই আলোচনার পরে রাহুল আলাদা করে অভিষেকের বক্তব্যের কোনও জবাব দেননি। অভিষেকও নতুন করে কিছু বলেননি। তবে তৃণমূল সূত্রে খবর, বিষয়টি নিয়ে ক্ষুব্ধ তৃণমূল বৈঠকে বসছে, দলের কথা হবে নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গেও।
মঙ্গলবার লোকসভা স্পিকার মনোনয়ন নিয়ে সকাল থেকে দিল্লিতে শুরু হয়েছে এনডিএ-বনাম কংগ্রেসের বাগ্যুদ্ধ। এক দিকে এনডিএ-র দাবি লোকসভা স্পিকার নির্বাচন নিয়ে অযথা রাজনীতি করছে কংগ্রেস-সহ বিরোধী জোট ‘ইন্ডিয়া’। অন্য দিকে, কংগ্রেস সাংসদ রাহুল গান্ধীর বক্তব্য, শাসক গোষ্ঠী এনডিএ-র মনোনীত স্পিকারকে সমর্থন করতে তাঁরা রাজি হবে তখনই যখন সরকার তাঁদের পাল্টা শর্তটি মেনে নেবে।
কী সেই শর্ত? রাহুল বলেছেন, লোকসভার রেওয়াজ হল, ডেপুটি স্পিকার বিরোধী শিবির থেকে বাছতে হবে। সেই রেওয়াজ মানতে হবে এনডিএ সরকারকেও। যদি তা না হয়, তবে এনডিএ-র মনোনীত স্পিকারকে বিরোধীরা সমর্থন করবে না। এ পর্যন্ত রাহুলের বক্তব্য নিয়ে ‘ইন্ডিয়া’র কোনও শরিকই আপত্তি তোলেননি। গোল বাধে স্পিকার নির্বাচনে আচমকাই কংগ্রেসও আলাদা করে নিজেদের প্রার্থী ঘোষণা করার পরে।
রাহুল বলেন, রাজনাথ সিংহ সরকারের তরফে এ ব্যাপারে দরাদরি করতে এসেছিলেন কংগ্রেসের সভাপতি মল্লিকার্জুন খড়্গের সঙ্গে। কিন্তু বিরোধীদের শর্ত শোনার পরে তিনি আর এ ব্যাপারে কোনও সমাধানসূত্রে পৌঁছনোর চেষ্টা করেননি। এ ব্যাপারে আর ফোনই করেননি খড়্গেকে। যদিও রাজনাথ সেই অভিযোগ অস্বীকার করেন। এনডিএ-ও রাজনাথের হয়ে বলে, প্রতিরক্ষামন্ত্রী চেয়েছিলেন স্পিকার নির্বাচনের পরে ডেপুটি স্পিকার নির্বাচন নিয়ে আলোচনা করতে। কিন্তু কংগ্রেস তাতে রাজি হয়নি।
মঙ্গলবার যখন এ নিয়ে কংগ্রেস বনাম এনডিএ-র কথা ছোড়াছুড়ি চলছে তখন হঠাৎই গ্রেস সুরেশকে ওম বিড়লার বিরুদ্ধে লোকসভার স্পিকার পদপ্রার্থী হিসাবে ঘোষণা করে কংগ্রেস। আর তা নিয়েই আপত্তি তোলে তৃণমূল।