দ্বিতীয় হুগলি সেতুতে গাড়ির তেল শেষ? সমস্যা মেটাতে নয়া ব্যবস্থা কলকাতা পুলিশের
প্রতিদিন | ২৭ জুন ২০২৪
অর্ণব আইচ: দূরদূরান্ত থেকে এসে কলকাতায় পৌঁছনোর আগেই দ্বিতীয় হুগলি সেতুর উপর ফুরিয়ে যাচ্ছে তেল। তাই সেতুর উপর দাঁড়িয়ে পড়ছে গাড়ি। হচ্ছে যানজট। এবার সেতুর উপর যান চলাচল মসৃণ রাখতে তেলের ব্যারেল তৈরি রাখছে কলকাতা পুলিশ। সঙ্গে তৈরি থাকছে পুলিশের রেকারও। দ্বিতীয় হুগলি সেতু বা বিদ্যাসাগর সেতুতে যানজট এড়াতে হাওড়ার ট্রাফিক পুলিশের সঙ্গে সারাক্ষণই যোগাযোগ রাখছেন কলকাতা পুলিশের ট্রাফিক আধিকারিকরা।
লালবাজার জানিয়েছে, মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ পাওয়ার পরই ট্রাফিক পুলিশ অত্যন্ত তৎপর হয়। সম্প্রতি নবান্নে যাতায়াতের পথে দ্বিতীয় হুগলি সেতুর উপর যানজট চোখে পড়ে মুখ্যমন্ত্রীর। তিনি পুলিশ কমিশনারকে ফোন করে যানজটের কারণ জানতে চান। মুখ্যমন্ত্রীর ফোনের পরই মঙ্গলবার প্রথম দফায় পুলিশকর্তাদের নিয়ে বৈঠকে বসেন পুলিশ কমিশনার বিনীত গোয়েল। বুধবার তিনি অন্য পুলিশকর্তাদের সঙ্গে নিয়ে দ্বিতীয় হুগলি সেতু পরিদর্শন করেন। লালবাজারের সূত্র জানিয়েছে, কেন দ্বিতীয় হুগলি সেতুর উপর ক্রমাগত যানজট হচ্ছে, তা নিয়ে এদিন রীতিমতো তদন্ত করেন পুলিশকর্তারা। কীভাবে যানজট এড়িয়ে সেতুর যান চলাচল মসৃণ করা যায়, সেই ব্যাপারেও পুলিশকর্তারা বেশ কিছু সিদ্ধান্ত নেন।
লালবাজারের সূত্র জানিয়েছে, ট্রাফিক পুলিশের কর্তারা তদন্তের পর জানতে পারেন যে, দ্বিতীয় হুগলি সেতুর দু’টি লেনের কাজ চলছে। তাই বাকি লেনগুলির উপর চাপ পড়ছে। যানের চাপ বেশি হলে গাড়ি চলাচল ধীর হয়ে যাচ্ছে। কিন্তু হঠাৎ গাড়ি খারাপ হয়ে যাওয়া সেতুর উপর যানজটের মূল কারণ। প্রায়ই দেখা যাচ্ছে যে, সেতুর মাঝখানে যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে দাঁড়িয়ে পড়ছে গাড়ি। ঠেলে নিয়ে যাওয়ার পরও গাড়ি চালু হচ্ছে না। ঘটনাস্থলে বিদ্যাসাগর ট্রাফিক গার্ডের সার্জেন্ট বা আধিকারিকরা এসে ঠেলে সেই গাড়ি রাস্তার একপাশে নিয়ে গিয়ে যান চলাচল মসৃণ করার চেষ্টা করেন। কিন্তু বাস বা মালবাহী গাড়ির মতো বড় যান সেতুর মাঝখানে খারাপ হয়ে গেলে আশপাশ দিয়ে অন্য যান চলাচল করার সুযোগই থাকে না। সেই ক্ষেত্রে যতক্ষণ না রেকার নিয়ে এসে গাড়িটিকে সরানো হচ্ছে, ততক্ষণ সেতুর উপর যানজট থাকে। এই সমস্যা এড়াতে ট্রাফিক পুলিশ দ্বিতীয় হুগলি সেতুতে সারাক্ষণের জন্যই রেকার রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। কোনও গাড়ি খারাপ হলে তা সঙ্গে সঙ্গেই রেকারের সাহায্যে সরানো হবে।
পুলিশের দাবি, এমনও দেখা গিয়েছে যে, দূরের জেলা বা অন্য রাজ্য থেকে কলকাতার দিকে আসার সময় দ্বিতীয় হুগলি সেতুর উপরই ফুরিয়ে গিয়েছে তেল। গাড়িতে অতিরিক্ত তেলও নেই। তার ফলে আর নড়তে চড়তে পারছে না গাড়ি। আর সেই কারণেই দেখা গিয়েছে যানজট। সেই কারণেই ট্রাফিক পুলিশের পক্ষ থেকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, সেতুর উপর একসঙ্গে কয়েক ব্যারেল তেল মজুত রাখা হবে। পেট্রোল ও ডিজেল, দু’রকমেরই তেল পুলিশ মজুত রাখবে। কোনও গাড়ির তেল ফুরিয়ে গেলেও যাতে সঙ্গে সঙ্গে তেল ভরিয়ে গাড়ি চালু করা যায়, সেই ব্যবস্থাই নেওয়া হচ্ছে। এদিকে, হাওড়ার কোনা এক্সপ্রেসওয়ে অথবা অন্য কোনও রাস্তায় যানজট হলে যাতে তার প্রভাব যাতে দ্বিতীয় হুগলি সেতুতে না পড়ে, তার জন্য হাওড়া পুলিশের সঙ্গে সারাক্ষণই লালবাজার যোগাযোগ রাখবে বলে জানিয়েছে পুলিশ।