• মমতা
    আজকাল | ২৭ জুন ২০২৪
  • আজকাল ওয়েবডেস্ক : অবৈধভাবে সরকারি জায়গা দখল হয়ে যাওয়া নিয়ে গত সোমবার রাজ্যের বিভিন্ন পুরসভা ও পুরনিগমের চেয়ারম্যান এবং মেয়রদের বিভিন্ন বিষয়ে সতর্ক করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি। তারপর থেকেই বেদখল হয়ে যাওয়া জমি দখলমুক্ত করতে তৎপর হয় পুরসভাগুলি। রাজ্যের জায়গায় জায়গায় শুরু হয় দখলদার উচ্ছেদ অভিযান। বৃহস্পতিবার এই বিষয়টি নিয়েই ফের নতুন করে বৈঠক ডাকেন মুখ্যমন্ত্রী। বৈঠকে ছিলেন বিভিন্ন জেলার জেলাশাসক, বিভিন্ন দফতরের আমলা, কলকাতার পুলিশ কমিশনার-সহ বিভিন্ন কমিশনারেটের কমিশনার এবং কর্তারা। রাজ্য প্রশাসনের শীর্ষ আধিকারিকেরাও ওই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।

    নবান্নের বৈঠকে মমতা বলেন, তাঁর লক্ষ্য হকার উচ্ছেদ নয়। 'পুরো ব্যাপারটার একটা সৌন্দর্য্য বজায় রাখতে হবে। আগুন লাগবে না এমন জিনিস দিয়ে স্টল বানাতে হবে। প্রতিটি স্টলের নম্বর থাকবে। এক এক জন হকার এক একটি স্টল পাবেন।'

    জবরদখল নিয়ে মমতা বলেন, 'গড়িয়াহাটে তো হাঁটারই জায়গা নেই। দু’টো ফুটপাথ দখল হয়ে গিয়েছে। এতে আমাদের কাউন্সিলরদের দোষ আছে। কিন্তু আমাদের তো হকারদের পুনর্বাসনের জায়গা দিতে হবে। সেই ব্যবস্থা তো আছে। আমরা এটুকু খরচ তো ওঁদের জন্য করতেই পারি।'

    হকারদের এক মাস সময় বেঁধে দিলেন মমতা। তিনি বলেন, ‘হকারদের আমি এক মাস সময় দিচ্ছি। এর মধ্যে সব গোছাতে শুরু করুন। রাস্তা পরিষ্কার রাখতে হবে। আমাদের সার্ভে চালু থাকবে। আপনাদের কোথায় জায়গা দেওয়া যায়, তা সরকার দেখবে। গোডাউনের ব্যবস্থাও করবে। কিন্তু রাস্তা দখল করা যাবে না।’

    মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘'এই ধরনের রাস্তা দখলের জন্য দায়ী রাজনৈতিক নেতা এবং পুলিশই। কাউন্সিলরদের প্রথম থেকেই এটা দেখা উচিত। কিন্তু তাঁরা দেখেও দেখছেন না। পুলিশেরা, হকার নেতারা গরীব হকারদের কাছ থেকে টাকা আদায় করছেন। করবেন না। আমি বলব, আপনারা লোভ সংবরণ করুন। জীবনধারণের জন্য যেটুকু দরকার সেটুকুতেই সন্তুষ্ট থাকুন। কিন্তু তা হচ্ছে না। এলাকার নেতারা প্রথমে ডালা নিয়ে বসিয়ে দিচ্ছে, তার পরে আর সরানো যাচ্ছে না। নিজেরাই বসাবেন, তারপরে বুলডোজ়ার চালাবেন, তা হবে না।’

    মমতা আরও বলেন, ‘কারোকে বেকার করার অধিকার আমাদের নেই। দ্রুত বিকল্প ব্যবস্থা করতে হবে। আমি চাই না কারও ব্যবসা বন্ধ হোক। বেশি সময় দেওয়া যাবে না। হকারদের দোষ দিয়ে কী লাভ, দোষ তো আমাদেরই। আমরা নিউ মার্কেট এলাকায় একটা বিল্ডিং বানিয়ে দিচ্ছি না কেন? যেখানে ওরা বসবে। এটা আমাদেরই করতে হবে। হকাররা সেখানে থাকবেন।’

    নবান্নের বৈঠক থেকে এদিন পুলিশকে দোষারোপ করেন মমতা। তিনি বলেন, ‘পুলিশের লোভ বেড়ে গিয়েছে আজকাল। তারা গরিব হকারদের থেকে চাঁদা নিচ্ছে। মনে রাখবেন আমার দল টাকা চায় না। আমি আগেও বলেছি। এখনও বলছি। দরকার হলে মানুষের কাছে হাত পেতে ভিক্ষে করব। তাই যে পুলিশকে ইন্ধন দিতে দেখা যাবে, তাকে সঙ্গে সঙ্গে সরানো হবে। কাউকে ছাড়বো না।’

    যে এলাকায় বেআইনি দখল হবে, সেখানকার কাউন্সিলরদের গ্রেফতার করা হবে বলে এদিন হুঁশিয়ারি দিলেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, যত বড়ই নেতা হোক তাঁকে ছাড়া হবে না। তবে একই সঙ্গে মমতা জানিয়েছেন, ভাল কাজ হলে পুরস্কৃতও করবেন তিনি।
  • Link to this news (আজকাল)