সুতপা সেন: হকার সমস্যা নিয়ে ৭২ ঘণ্টার মধ্যে ফের নবান্নে বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়। বৈঠক থেকে কড়া বার্তা দিলেন মুখ্যমন্ত্রী। মমতার সাফ কথা,'বাইরের লোক এসে টাকা দিয়ে বসে যাচ্ছে। বহিরাগতদের দাপটে কলকাতার আইডেন্টিটি নষ্ট হচ্ছে।' তবে মমতা এদিন এও স্পষ্ট করে বলেন যে, "হকার উচ্ছেদ লক্ষ্য নয়। হকারদেরও সংসার পরিবার আছে। আমি চাই না কারোও ব্য়বসা বন্ধ হোক। হকাররা নিজেদের মধ্যে কথা বলে রাস্তা থেকে সরিয়ে নিন। এক মাস সময় দিলাম। হকারদের নাম রেজিস্ট্রেশন করতে হবে। একজন হকারকে একটাই জায়গা দেওয়া হবে। পিছন দিকটা কালার স্কিম দিয়ে ঢেকে দিতে হবে, প্লাস্টিক নয়।"
মমতা এদিন তোপ দাগেন, "বাইরের লোক এসে বসে যাচ্ছে টাকা দিয়ে। একই জায়গার মধ্যে এমন গায়ে গায়ে যে হাঁটা-ই যায় না। নিউ মার্কেট, গড়িয়াহাট সব ঘিঞ্জি হয়ে গিয়েছে। গড়িয়াহাটে ২টো ফুটপাথ বন্ধ হয়ে গিয়েছে। স্থানীয় কাউন্সিলররা দেখেও দেখে না। রাস্তা বন্ধ হয়ে গেলে, কাউন্সিলরদের দোষ আছে। ডাল-ভাত খেয়ে হচ্ছে না। লোভ করা ভালো নয়। লোভ সংবরণ করুন।" কড়া নির্দেশ দেন, "হকার নেতারা চাঁদা তুলবেন না। পুলিসকেও বলছি, চাঁদা তুলবেন না। যে কাউন্সিলরের এলাকায় বসবে, তাকে কাউন্সিলরকে দিয়ে গ্রেফতার করিয়ে দেব।"
মমতা বলেন, "হকার নিয়ন্ত্রণে আইন হয়েছে। আইডেন্টিটি কার্ড করতে বলেছি। যাঁরা যোগ্য তাঁরা আবেদন করতে পারে। ৬১ হাজার হকার নাম রেজিস্ট্রেশনের জন্য আবেদন করেছেন। একই পরিবারের ২ জনও থাকতে পারে। স্টলগুলোকে নাম্বার দেওয়া হোক। সেখানে জিনিসপত্র রাখার জায়গা দিতে হবে। নির্দিষ্ট বিল্ডিং দিতে হবে। কারও চাকরি খাওয়ার অধিকার নেই। কাউকে বেকার করে দেওয়ার অধিকার নেই। প্রথমে বসাবে, তারপর বুলডোজার দিয়ে তুলবে, এটা আমি মানি না। বুঝিয়ে তুলতে হবে। বুলডোজার দিয়ে নয়। হাতিবাগান, গ্র্যান্ড, নিউ মার্কেটের সামনে সার্ভে করবে অরূপ, মলয়, অতীন, দেবাশিষ। রাজারহাট, নিউটাউন, সল্টলেক, আসানসোল, দুর্গাপুরেও সার্ভে করে ১৫ দিনের মধ্যে তালিকা দিতে হবে।"
হকার সমস্যার পাশাপাশি এদিন মুখ্যমন্ত্রী বেআইনি পার্কিং লট নিয়েও ক্ষোভ প্রকাশ করেন। তোপ দাগেন, পুলিস নেতারা টাকা খেয়ে এইসব বেআইনি পার্কিং জোন করেছে। উদাহরণ হিসেবে তুলে ধরেন, হাওড়ার কথা। সেইসঙ্গে মমতা কড়া ভাষায় আরও বলেন যে, "রাস্তায় আবর্জনা ফেলা যাবে না। এটা অপরাধ।"