• বিধাননগর পুরনিগমের কাজে গাফিলতি, নালিশ শুনে ক্ষোভ মমতার
    এই সময় | ২৭ জুন ২০২৪
  • প্রশ্নটা তুলেছিলেন খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়- 'সল্টলেকে শুধু ডেঙ্গিই হবে, কাজ হবে না?' সেটাও ছিল এক প্রশাসনিক বৈঠক। ২০১৬। ওই বৈঠক থেকে সল্টলেকের কাউন্সিলারদের সক্রিয় হওয়ার বার্তা দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। তার পর কেটেছে ৮ বছর। সময়টা বড় কম নয়। কিন্তু পরিস্থিতির তেমন বদল ঘটেনি উপনগরীতে।গত বছর, রাজ্যে ডেঙ্গি পজি়টিভির রেটে ১ নম্বরে ছিল সল্টলেক। গত সোমবার, ২৪ জুন পুর বিষয়ক প্রশাসনিক বৈঠকে বিধাননগর পুরনিগমের কাজে বিভিন্ন গাফিলতির কথা তুলে ধরে মুখ্যমন্ত্রী তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেন। ঠিক কী হলো যে, মুখ্যমন্ত্রীর ওই রকম রুদ্রমূর্তি ধরলেন? এমনও বললেন, 'এ বার কি আমাকে রাস্তা ঝাঁট দিতে বেরোতে হবে?'

    প্রশাসন সূত্রের খবর, সল্টলেকের প্রায় প্রতিটি ব্লকেই বসবাস বর্তমান ও প্রাক্তন আইএএস ও আইপিএস অফিসারদের একাংশের, প্রাক্তন বেশ কয়েক জন বিচারপতির এবং শিল্প-সাহিত্য জগতের বিশিষ্ট জনদের। যাঁদের বেশ কয়েক জনের সরাসরি যোগাযোগ রয়েছে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে। মুখ্যমন্ত্রী তাঁদের কাছ থেকেই সল্টলেকের পুর পরিষেবা নিয়ে নিয়মিত খোঁজ নেন বলে নবান্ন সূত্রে জানা যাচ্ছে এবং সম্ভবত তাঁরাই বেশ কিছু কাল ধরে সল্টলেকের বেহাল রাস্তা, ফুটপাথ বেদখল নিয়ে নিজেদের ক্ষোভের কথা জানিয়েছেন নবান্নের শীর্ষস্তরে।

    সরকারি সূত্রের খবর, মুখ্যমন্ত্রী হওয়া ইস্তকই সল্টলেকে নাগরিক পরিষেবাকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় গুরুত্ব দেন। সল্টলেক পুরসভা উন্নীত হয় বিধাননগর পুরনিগমে। অথচ তার পরেও সল্টলেকের পুর পরিষেবার তেমন উন্নতি হয়নি বলে রাজ্য প্রশাসনের উচ্চপদস্থ আধিকারিকদের একাংশই মেনে নিচ্ছেন।

    বিধাননগর পুরনিগম সূত্রের খবর, শাসক দলেরই কয়েক জন নেতা-নেত্রীর একে অন্যকে টেক্কা দিতে চাওয়ার রাজনীতি, ইগোর লড়াইয়ে 'স্মার্ট শহর' বলে পরিচিত সল্টলেক ক্রমশ যে 'আনস্মার্ট' হয়ে পড়ছে, সেই খবরও নবান্নের শীর্ষস্তরে পৌঁছেছে। থানা ভিত্তিক পাড়ার মিটিংয়েও বহু বাসিন্দা যে পুর পরিষেবা নিয়ে ক্ষোভ উগরে দেন, সে বার্তাও পৌঁছেছে নবান্নের ১৪তলায়। এবং সে সবেরই বহিঃপ্রকাশ হয় গত সোমবারের পুর-প্রশাসনিক বৈঠকে। পুর দপ্তর সূত্রের খবর, সল্টলেকের পুর পরিষেবা নিয়ে সব কাউন্সিলারের সঙ্গে দিন কয়েকের মধ্যে বৈঠক করবেন পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম।

    পুর-বিষয়ক প্রশাসনিক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী ক্ষোভের সঙ্গে জানান, সল্টলেকের ফুটপাথে সুজিত বসু লোক বসাচ্ছেন। সুজিত বসুর বক্তব্য, 'আমি কোনও অন্যায়ে নেই। তবে দিদি যখন বলেছেন, তখন অবশ্যই ফুটপাথে লোক বসানোর বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখব। কেউ লোক বসিয়ে থাকলে অন্যায় করেছে।' বিধাননগরের মেয়র কৃষ্ণা চক্রবর্তীর বক্তব্য, 'মুখ্যমন্ত্রী যে বিষয়গুলো সামনে এনেছেন, সেগুলোয় অবশ্যই নজর দেবো।'
  • Link to this news (এই সময়)