• ‘‌রাজভবনের যা কীর্তি, মেয়েরা যেতে ভয় পাচ্ছেন‌’‌, শপথ নিয়ে রাজ্যপালকে নিশানা মমতা
    হিন্দুস্তান টাইমস | ২৭ জুন ২০২৪
  • দুই বিধায়কের শপথ নিয়ে রাজ্য–রাজনীতিতে নাটক চরমে উঠেছে। রাজভবন বনাম বিধানসভার দড়ি টানাটানিতে নবনির্বাচিত বিধায়কদের শপথ এখন বিশ বাঁও জলে গিয়ে পড়েছে। সদ্য বরাহনগর এবং ভগবানগোলা উপনির্বাচনে জয়ী হয়েছেন যথাক্রমে সায়ন্তিকা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং রেয়াত হোসেন সরকার। আর তাঁদেরকেই এখন বিধানসভার সিঁড়িতে বসে শপথের জন্য ধরনা দিতে হচ্ছে। আর রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস নিজের সিদ্ধান্তে অনড়। এবার রাজ্য–রাজভবন সংঘাত নয়া মাত্রা পেয়েছে। কারণ বিধানসভায় না গিয়ে রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস নয়াদিল্লি রওনা দিয়েছেন। এবার নবান্ন থেকে রাজ্যপালকে নিশানা করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাতেই সরগরম হয়েছে রাজনীতির আবহ।

    আজ, বৃহস্পতিবার নবান্নে প্রশাসনিক বৈঠক করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর সেখানে এই বিষয়টি নিয়ে রাজ্যপালকে নিশানা করেন মুখ্যমন্ত্রী। মানুষ যাঁদের নির্বাচিত করেছেন তাঁদের শপথ আটকে রাখার অধিকার কি আছে রাজ্যপালের?‌ প্রশ্ন তোলেন মুখ্যমন্ত্রী। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘জিতে ‌বিধায়ক হওয়ার পর একমাস ধরে বসে রয়েছেন। আমার বিধায়কদের রাজ্যপাল শপথ নিতে দিচ্ছেন না। মানুষ নির্বাচিত করেছেন। ওঁদের শপথ নিতে না দেওয়ার কি অধিকার আছে ওঁর? বিধানসভার স্পিকারকে অথরাইজ করবেন রাজ্যপাল, ডেপুটি স্পিকারকে অথরাইজ করবেন, নইলে নিজে বিধানসভায় আসবেন। ওঁর রাজভবনে কেন সবাই যাবেন? রাজভবনের যা কীর্তি, তাতে মেয়েরা যেতে ভয় পাচ্ছেন। আমার কাছে অভিযোগ আসছে।’‌ এই মন্তব্যই এখন চর্চার কেন্দ্রবিন্দুতে।


    এই দুই বিধায়ককের শপথ না হওয়া নিয়ে রাষ্ট্রপতির দ্বারস্থ হওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন বিধানসভার অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়। পরিষদীয় মন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়ও বিষয়টিকে ‘‌অনৈতিক’‌ বলেছেন। এই দুই বিধায়কের শপথগ্রহণ ঘিরে রাজ্য–রাজ্যপাল সংঘাত চরমে উঠেছে। বিধানসভায় এসে রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস শপথবাক্য পাঠ না করানোয় সংঘাতের বাতাবরণ তুঙ্গে উঠেছে। আজ, বৃহস্পতিবার বিধানসভায় আম্বেদকর মূর্তির সামনে অবস্থান চালিয়ে যাচ্ছেন সায়ন্তিকা–রেয়াতরা। রাজ্যপাল নয়াদিল্লি রওনা দেওয়ায় তাঁদের শপথ আটকে রয়েছে। তাই এদিন রাজ্যপালকে নিশানা করলেন মুখ্যমন্ত্রী।

    দু’‌দিন আগে শুধু সায়ন্তিকাকে রাজভবনে ডেকে পাঠিয়ে ছিলেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। কিন্তু একা যেতে চাননি সায়ন্তিকা বন্দ্যোপাধ্যায়। তারপর দুই বিধায়ক সায়ন্তিকা এবং রেয়াতকে ডেকে পাঠানো হয়। অথচ বিধানসভাকে এড়িয়ে। তাই তাঁরা বিধানসভায় শপথ নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। সে কথা রাজ্যপালকে চিঠি লিখে জানিয়েও দেন সায়ন্তিকা। তারপরও বরফ গলেনি। বরং দুই বিধাযককে বিধানসভায় এসে শপথ না করিয়ে নয়াদিল্লি চলে যান রাজ্যপাল। এই পদক্ষেপ কার্যত অপমানজনক। যার জন্য মুখ খুলতে বাধ্য হয়েছেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রাজ্যপালকে নিশানার পাশাপাশি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বিজেপিকেও তুলোধনা করেন। তাঁর কথায়, ‘‌অভিষেকরা যখন রাজভবনের নর্থ গেটে ধরনায় বসেছিল তখন সেখানে ১৪৪ ধারা ছিল না। আজ যাঁরা সেই ইস্যু তুলে রাজনীতি করতে চাইছেন, তাঁরা জেনে রাখুন। আমরা যা করছি, ওদেরও তাই করতে হবে। দিল্লিতে বসতে দেয়? সংসদে স্পিকার নির্বাচনে ভোট পর্যন্ত দিতে দেয় না।’‌
  • Link to this news (হিন্দুস্তান টাইমস)