ক্যালেন্ডারে ভরা আষাঢ, তবু দক্ষিণবঙ্গে বৃষ্টির তেমন দেখা নেই। একই সঙ্গে তাল মিলিয়ে বাজারে দেখা নেই রূপালি শস্য ইলিশেরও। তাতে যেমন হতাশ বিক্রতারা, মনখারাপ ক্রেতাদেরও। খোঁজ নেওয়া গেল মানিকতলা বাজারে। প্রতিদিন এখানকার মাছের বাজারে ভিড় উপচে পড়ে। কিন্তু কোথায় কী! জুনের শেষ প্রান্তে এসেও হাতে গোনা কয়েকজন বিক্রেতার সামনে ঝুড়িতে বরফে শুয়ে রয়েছে ইলিশ। ক্রেতারা আসছেন, কিনছেন, তবে দাম দেখে অনেকেই ফিরেও যাচ্ছেন।
মানিকতলা বাজারে দুদশকের বেশি সময় ধরে মাছ বিক্রি করেন প্রদীপ মণ্ডল। জানালেন, সাধারণত কলকাতার এই বাজারে ইলিশের জোগান আসে রায়দিঘি, নামখানা, ডায়মন্ডহারবার, কাকদ্বীপ থেকে। শিয়ালদা থেকে ছড়িয়ে যায় শহরের বাজারে বাজারে। ইলিশের এবার বাজার কেমন? জানালেন, 'বর্ষা নেই, মাছের যোগান এবার খুব কম। মাছের দামও এবার ঊর্ধমুখী। আর বর্ষা আসেনি বলে ইলিশের উপর ঝাঁপিয়েও পড়ছেন না ক্রেতারা। ভরা বর্ষা ছাড়া জমে না।' কেমন দাম যাচ্ছে মানিকতলায়? জানা গেল, ডায়মন্ডহারবারে যে মাছের দাম ১১০০ টাকা কেজি, ডায়মন্ডহারবার থেকে কলকাতার বাজারে আসতে আসতে দাম বেড়ে যায় শ' খানেক। গাড়ি ভাড়া, শ্রমিকের খরচ, বরফ সব মিলিয়ে ওই মাছের কেজি হয়ে যাচ্ছে ১৩০০ টাকা। একটু ছোট ইলিশের কেজি ৭০০-৮০০ টাকা বুধবারের বাজারে। কেউ কেউ বলছেন, ক্রেতারা এসে খোঁজ করছেন কাঁচা ইলিশের। সেটা কী? কাঁচা ইলিশ অর্থাৎ একেবারে টাটকা মাছ, বরফ ছাড়া। মাছের যোগান কম থাকায় কাঁচা মাছ বেশি থাকছে না বাজারে। ইলিশ কিনতেই বাজারে এসেছিলেন রামানন্দ পাল। ১৩০০ টাকা কেজি দরে মাছ কিনলেন তিন কেজি। বললেন বাড়িতে পরিকল্পনা রয়েছে, ইলিশ সরষে আর ইলিশ ভাপা করার। তবে মাছ কিনতে এসে কিছুটা হতাশ মনোজ ঘোষ। বাগুইহাটি থেকে ভালো মাছের খোঁজে মানিকতলায় এসেছিলেন। মাছের যোগান দেখে মন ভার। মানিকতলা বাজার ব্যবসায়ী সমিতির জয়েন্ট সেক্রেটারি বাবলু দাস বলছেন, 'ক্রেতারা নিরাশ হচ্ছেন ঠিকই, তেমনি আমাদেরও বাজার খারাপ। আশা করছি বৃষ্টি হলে আগামী মাসে ভাল মাছ উঠবে।'