• কলকাতায় ব্রিটানিয়ার বিস্কুট আর তৈরি হবে না, বন্ধ হতে চলেছে তারাতলার কারখানা
    আনন্দবাজার | ২৬ জুন ২০২৪
  • স্বাধীনতার বছরে চালু হয়েছিল। ১৯৪৭ সালে। স্বাধীনতার ৭৭তম বছরে বন্ধ হয়ে গেল কলকাতার তারাতলার কারখানাটি। সোমবারই সেই ঘোষণা করেছে ব্রিটানিয়া ইন্ডাস্ট্রিজ়। এই মুহূর্তে ওই কারখানায় চাকরি করা কর্মীদের স্বেচ্ছাবসর প্রকল্প দেওয়া হয়েছে এবং সকলকেই তা গ্রহণ করেছেন বলেও সংস্থার তরফে জানানো হয়েছে।

    ব্রিটানিয়া সংস্থার প্রথম কারখানাটি তৈরি হয় মুম্বইয়ে। এর পরেই কলকাতার তারাতলার কারখানাটি চালু হয়। সোমবার সংস্থার পক্ষে স্টক এক্সচেঞ্জকে কারখানা বন্ধের কথা জানানো হয়েছে। এটাও জানানো হয়েছে যে, সংস্থায় এখন কাজ করেন ১৫০ জন কর্মী। তাঁরা সকলেই স্বেচ্ছাবসর প্রকল্প গ্রহণ করেছেন। এই কারখানা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় সংস্থার আয় বা বাংলার রাজস্বের ক্ষেত্রে বিশেষ প্রভাব ফেলবে না।

    এটাই প্রথম নয়। এর আগে মুম্বই এবং চেন্নাইয়ের পুরনো কারখানাও বন্ধ করেছে ব্রিটানিয়া। এ বার কলকাতারটি বন্ধ হচ্ছে। সংস্থা সূত্রে জানা গিয়েছে, মোট ১১ একর জমির উপরে তারাতলার কারখানাটি। কলকাতা বন্দর কর্তৃপক্ষের লিজ় নেওয়া জমিতে কারখানাটি রয়েছে। ২০১৮ সালে শেষ বার রেজিস্ট্রেশন হয়েছে। তাতে জমিটি ২০৪৮ সাল পর্যন্ত সংস্থার হাতেই থাকবে। কেন এই কারখানাটি বন্ধ করা হচ্ছে সে বিষয়ে সংস্থার পক্ষে স্পষ্ট করে কিছু জানানো হয়নি। তবে সূত্রের দাবি, পুরনো এই কারখানাটি এখন চালিয়ে যাওয়া আর আর্থিক ভাবে লাভজনক নয় সংস্থার পক্ষে।

    তারাতলার কারখানাটির সঙ্গে না হলেও, ব্রিটানিয়ার সঙ্গে বাঙালির সম্পর্কে দীর্ঘ দিনের। এবং তা এখনও অটুট। বিজ্ঞাপনের ‘দাদু খায়, নাতি খায়, ব্রিটানিয়া থিন অ্যারারুট বিস্কুট’ ‘ক্যাচলাইন’ এখনও মুখে মুখে ফেরে। সংস্থার তৈরি হরেক স্বাদের বিস্কুট এবং অন্যান্য খাদ্য সামগ্রীও বেশ জনপ্রিয়। তবে এখন আধুনিক উৎপাদন শুরু হওয়ায় বড় শহরের পুরনো কারখানাগুলি বন্ধ করার সিদ্ধান্ত আগেই নেয় ব্রিটানিয়া। তারই পরিণতিতে এ বার তারাতলার কারখানায় তালা ঝুলতে চলেছে। তবে একটা সময়ে এই কারখানা সংস্থার কাছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ছিল। উৎপাদন ছাড়াও পরিকল্পনা থেকে বিপণনের ক্ষেত্রে পূর্ব ভারতের কেন্দ্র ছিল তারাতলার কারখানাটি।

    তবে বাংলায় নতুন করে বিনিয়োগের পরিকল্পনা রয়েছে ব্রিটানিয়ার। ২০১৮ সালেই সংস্থার এজিএম হয়েছিল কলকাতা। সেই সময় সংস্থার চেয়ারম্যান নুসিল ওয়াদিয়া ঘোষণা করেছিলেন, ৩০০ থেকে ৩৫০ কোটি টাকা বিনিয়োগ হবে বাংলায় সংস্থার নতুন কারখানা তৈরির জন্য। প্রসঙ্গত, তারাতলা ছাড়াও বাংলায় আরও একটি উৎপাদন কেন্দ্র রয়েছে ব্রিটানিয়ার। হুগলির ডানকুনিতে সেই কারখানাটি অবশ্য সংস্থার নিজস্ব নয়। অন্যের মালিকানাধীন কারখানায় চুক্তিভিত্তিক উৎপাদন হয়। সেটি এখনও চালু থাকছে। প্রসঙ্গত, ভারতের অন্যতম প্রধান খাদ্য উৎপাদনকারী সংস্থা ব্রিটানিয়ার তৃতীয় বৃহত্তম বাজার পশ্চিমবঙ্গ।

  • Link to this news (আনন্দবাজার)