এই সময়, হাওড়া: মুখ্যমন্ত্রীর বকা খেয়েই হাওড়ায় কিছু বেআইনি বাড়ি ভাঙার কথা জানাল পুরসভা। হাওড়া শহর জুড়ে বেআইনি বাড়ির রমরমা। যে ভাবে দিনের পর দিন শহর জুড়ে বেআইনি নির্মাণ বাড়ছে তাই নিয়ে সোমবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নবান্নের সভাঘরে প্রশাসনিক কর্তাদের কার্যত এক হাত নেন।মুখ্যমন্ত্রী ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘সরু গলির মধ্যে ৯ থেকে ১০ তলা বাড়ি তৈরি হচ্ছে। দমকলের গাড়ি ঢুকতে পারে না। এর পিছনে বড়সড় দুর্নীতি আছে।’ এর পরেই নড়েচড়ে বসে হাওড়া পুরসভা। পুরসভার পক্ষ থেকে শহরের বেআইনি বাড়িগুলোর উপর নজরদারি বাড়ানোর কথা বলা হয়। এর জেরে বেশ কিছু বাড়ি ভেঙে ফেলা হবে বলে জানিয়েছেন পুরসভার প্রশাসক মণ্ডলীর চেয়ারম্যান সুজয় চক্রবর্তী।
মঙ্গলবার তিনি জানান, বৃহস্পতিবার হাওড়া পুরসভার উদ্যোগে পুলিশ ও প্রশাসনের সমস্ত ব্যক্তিদের নিয়ে একটি বৈঠক ডাকা হয়েছে।বাসিন্দাদের অভিযোগ, হাওড়া শহরের বুকে যত্রতত্র বেআইনি বাড়ি ছড়িয়ে রয়েছে। বেশির ভাগ জায়গায় পুরসভা হয়তো তিন তলা বাড়ির অনুমতি দিয়েছে। কিন্তু প্রোমোটাররা বেআইনি ভাবে উপরের আরও তিন থেকে চারটি ফ্লোর বাড়িয়ে নিচ্ছেন।
এমনকী গলির মধ্যেও অবাধে বহুতল নির্মাণ চলছে। মূলত প্রোমোটাররা অতিরিক্ত লাভের জন্যে এই কাজ করছে বলে অভিযোগ। পুরসভার নজরদারি না থাকায় এই ধরনের ঘটনা বাড়ছে বলে দাবি বাসিন্দাদের। এ ব্যাপারে পুর আইন আরও কঠোর হওয়া উচিত বলে জানিয়েছেন জেলার মন্ত্রী অরূপ রায়।
হাওড়া পুরসভার প্রশাসক মণ্ডলীর চেয়ারম্যান সুজয় চক্রবর্তী বলেন, ‘নজরদারি চালানোর মতো পুরসভায় ইঞ্জিনিয়ারের সংখ্যা কম। বাড়ি ভাঙার জন্য একটি ডিমোলিশন স্কোয়াড আছে। যার ফলে বেআইনি বাড়ি ভাঙতে অসুবিধা হচ্ছে। তবে পুরসভার পক্ষ থেকে গত তিন বছরে পুলিশকে সঙ্গে নিয়ে ১২৫টি বেআইনি বাড়ি ভাঙা হয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘বেশির ভাগ বেআইনি বাড়ি সাত-আট বছর আগে তৈরি হয়েছে। সেখানে মানুষ বাস করেন। তাই হঠাৎ তাঁদের বাড়ি ভেঙে ফেলার সমস্যাও আছে। তার কারণ এর সঙ্গে মানবিকতার সম্পর্ক জড়িত। তাই যে সব বাড়িতে মানুষ এখন বসবাস করে না ওই সব বাড়ি ভাঙা হচ্ছে।’ তবে বাড়ি ভাঙার ক্ষেত্রে নানা ধরনের আইনি জটিলতাও রয়েছে বলে তিনি জানান।