• ইতিহাস নিয়ে গবেষণার ইচ্ছা, পিএইচডির জন্য ইন্টারভিউ দিলেন জেলবন্দি অর্ণব
    এই সময় | ২৬ জুন ২০২৪
  • সংশোধনাগার থেকে বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ে এসে ইতিহাসে পিএইচডি করার জন্য ইন্টারভিউ দিলেন প্রাক্তন মাওবাদী নেতা অর্ণব দাম। বুধবার সকালে হুগলি সংশোধনাগার থেকে পুলিশি প্রহরায় বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ে নিয়ে আসা হয় ইন্টারভিউের জন্য। এর আগে তিনি ইগনু থেকে ইতিহাসে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন।জেলে বসেই সেট পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন অর্ণব। এরপর চুঁচুড়া সংশোধনাগার কতৃপক্ষ অর্ণবের পিএইচডি করার ইচ্ছার কথা বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয় কতৃপক্ষকে জানায়। সেইমতো বিশ্ববিদ্যালয় কতৃপক্ষ জানায় আইন মেনে তিনি পিএইচডি করতেই পারেন। এরপরই সংশোধনাগার কতৃপক্ষের মাধ্যমে অর্ণব আবেদন জানায় পিএইচডি করার জন্য।

    সংশোধনাগার কতৃপক্ষ আজ সকাল ৯.৩০ মিনিট নাগাদ কড়া পুলিশি ঘেরাটোপে তাঁকে নিয়ে বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ে উপস্থিত হন। তারপর ইন্টারভিউ হয়ে যাওয়ার পর কিছুক্ষণের মধ্যেই তাঁকে নিয়ে চলে যায় সংশোধনাগার কতৃপক্ষ।

    অর্ণব পশ্চিম মেদিমীপুরের শিলদা ইএফআর ক্যাম্পে হামলায় অভিযুক্ত ছিলেন। গত ২৯ ফেব্রুয়ারি সাজা ঘোষণার পর প্রথমে পশ্চিম মেদিনীপুর জেল তারপর গত ১৭ মার্চ থেকে হুগলি জেলা সংশোধনাগারে বন্দি রয়েছেন তিনি। জেলে তিনি পিএইচডি করার সুযোগ দেওয়ার আর্জি জানিয়েছিলেন। বিচারক সেটা তাঁর আদেশে নথিভুক্তও করে সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষকে তা বিবেচনা করতে বলেছিলেন। কিন্তু জেলে আসার পর কেউ তার আবেদনকে বিশেষ সাড়া দেয়নি বলে অভিযোগ। সেজন্য অর্ণব অনশন শুরু করবেন ঘোষণা করেন। এপিডিআর নাম একটি মানবাধিকার সংগঠন অর্ণবের দাবিকে সমর্থন জানিয়ে হুগলি জেল কর্তৃপক্ষকে অবিলম্বে ব্যবস্থা নিতে অনুরোধ জানায়।

    কারা কর্তৃপক্ষ অনুমতি দেওয়ায় ইন্টারভিউর ব্যবস্থা হয়। আজ বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ে সশরীরে হাজির হয়ে মৌখিক ইন্টারভিউ দেন। হুগলি সংশোধনাগার সূত্রে খবর, জেলের ভিতরে লাইব্রেরি আছে সেখান থেকে বই নিয়ে পড়াশোনা করেন অর্ণব। মৌখিক ইন্টারভিউতে পাশ করলে তিনি ইতিহাসে গবেষণা করবেন বলে জানা গিয়েছে।

    প্রসঙ্গত, গারদের ভেতর থেকেই অর্ণব প্রথম শ্রেণিতে ইতিহাসে স্নাতক হন। এরপর স্নাতকোত্তরেও ৬৬ শতাংশ নম্বর পেয়ে প্রথম শ্রেণিতে পাশ করেন তিনি। উত্তীর্ণ হন সেট পরীক্ষাতেও। ১৯৯৮ সাল নাগাদ তৃতীয় বর্ষে পড়াকালীন খড়্গপুর আইআইটি-র পাঠ অসমাপ্ত রেখে অর্ণব যোগ দেন মাওবাদী সংগঠনে। পুরুলিয়া-ঝাড়খণ্ডের পাহাড়ে-জঙ্গলে ডেরা ছিল তাঁর। সংগঠনে ‘ভানু’, ‘সূর্য’, ‘মাস্টারদা’ নামেও ডাকা হতো অর্ণবকে। 'কমরেড বিক্রম' নামেও পরিচিত ছিলেন মাওবাদী সংগঠনের সদস্যদের কাছে।
  • Link to this news (এই সময়)