এই সময়: সরকারি অফিসে বিদ্যুৎ অপচয় ঠেকাতে একদিন আগেই কড়া বার্তা দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তারপরই বিদ্যুত অপচয় রোধে কোমর বেঁধে নেমে পড়লো দপ্তরগুলি। বিদ্যুত বিল কমাতে সমস্ত দপ্তর থেকেই আলাদা করে অ্যাডভাইসারি পাঠানো হচ্ছে অফিসারদের কাছে। কার কত টাকা বিদ্যুৎ বিল বকেয়া রয়েছে তার সঠিক হিসেব পাঠাতে বলা হয়েছে।সেই মতো বকেয়া বিদ্যুৎ বিলের উপর যে সুদ ও জরিমানা চাপানো হয় তা মকুবের জন্য বিদ্যুৎ দপ্তরের কাছে অনুরোধ জানানো হবে। সরকারি অফিসে অহেতুক লাইট, ফ্যান কিংবা এসি যাতে চালু না থাকে সে জন্য বিভাগীয় আধিকারিকদের কাছে বিশেষ বার্তা পাঠানোর পরে মঙ্গলবার থেকেই তার প্রতিফলন চোখে পড়তে শুরু করেছে।
রাজ্য প্রশাসনের সদর নবান্নতে মুখ্যমন্ত্রী ছাড়াও একাধিক মন্ত্রী ও সচিবরা বসেন। রাজ্য পুলিশের ডিজি, এডিজি আইনশৃঙ্খলা সহ পুলিশের একাধিক শীর্ষ কর্তার অফিস রয়েছে এখানে। নিরাপত্তার কারণে নবান্নের ১৪ তলা ভবনের সমস্ত ফ্লোরেই সিসি ক্যামেরা বসানো রয়েছে। ফলে দিনরাত আলো জ্বলতেই থাকে। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী বিদ্যুতের বিল নিয়ে অসন্তোষ ব্যক্ত করার পরে নবান্নের ছবি অনেকটা বদলে গিয়েছে।
নবান্নের সিংহভাগ আলো এদিন জ্বলানো হয়নি। যে সব মন্ত্রীরা এদিন তাঁদের দপ্তরে আসেননি সেই ঘরগুলোতে আলো বন্ধ রাখা হয়েছিল। মহাকরণ, নবমহাকরণ, বিকাশ ভবন, নগরোন্নয়ন দপ্তর, খাদ্যভবন, পঞ্চায়েত ভবনেও অফিসে লোক না থাকলে আলো, পাখা বন্ধ করে রাখতে বলা হয়েছে।
কয়েক বছর আগে পর্যন্ত অধিকাংশ সরকারি দপ্তরের বিদ্যুৎ বিল মেটাতো পূর্ত দপ্তর। নিজের ঘাড় থেকে বোঝা কমানোর জন্য সম্প্রতি তারা সেই দায়িত্বভার হস্তান্তর করেছে সংশ্লিষ্ট জেলা কর্তৃপক্ষের হাতে। ফলে এখন থেকে তাদের বকেয়া বিদ্যুৎ বিল মেটানোর ব্যবস্থা করতে হবে। ডব্লুবিএসইডিসিএলকে চিঠি দিয়ে সে কথা জানিয়ে দিয়েছে পূর্ত দপ্তর।
নবান্ন সূত্রের খবর, বিভিন্ন সরকারি সংস্থার মিলিয়ে প্রায় ১৬০০ কোটি টাকার বিদ্যুৎ বিল বকেয়া রয়েছে। তার মধ্যে সবার উপরে রয়েছে জলসম্পদ উন্নয়ন দপ্তর। তাদের বকেয়ার পরিমাণ ৫০০ কোটি টাকা। নগরোন্নয়ন দপ্তরের প্রায় ৩৫০ কোটি টাকার বিদ্যুৎ বিল বকেয়া। পঞ্চায়েত দপ্তরের কাছ থেকে পাওনা প্রায় ৩২০ কোটি। জনস্বাস্থ্য কারিগরি দপ্তরের বকেয়া প্রায় ১১০ কোটি টাকা। পূর্ত দপ্তরের বকেয়া বিদ্যুৎ বিলের পরিমাণ প্রায় ১২০ কোটি টাকা।