জুলাই থেকে বেআইনি নির্মাণের বিরুদ্ধে শহরজুড়ে অভিযান আরও জোরদার করতে চলেছে কলকাতা পুরসভা। গার্ডেনরিচে বেআইনি নির্মাণ ভেঙে ১২ জনের মৃত্যুর পরে শহরজুড়ে ব্যাপক অভিযান চালিয়েছিল পুরসভা। বিল্ডিং বিভাগ গার্ডেনরিচের ঘটনার পর মাসে গড়ে ১৫০টি করে বেআইনি নির্মাণ ভেঙেছে। তার পরেও নবান্নে সোমবারের প্রশাসনিক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে ধমক খেতে হয়েছে পুরকর্তাদের।তবে আদালতের নির্দেশ মতো মঙ্গলবারও আনন্দপুর এলাকায় একটি বেআইনি নির্মাণ ভেঙেছে পুরসভা। গার্ডেনরিচের ঘটনার পরে মেয়র ফিরহাদ হাকিম বলেছিলেন, ‘অঙ্কুরেই বিনাশ করতে হবে বেআইনি নির্মাণ।’ পরিকল্পনা সফল করতে শহরের ১৬টি বরোর ১৪৪টি ওয়ার্ডে নিয়মভঙ্গের অভিযোগে বিভিন্ন নির্মীয়মাণ বাড়িতে স্টপ ওয়ার্কের নোটিস ধরিয়েছিল পুরসভা।
তবে লোকসভা ভোটের কারণে বেআইনি নির্মাণের বিরুদ্ধে অভিযানে ভাটা পড়েছিল বলে বিল্ডিং বিভাগ সূত্রে জানা গিয়েছে। সেই অভিযান ফের জোরদার হচ্ছে জুলাই থেকে। বিল্ডিং বিভাগের একাধিক আধিকারিক জানাচ্ছেন, বেআইনি নির্মাণ-বিরোধী অভিযানে বড় সমস্যা হলো একটি বাড়ির অংশ ভাঙা। একটি বাড়িকে পুরোপুরি ভাঙতে তত সমস্যা হয় না। কিন্তু অধিকাংশ ক্ষেত্রেই ভাঙতে হয় বেআইনি অংশ।
হয়তো একটি বাড়ির প্ল্যান স্যাংশনের সময়ে তিনতলা পর্যন্ত নির্মাণের অনুমতি নেওয়া হয়েছিল। অথচ দেখা যায়, বাড়িটি চারতলা হয়ে গিয়েছে। আদালতে মামলা হওয়ার পরে নির্দেশ দেওয়া হলো, বেআইনি চারতলা অংশটা ভেঙে ফেলতে হবে। এই আংশিক ভাঙার ক্ষেত্রে সব থেকে বড় সমস্যা হলো যে অংশ বেআইনি নয়, সেই কাঠামোও ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা থাকে। ফলে ওই অংশের বাসিন্দারাও বেআইনি অংশ ভাঙতে বাধা দেন।
অনেক সময়ে স্থানীয় রাজনৈতিক চাপের মুখেও পড়তে হয় বিল্ডিং বিভাগের ইঞ্জিনিয়ারদের। তাঁরা পিছু হটতে বাধ্য হন। জুলাই মাসে অভিযান জোরদার করার ক্ষেত্রে বিল্ডিং বিভাগের আধিকারিকরা তাই ‘পার্শিয়াল ডেমলিশন অর্ডার’ বাস্তবায়িত করার ক্ষেত্রে সমস্যা এড়ানোর পরিকল্পনা করেছেন। চার জন উচ্চপদস্থ আধিকারিককে নিয়ে কেন্দ্রীয় দলও গড়া হয়েছে বিল্ডিং বিভাগে।