এই সময়: কোথাও রাস্তার উপর ডাঁই হয়ে পড়ে রয়েছে উচ্ছিষ্ট খাবারের অংশ। আবার কোথাও রাস্তার ধার থেকে ফুটপাথের ২৫ শতাংশ জায়গা দখল হয়ে রয়েছে বালি-পাথরে। আর্বজনা উপচে পড়ছে, এমন ভ্যাটের সংখ্যাও কম নয়। কোনও গ্রামীণ এলাকা বা মফস্সল নয়, মঙ্গলবারের এ ছবি রাজ্যের স্মার্ট শহর বলে পরিচিত সল্টলেকের!অথচ সোমবারই পুর-বিষয়ক প্রশাসনিক বৈঠকে খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেন সল্টলেকের রাস্তার ঠিক ভাবে সাফাই না-হওয়া নিয়ে। তিনি বলেন, ‘বিধাননগরের কাউন্সিলাররা কি কিছু দেখে না! এ বার কি আমাকে রাস্তায় ঝাঁট দিতে বেরোতে হবে?’
মুখ্যমন্ত্রী ওই ভাষায় ভর্ৎসনা করার পর দিন, মঙ্গলবার দুপুর ১২টা নাগাদ সল্টলেকের পিএনবি মোড় সংলগ্ন ফুটপাথে গিয়ে দেখা গেল, সেখানে প্লাস্টিকের প্যাকেটের পড়ে রয়েছে খাবারের উচ্ছিষ্ট। আবার বিডি, একে ব্লকের বিভিন্ন জায়গায় ফুটপাথ থেকে শুরু করে রাস্তা— দখল করে রয়েছে নির্মাণ সামগ্রী। একই ছবি সিডি, সিকে, একে ব্লকেও। সকালে রাস্তায় ঝাঁট পড়েনি। সংগ্রহ করা হয়নি ভ্যাটের আর্বজনাও।
মুখ্যমন্ত্রীর ক্ষোভ প্রসঙ্গে বিধাননগরের মেয়র কৃষ্ণা চক্রবর্তী এ দিন বলেন, ‘দিদি যদি বকেনও, সেটা আমার কাছে আশীর্বাদ। সেটা আমার কাছে শিক্ষা। সেটাকে আমরা সংশোধন করব।’ মেয়রের সংযোজন, ‘দিদি যা যা বলেছেন, যেখানে যেখানে খামতি রয়েছে, সে সব দেখা হবে।’
দীর্ঘদিন ধরে সল্টলেকের সিএল ব্লকের বাসিন্দা, অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি সৌমিত্র সেনের বক্তব্য,‘মাঝে তো ভালোই কাজ হচ্ছিল। তবে ইদানীং রাস্তাঘাট সাফাইয়ের কাজ সে ভাবে হচ্ছে না।’ সল্টলেকের বাসিন্দাদের সংগঠন, বিধাননগর ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের সদস্য কুমারশঙ্কর সাধু বলছেন,‘সল্টলেকের মতো স্মার্ট শহরে দিনে দু’বার করে ঝাঁট দেওয়া উচিত। কিন্তু অনেক ওয়ার্ডে একবারও ভালো ভাবে ঝাঁট পড়ে না।’
বাসিন্দাদের একাংশের বক্তব্য, মুখ্যমন্ত্রীর ধমকের পরে ছবিটা বদলাবে ঠিকই, কিন্তু সেটা কত দিনের জন্য, তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে। বিডি ব্লকের মাধবী চৌধুরী মনে করেন, ‘সরকারের শীর্ষস্তর থেকে নিয়মিত নজরদারি না-হলে কয়েক সপ্তাহ রাস্তাঘাট সাফাইয়ের ক্ষেত্রে সক্রিয়তা থাকবে। তার পর সব কিছু আগের মতো হয়ে যাবে।’
সিটি সেন্টার এলাকার কাউন্সিলার তুলসী সিনহা রায় অবশ্য দাবি করছেন, ‘রাস্তা সাফাই ঠিক ভাবেই হয়। কিন্তু ঝাঁট দেওয়ার পরেও বাসিন্দাদের একাংশ রাস্তায় আর্বজনা ফেলেন। বাসিন্দারা সচেতন না-হলে পরিস্থিতির উন্নতি সম্ভব নয়।’