সাবির জামান, লালগোলা: ফের বোমা বিস্ফোরণে জখম শিশু। এবার ঘটনাস্থল মুর্শিদাবাদের লালগোলা। বল ভেবে বোমা নিয়ে খেলা করতে গিয়ে বিপত্তি। জখম দুই স্কুলপড়ুয়া। তাদের দুজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে চলছে চিকিৎসা। জখম দুজন সম্পর্কে একে অপরের ভাই-বোন বলেই জানা গিয়েছে।
লালগোলা থানার নতুনদিয়াড় চাইপাড়ার বাসিন্দা কাঞ্চন মণ্ডল কর্মসূত্রে বছরের বেশির ভাগ সময় বাড়ির বাইরে থাকেন। বাড়িতে স্ত্রী বাসন্তী দেবী তাঁর দুই ছেলেমেয়ে রিয়া ও অর্ককে নিয়ে থাকেন। রিয়া পঞ্চম এবং অর্ক চতুর্থ শ্রেণির পড়ুয়া। বুধবার বিকেলে দুই ভাইবোন বর্তমান ভাড়া বাড়ি থেকে প্রায় পাঁচশো মিটার দূরের ভাগীরথী নদীরে ধারে তাঁদেরই পরিত্যক্ত বাড়িতে খেলতে যায়। বাড়ির মধ্যে পড়ে থাকা দুটি বোমাকে বল ভেবে লাথি মারতেই বিকট আওয়াজে বিস্ফোরণ হয়। বিস্ফোরণে দুই ভাইবোন ঝলসে যায়। রক্তাক্ত অবস্থায় মাটিতে লুটিয়ে পড়ে। বোমা বিস্ফোরণের আওয়াজ শুনতে পেয়ে স্থানীয়রা ছুটে আসেন। দুজনকে উদ্ধার করে জঙ্গিপুর মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে তাদের মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে পাঠানো হয়। তাদের দুজনের শারীরিক অবস্থা আশঙ্কাজনক।
জখম দুই শিশুর মা বাসন্তী মণ্ডল বলেন, “দুপুরে খাওয়াদাওয়া করে ঘরেই ছিল। কখন যে ওরা বেরিয়ে গিয়েছে জানতেই পারিনি। পরে পাড়ার লোকজনের মুখে বোমা বিস্ফোরণের কথা জানতে পারি।” স্থানীয় বাসিন্দা মনোরঞ্জন মণ্ডল বলেন,”বাড়িতে বসেছিলাম। হঠাৎ বিকট আওয়াজ শুনে বাড়ি থেকে ছুটে বেরিয়ে আসি এবং নদীর ধারে পরিত্যক্ত বাড়ি থেকে ধোঁয়া বেরতে দেখি। তখন প্রতিবেশীদের ডেকে নিয়ে ওখানে ছুটে যাই।”
এদিকে, বোমা ফেটে দুই ভাই-বোন জখম হওয়ার ঘটনায় এলাকায় রীতিমতো আতঙ্ক ছড়িয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দা ভজহরি মণ্ডল বলেন,”এলাকার যেখানে সেখানে বোমা পড়ে থাকছে। ছেলেমেয়েরা এদিক ওদিক যায়। আমরা আতঙ্কের মধ্যে থাকি। পুলিশ পদক্ষেপ না নিলে আরও বড় ঘটনা ঘটে যেতে পারে।” এই বিষয়ে লালগোলা থানার এক পুলিশ আধিকারিক বলেন,”নদীর ধারে পরিত্যক্ত বাড়িতে বোমা রাখা ছিল। বল ভেবে খেলতে গেলে বোমা ফেটে দূর্ঘটনাটি ঘটে। কে বা কারা, কী উদ্দেশ্যে বোমাগুলি মজুত রেখেছিল জানতে তদন্ত শুরু করা হয়েছে।”