এই সময়, ভাঙড়: সরকারি জায়গা বেদখল হওয়া নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর কড়াকড়ির পরেই তড়িঘড়ি ভাঙড়ের একটি সরকারি ভবন খালি করাল প্রশাসন। মঙ্গলবার ভাঙড়ের নিউ বামনঘটা এলাকায় ওই বিল্ডিংটি খালি করানো হয়। বিল্ডিং থেকে চেয়ার, টেবিল, বেডিং সব সরিয়ে দেওয়া হয়। যাঁরা এতদিন সরকারি ভবন দখল করে রেখেছিলেন তাঁরাও সরে যান অন্যত্র। ফলে সাড়ে বারো হাজার বর্গফুটের বিল্ডিং ফিরে পেল প্রশাসন।এবার বিল্ডিং সংস্কার করে ফুড প্রসেসিং ইউনিট তৈরি করবে খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ দপ্তর। কাজের জন্য বরাত দেওয়া হয়েছে কেএমডিএকে। মঙ্গলবার বিল্ডিং খালি করার জন্য কেএমডিএ, খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ দপ্তর, ভাঙড় ২ ব্লকের বিডিও ও কলকাতা লেদার কমপ্লেক্স থানার ওসি এসেছিলেন।
খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ ও প্যাকেটজাত করার জন্য অনেক বছর আগে ভাঙড়ের বামনঘাটার হাদিয়া মৌজার ৯৫২/৯৯৩ নং প্লটে একটি ফুড প্রসেসিং ইউনিট তৈরির জন্য বিল্ডিং নির্মাণ করে কৃষি বিপণন ও উদ্যান পালন দপ্তর। অভিযোগ, ওয়েটল্যান্ড অথরিটির জমিতে ওই ইউনিটের জন্য সাড়ে বারো হাজার স্কোয়ার ফিটের দোতলা বিল্ডিংটি তৈরি হলেও জমিটি খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ দপ্তরের নামে হস্তান্তর করা হয়নি। বাম আমলে শাসক দলের কোন্দলে বিল্ডিংটি খালিই পড়েছিল।
দীর্ঘদিন ধরে বাসন্তী রাজ্য সড়কের ঢিল ছোঁড়া দূরত্বে বিশ বছরেরও বেশি সময় ধরে খালি এই বিল্ডিংয়ে অসামাজিক কাজকর্ম বাড়ছিল। এরপর এলাকার বাসিন্দারাই ওই বিল্ডিংয়ে একটি আশ্রম গড়ে তোলেন। সেখানে এক গুরুদেব ও তাঁর কিছু শিষ্য থাকা শুরু করেন।
১১ জুন মুখ্যমন্ত্রী ভাঙড়ের এই সরকারি বিল্ডিং দখল হওয়া নিয়ে উষ্মা প্রকাশ করেন। তারপর বিল্ডিংয়ের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে ভাঙড় ২ ব্লকের বিডিওর কাছে রিপোর্ট চায় জেলা প্রশাসন। ১৩ তারিখ বিডিও পার্থ বন্দ্যোপাধ্যায় ওই বিল্ডিং পরিদর্শনের পাশাপাশি বামনঘাটা পঞ্চায়েত ও গ্রামের মানুষের সঙ্গে কথা বলেন। দেখা যায় সাড়ে বারো হাজার বর্গফুটের বিল্ডিংয়ের একটি অংশ দখল করে আশ্রম চলছে।
বিডিও কথা বলেন আশ্রমের লোকজনের সঙ্গে। সোমবার নবান্নে মুখ্যমন্ত্রীর প্রশাসনিক বৈঠকের পর মঙ্গলবার ঘটনাস্থলে যান কেএমডিএ, কৃষি বিপণন ও উদ্যান পালন দপ্তরের আধিকারিক, বিএলআরও, বিডিও, ওসিরা। সকলের উপস্থিতিতে বিল্ডিং থেকে দখলকারীদের সমস্ত মালপত্র সরিয়ে দেওয়ার কাজ শুরু হয়।
কেএমডিএর এক কর্তা জানিয়েছেন, এখানে নতুন করে খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ ইউনিট গড়া হবে। খুব শীঘ্র সেই কাজ শুরু হবে। স্থানীয় তৃণমূল নেতা প্রদীপ মণ্ডল বলেন, ‘এলাকায় ৪১ বিঘা সরকারি খাস জমি আছে। তার অনেকটাই দখল হয়ে গিয়েছে। সেগুলোও ফেরত নিক সরকার।’