রাজ্যের অন্যতম ব্যস্ততম স্টেশন শিয়ালদহ। প্রতি দিন লাখ লাখ যাত্রী এই স্টেশন দিয়ে যাতায়াত করেন। মূলত শহরতলি থেকে রুটিরুজির টানে মানুষ আসেন কলকাতায়। কেউ কেউ আবার কলকাতা থেকে শহরতলিতে যান। এই সব মানুষদের অন্যতম ভরসা ট্রেন। সকাল-বিকেল অফিসটাইমে তাই মাত্রাতিরিক্ত ভিড় হয় শিয়ালদহগামী ট্রেনগুলিতে। ভিড় ঠাসা ট্রেনে সামান্য জায়গা পাওয়ার জন্য রীতিমতো ‘ধাক্কাধাক্কি’ পরিস্থিতি হয় যাত্রীদের। তাঁদের অভিযোগ, রোজ ট্রেনে এত ভিড় হয়, তা-ও রেলের কোনও মাথাব্যথা নেই। ভিড় ট্রেন থেকে পড়ে মৃত্যুর ঘটনাও ঘটেছে সাম্প্রতিক অতীতে।
এ সব নিয়ে দীর্ঘ দিন ক্ষোভ ছিল যাত্রীদের মধ্যে। তাঁদের অভিযোগ, ব্যস্ততম সময়ে বনগাঁ, হাসনাবাদ, শান্তিপুর-সহ একাধিক লাইনে ৯ কামরার লোকাল চালায় রেল। যার ফলে ভিড় বাড়ে। সমাধান খুঁজতে গিয়ে রেল সিদ্ধান্ত নেয় শিয়ালদহের উত্তর এবং মেন শাখায় সব ট্রেন ১২ কামরার হবে। সেই কারণে শিয়ালদহের কয়েকটি প্ল্যাটফর্মের দৈর্ঘ্য বৃদ্ধি করার প্রয়োজন ছিল। সেই মোতাবেক কাজও চলছিল। সম্প্রতি সেই কাজ শেষ হয়েছে।
রেল জানিয়েছে, শিয়ালদহ ডিভিশনে প্রতি দিন প্রায় ৮৯২টি লোকাল ট্রেন চলাচল করে। কিন্তু, প্ল্যাটফর্মের দৈর্ঘ্য কম থাকার জন্য শিয়ালদহের ১ থেকে ৫ নম্বর প্ল্যাটফর্ম পর্যন্ত ১২ কামরার ট্রেন চালানো যেত না। বর্তমানে সেই সমস্যা মিটেছে। এখন শিয়ালদহ ডিভিশনে আরও বেশি সংখ্যক ১২ কামরার লোকাল ট্রেন চালানো যাবে।
রেল হিসাব দিয়ে দেখিয়েছে, ৯ কামরার তুলনায় ১২ কামরার ট্রেনে আরও বেশি সংখ্যক যাত্রী চড়তে পারবেন। প্রতি ট্রেনে অন্তত এক হাজার জন অতিরিক্ত যাত্রীর যেতে পারবেন। এতে ট্রেনের উপচে পড়া ভিড় সামলানো সম্ভব হবে। কোনও ঝামেলা ছাড়াই যাত্রীরা গন্তব্যে যেতে পারবেন।
পূর্ব রেলের শিয়ালদহ ডিভিশনে তিনটি লাইনের ট্রেন যাতায়াত করে— শিয়ালদহ দক্ষিণ, শিয়ালদহ মেন অর্থাৎ শিয়ালদহ-রানাঘাট-কৃষ্ণনগর এবং শিয়ালদহ উত্তর অর্থাৎ শিয়ালদহ-বনগাঁ শাখা। এর মধ্যে শিয়ালদহ দক্ষিণের সমস্ত লোকাল ট্রেনকে ১২ কামরারকরে দেওয়া হলেও বাকি দুই বিভাগের সব ট্রেন ১২ কামরার ছিল না। বরং বেশির ভাগ ট্রেন ছিল নয় কামরার। কিন্তু ওই ট্রেনগুলিতে যে ভিড় হয়, তাতে ১২ কামরার ট্রেনের প্রয়োজন ছিল। রেলের লক্ষ্য ছিল শিয়ালদহের সব শাখাতেই ১২ কামরার ট্রেন চালানো। সেটাই এ বার বাস্তবায়িত হল।